কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয় শিবির থেকে ১৬০০ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে উদ্দেশ্যে রওনা করেছেন। এর মধ্য নতুন ১২০০ জন ও ভাসানচর থেকে ক্যাম্পে বেড়াতে আসা ৪০০ জন রোহিঙ্গা রয়েছে। কক্সবাজার থেকে গাড়িযোগে প্রথমে চট্টগ্রাম পৌছার পর নৌ বাহিনীর জাহাজে করে ভাসানচরে রওনা করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর ও অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা।
তারা জানান, এবার যাওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে বেশির ভাগ নারী ও শিশু। নিরাপদ এবং উন্নত জীবনযাপনের সব ব্যবস্থা ভাসানচরে রয়েছে। কয়েক দফায় প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে গিয়ে বর্তমানে বসবাস করছেন। তারা উখিয়া-টেকনাফে থাকা স্বজন ও পরিচিতদের কাছে আসা যাওয়া করছেন। কয়েকদিন পূর্বে ভাসানচর থেকে উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পে বেড়াতে আসে ৪০০ জন রোহিঙ্গা। তারা স্বেচ্ছায় যাওয়া ১২শ রোহিঙ্গার সাথে ভাসানচরে ফিরেছেন।
শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে নৌ-বাহিনীর জাহাজে করে ভাসানচরে রওনা হন সকলে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠের অস্থায়ী কেন্দ্র থেকে পুলিশ পাহারায় তারা ভাসানচরে উদ্দেশ্যে রওনা হন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে আশ্রয় শিবির থেকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে অস্থায়ী কেন্দ্রে আনা হয় রোহিঙ্গাদের। পরে তথ্য যাচাই-বাছাই ও স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষ করে রাত ১১টার দিকে ৩৪টি বাস যোগে ১৬০০ রোহিঙ্গা পুলিশি পাহারায় চট্টগ্রামের উদ্দেশ্য যাত্রা করেন। সেখান থেকে তারা নৌ-বাহিনীর জাহাজে শুক্রবার সকালে ভাসানচরে রৌনা দেন। তাদের গাড়ি বহরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজন ছিল।
বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১০ এর সাদেক হোসাইন বলেন, আমাদের পরিচিত রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে শুনেছি ভাসানচরের পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো। ঝামেলা ছাড়া বসবাস করা যায়। এখানে (বালুখালীতে) দিন দিন খুনের ঘটনা, অপহরণ ও মাদক ব্যবসা বাড়ছে। তাই পরিবার নিয়ে নিরাপদ থাকতে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাচ্ছি। কোনদিন মিয়ানমারে নিজেদের বসতবাড়িতে ফেরার সুযোগ হলে সেদিন ভাসানচর থেকে মিয়ানমার চলে যাব।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, উখিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাসগুলো চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর নৌবাহিনীর জাহাজে নোয়াখালীর ভাসানচর আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হবে। এবার যাওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে বেশির ভাগ নারী ও শিশু। নিরাপদ এবং উন্নত জীবনযাপনের সব ব্যবস্থা ভাসানচরে রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ