রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে যুবককে বাড়ি থেকে অপহরণ, মারপিট ও মুক্তিপণ দাবির মামলায় পুলিশ কনস্টেবল মাসুদ রানাকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে পঞ্চগড় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কনস্টেবল মাসুদ রানা রংপুর রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে কর্মরত এবং প্রেষণে পঞ্চগড় পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ছিলেন। তিনি গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পশ্চিম মনিরাম এলাকার আব্দুল ওয়াহেদ মিয়ার ছেলে। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি দুলাল হোসেন।
ওসি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ রানা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে সেসব তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। মাসুদ রানাকে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
গত ৯ এপ্রিল রাত প্রায় ১টার দিকে গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের চওড়াপাড়া গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে কৃষক মইদুল ইসলাম সোনা মিয়ার বাড়িতে যান ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অজ্ঞাত ৭/৮ জন ব্যক্তি। এ সময় তারা সোনা মিয়ার হাতেহ্যান্ড কাপ পরিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হলো জানিয়ে জোর করে তুলে নিয়ে যাবার সময় স্ত্রী সাথী বেগম তার স্বামীকে গ্রেফতারের কারণ জানতে চাইলে তাকে পিটিয়ে আহত করে কথিত ডিবি পুলিশের লোকজন।
এক পর্যায়ে সোনা মিয়াকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়া ব্যক্তিরা। ঘটনার পর অপহৃত সোনা মিয়ার বাবা নুর ইসলাম স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ও চেয়ারম্যানকে তাৎক্ষণিকভাবে পুরো বিষয় অবহিত করেন। খবর পেয়ে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম অপহৃত সোনা মিয়ার বাসায় যান। পরে সোনা মিয়ার খোঁজে আলমবিদিতর খানাটারী গ্রামের মৃত নুরু মিয়ার ছেলে সুরুজ মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বেরিয়ে পড়েন ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম।
এক পর্যায়ে রাত ৩টার দিকে সুরুজ মিয়া মোবাইল ফোনে অপহৃত সোনা মিয়ার বাবা নুর ইসলামকে ডেকে নিয়ে তার ছেলের মুক্তির জন্য পাঁচ লাখ মুক্তিপণ টাকা দাবি করেন। তাৎক্ষণিক ওই পরিমাণ টাকা না থাকায় কিছু টাকা সুরুজের হাতে দেন অপহৃত সোনা মিয়ার বাবা নুর ইসলাম। পরে পার্শ্ববর্তী নোহালী ইউনিয়নের একটি চাতাল থেকে সোনা মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতাল ভর্তি করে পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় গত ১০ এপ্রিল অজ্ঞাত অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে গঙ্গাচড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সোনা মিয়ার বাবা নুর ইসলাম। মামলা সূত্র ধরে পুলিশ সদস্য মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এএ