ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান আসাদ হত্যার ঘটনায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পৌর শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সোমবার সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মুক্তাগাছা পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি ছিল। ওই সময়ে সব ধরণের মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একেএম লুৎফর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, যুবলীগ কর্মী আসাদ হত্যার প্রতিবাদ ও আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দের নেতৃত্বে শহরের ঝাড়ু মিছিল করার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।
ইউএনও জানান, আসাদ হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করে। এসব কর্মসূচি থেকে যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা হচ্ছে। এসব অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ বলেন, ১৪৪ ধারা জারির পর পৌর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মেতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। তবে, যুবলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় তিনজন আটক করা হয়েছে। এরপর আর কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের আটানী বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান আসাদ কয়েজনকে সঙ্গে নিয়ে চা পান করছিলেন। সেখানে হামলার শিকার হয়ে নিহত হন আসাদ। এই ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকালে হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে নিহতের মরদেহ মহাসড়কে রেখে বিক্ষোভ করেছেন নিহতের স্বজন ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
পরে ওই দিন রাতে নিহত আসাদুজ্জামান আসাদের ছেলে তাইব হাসান আনন্দ বাদী হয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য মাহাবুবুল হাসান মনিসহ ৩০ জনের নামে মুক্তাগাছা থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা ৩ জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় মুক্তাগাছা থানা পুলিশ।
আরো দুই আসামী গ্রেফতার
যুবলীগ নেতা আসাদ হত্যার ঘটনায় জড়িত আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রবিবার দিবাগত ভোররাতে সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর চান্দালিপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মুক্তাগাছা উপজেলার তারাটি ফকিরপাড়া এলাকার মনজুরুল হকের ছেলে মো. মমিনুল হক (২১) ও একই এলাকার মোখলেছুর রহমানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন লিমন (১৯)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন জানান, এরা এজাহারভূক্ত ৮ ও ৯ নং আসামি। হত্যাকাণ্ডের পর এরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে সুনামগঞ্জে আশ্রয় নেয়। প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল