সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের ব্যক্তিগত সহকারি (এপিএস) সেলিম সরকারের নেতৃত্বে পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা ও তার ৩ বছর বয়সী শিশু সন্তানের ওপরে হামলা ও মারধরের ঘটনায় ৬০জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনার পর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা বাদী হয়ে শুক্রবার সকালে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) সেলিম সরকারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও মামলায় সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আলীসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০/৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার গাড়ামাসি গ্রামের মৃত আব্দুল মতিন প্রামানিকের ছেলে শাকিল প্রামানিক (২৪), একই গ্রামের আব্দুল মজিদ প্রামানিকের ছেলে জোবায়ের হোসেন (১৯) ও শেরনগর গ্রামের আব্দুল হাই সেখের ছেলে জাফর সেখ (২৫)। অন্যদিকে হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার বাদ আসর দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বেলকুচি পৌর সদরের মুকন্দগাতী এলাকায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল, পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজাসহ অন্যান্যরা।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়রের ওপরে হামলার ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মোট ৫জনকে আটক করা হয়েছিল। এদের মধ্যে দুইজন শিশু হওয়ায় তাদের স্বজনদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ।
বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা জানান, বৃহস্পতিবার বেলকুচি আলহাজ্ব সিদ্দিক উচ্চ বিদ্যালয়ে রাজশাহী থেকে অডিট টিম এসেছিল। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়ার সুবাদে তিনিও সেখানে গিয়েছিলেন। দুপুর ২টার দিকে সেখান থেকে ফেরার পথে স্কুল গেটের আগেই এমপির এপিএস সেলিম সরকার দেশীয় পিস্তল ঠেকিয়ে তার গতিরোধ করে। এসময় এপিএসের সাথে থাকা ৫০/৬০জন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মেয়র ও তার শিশু সন্তান ফারিয়া হক অস্তিত্বকে মারধর করতে থাকে। ঠেকাতে গেলে মোটরসাইকেলের চালক সাব্বির সরকার ও সহকর্মী নাবিল মন্ডল এবং ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় সাংবাদিক আবু মুসাকেও মারধর করা হয়।
মেয়র আরো বলেন, হামলাকারীরা শিশু সন্তানকে লাঠি দিয়ে আঘাত করায় তার কপাল কেটে গেছে ও হাতে আঘাত পেয়েছে। তাকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্ত ভয়ে সে বার বার চিৎকার করছে।
তবে, এমপির এপিএস সেলিম সরকারের দাবি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে অভিযোগ ওঠায় রাজশাহী থেকে আসা টিমের কাছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা লিখিতভাবে মতামত দেন। যা মেয়রের বিরুদ্ধে যাওয়ায় অভিভাবক এবং মেয়র ও তার লোকজনের সাথে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি ঘটনা ঘটেছে। ওই সব ঘটনার সাথে আমি বা আমার কোন লোকজন জড়িত নই।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল