মুন্সীগঞ্জে গজারিয়া উপজেলায় একই রাতে দুই গ্রামে ডাকাতি লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলেন গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর নপ্তী (৩৫) ও হোসেন্দি ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম মোল্লাসহ ২৫/৩০ জনের একটি দল। এতে ৩টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। স্বর্ণালঙ্কার, টাকা, মোবাইল সেটসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। এছাড়াও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হুমকির অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার রাত ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নের ইসমানিরচর ও কলসের কান্দি গ্রামে এ ডাকাতি ও লোটপাটের ঘটনাটি ঘটে।
ইসমানিরচর গ্রামের মো. হান্নান সরদারে স্ত্রী মোসা: মাহমুদা আক্তার বলেন, রাত দেড়টার দিকে আতাউর আমার বাসায় এসে আমার স্বামীকে খোঁজে। ঘরের দুয়ারে লাথি মারে। দুয়ার খুলে দেখি তাদের হাতে পিস্তল ও ছুরি নিয়ে ঘরে ঢুকে আমার হাত থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পরে ঘর থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা, আমার ও আমার মেয়ের কানের দুলগুলো খুলে নেয়। কাউকে বললে, আমাদের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যায়। আমার স্বামী প্রবাসী ছিলেন। কিছুদিন আগে দেশে আসছেন আবার চলেও যাবেন।
কলসের কান্দি গ্রামের কামাল ফরাজি স্ত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, রাত ২টার দিকে আমাদের বাড়িতে ডাকাল দল আসে। "আমরা আইনের লোক, দুয়ার খুলেন। কামাল বাড়িতে আছে নাকি, ওর সাথে কথা বলমু।, দুয়ার খুলে দেখি পার্শ্ববর্তী গ্রামের আতাউরসহ ২০ থেকে ৩০ জন লোক আসছে। আমাকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আমারে জিম্মি করে। আমাদের বড় ঘরে নিয়ে যায়। কিছুদিন আগে বাসায় বিয়ের অনুষ্ঠান ছিলো ঘরে সোনার গহনা ছিলো, সবই নিয়ে গেছে। সাথে ৪টি মোবাইল ফোন, ফ্রিজে থাকা মাংস ও ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে রেখে গেছে। যাওয়ার সময় বলেছে 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা কাউকে বললে আবার এসে মেরে ফেলব'।
ইসমানিরচর জেলেপাড়ার শ্রী শ্রী সার্বজনীন দূর্গা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনা চন্দ্র রাজবংশী বলেন, রাত দেড়টার সময় আমার ঘরে হামলা করে। আমার একটি ঘরে ভাঙচুর করে। ঘরে থাকা মোবাইল ১টি, দুইটা বৈঠা। ঘরে থাকা টিভি ও ঘর কুপিয়েছে।
হোসেন্দি ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য কিরণ সরদার বলেন, তারা মূলত সাইফুল, ফাহিম, হাসান, হান্নান সরদার, জাকির ফরাজি ও আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসে। তারা দুটি ঘরে ডাকাতি করছে। এবং জেলেপাড়ায় চাঁদা দাবি করছে। না দিলে মন্দির ভাঙচুর করবে। আওয়ামী লীগের এ নেতাকর্মীদের হাত থেকে গ্রামবাসীকে বাঁচাতে সবার সহযোগিতা চাই।
এ অভিযোগের বিষয়ে একাধিক বার মুঠোফোনে হোসেন্দি ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর নপ্তীর যোগাযোগের চেষ্টা করলে। তাকে পাওয়া যায়নি।
গজারিয়া ইউনিয়ন পুলিশের তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. মহীদুল ইসলাম এ বিষয় বলেন, এখন দেশের অবস্থা সবাই জানেন। একটু শুনেছি বিষয়টা। তবে এখনো কেউ, কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ