ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ১২ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর ১৪ দিন পদ্মা নদীতে অভিযান হয়েছে মাত্র আটটি। পর্যাপ্ত অভিযান না থাকায় মা ইলিশ শিকারিদের কাছে পদ্মা নদী অভয়াশ্রম হয়ে উঠেছে। শুক্রবার দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সরেজমিন পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে এমন চিত্রই দেখা যায়।
সরেজমিন সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের ভাঙ্গার মাথা থেকে টিলারচর, হরিরামপুরের জলসীমা, চরঝাউকান্দার গোপালপুর, দোহারের মৈনট সংলগ্ন জলসীমা, গোপলপুর লঞ্চ ঘাট, মাথাভাঙ্গার জলসীমা ঘুরে দেখা যায় অনেক জেলেই কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারিসহ নৌকা নিয়ে নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করছে। বিশেষ করে চর ঝাউকান্দা সংলগ্ন পদ্মা নদীতে অনেকেই মাছ শিকার করছেন। মাথা ভাঙ্গার শেষ সীমানায় এক অবৈধ মৎস্য শিকারি নদীতে জাল ফেলছিল পরে ক্যামেরা দেখে তারা জাল কেটে দিয়ে ট্রলার নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা হাত চালিত অপর একটি নৌকা নিয়ে ইলিশ শিকার করতে আসা দুই ব্যক্তিকে সতর্ক করলে তারাও পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, মাঝে মাঝে অভিযান হলেও তার পরিমাণ একবারেই কম। বিশেষ করে রাত ১০টার পর কোনো প্রকার অভিযান থাকে না বলে সবাই নির্বিঘ্নে ইলিশ শিকার করতে পারে। জেলেরা পূর্ব থেকেই জেনে যাচ্ছে অভিযানের খবর।
বালিয়াডাঙ্গীর আলমগীর শিকদার বলেন, নদী পাড়েই তাদের বাড়ি। রাত হলে বাইরে থেকে আসা জেলেরা সারারাত পদ্মা নদীতে মাছ শিকার করে।
চরভদ্রাসন উপজেলা মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আত্তাব মুন্সি বলেন, দিনে ও রাতে সবসময়ই ইলিশ ধরে। এর আগে যারা ছোট মাছ শিকার করতো, তাদের ধরে নিয়ে জেল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত শুনি নাই ইলিশসহ কোনো লোক ধরতে পারছে। এ বছর ২৪ ঘণ্টায় একবারের বেশি অভিযান হয় নাই।
চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মোতালেব হোসেন মোল্যা বলেন, পূর্বের তুলনায় এ বছর অভিযান একেবারেই অপ্রতুল। মা ইলিশ রক্ষার ক্ষেত্রে তিনি উপজেলা মৎস্য দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মুস্তফিজুর রহমানের নিকট অভিযান সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, নথি না দেখে অভিযান সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া সম্ভব না। তবে পর্যাপ্ত অভিযান হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। অভিযানে কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারি পাওয়া গেলেও ইলিশসহ কাউকে আটক করা যায়নি বলে তিনি স্বীকার করেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই