২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৬:৫৬

পটুয়াখালীতে শিশু হত্যায় গ্রেফতার ২

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

পটুয়াখালীতে শিশু হত্যায় গ্রেফতার ২

গুমের ৭ দিন পর পটুয়াখালীতে ৫ ফুট মাটির নিচ থেকে লবণ মাখা অবস্থায় পলিথিনে মোড়ানো শিশু রাতুলের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী গ্রামের মফেজ মাতুব্বরের ছেলে মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও পার্শ্ববর্তী জৈনকাঠী ইউনিয়নের সেহাকাঠী গ্রামের এনছান হাওলাদারের ছেলে মোঃ হানিফ হাওলাদার (৪১)। এ ঘটনায় জেলা পুলিশ আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিং করে।

আকটকৃতদের দেয়া তথ্যমতে, গতকাল গভীররাতে সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব আউলিয়াপুর বিশ্বাস বাড়ীর একটি বসতঘরের মেঝের ৫ ফুট মাটির নিচ থেকে রাতুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাতুল আউলিয়াপুর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। এ ঘটনায় শিশু রাতুলের পিতা গোলাম রহমান লিটন বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। 

লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন, শিশু রাতুল তার বাবা-মায়ের কাছে একটি স্মার্ট সাইকেল চেয়ে বায়না ধরে। তার চাহিদা মাফিক সাইকেলের মূল্য ১৪ হাজার টাকা। রাতুলের সেই সাইকেল বাবা-মা কিনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এমন ঘটনা জানতে পেরে লিটন ঘরামীর ছেলে রাতুলকে সাইকেল ক্রয়ের জন্য ১৪ হাজার লোভ দেখিয়ে মালামাল লুটে নেয়ার পরিকল্পনা করে আনোয়ারসহ আসামিরা। তাদের পরিকল্পনামতে ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ছেলে রাতুলের মাধ্যমে ঘুমের ওষুধ খাবারে মিশিয়ে তার বাবা, মা আছমা বেগম ও দাদী রিজিয়া বেগমকে অচেতন করে। পরিকল্পনা অনযায়ী আসামিরা গভীর রাতে ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সামনের দরজা খুলে ঘর সংলগ্ন মালামালের ডেকোরেটর দোকান হতে সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন দামি সরঞ্জামাদি, অটোরিক্সার ব্যাটারি চুরি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঘটনা যাতে জানাজানি না হয় সে জন্য ঘটনার একমাত্র সাক্ষী ভিকটিম শিশু রাতুলকে রাতেই তাদের নিজ বসতঘরে মুখ চেপে ধরে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে নিয়ে যায় আসামি আনোয়ার।

পরবর্তীতে হত্যা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ভিকটিমের লাশ গুমের উদ্দেশ্যে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডস্থ পূর্ব আউলিয়াপুর গ্রামের জনৈক মোঃ জয়নাল বিশ্বাস এর বাড়ীর পিছনে পরিত্যক্ত টিনসেড (ইটের ওয়াল) ঘরের কাঁচা মেঝের পশ্চিম দক্ষিণে ৫ ফুট মাটির গভীরে লাশের গায়ে লবণ দিয়ে পলিথিনে মুড়িয়ে মাটি চাপা দিয়ে রাখে আসামিরা। আসামিদ্বয়ের দেয়া তথ্যমতে চোরাইকৃত মালামাল আসামি মোঃ হানিফ হাওলাদারের বসত ঘরের পিছনে রান্না ঘরের মাটির নিচ হতে সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি এবং বসত ঘরের পিছনে ডোবা হতে অটোরিক্সার ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় সদর থানায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে আদালতে হাজির করার প্রক্রিয়া চলছে। মামলার তদন্ত চলছে।

জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ একটি চৌকস দল বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত, আলামত সংগ্রহপূর্বক ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয় বলেও দাবি করেন পুলিশ সুপার।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর