হাসিনা বেগমের সংসারে শাশুড়ি, স্বামী, দুই ছেলে এক মেয়ে আছে। বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় ফুলগাজী পাইলট স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। বন্যায় হাসিনার চুলায় রান্না হয়নি। ছেলে-মেয়েরা মায়ের কাছে শুধু ভাত ভাত বলে কান্না করছে। ভাত চাইলে চিড়া-মুরি খেতে দেন হাসিনা। এক দুই মুঠো চিড়া-মুরি খেয়ে হাসিনার সন্তানরা ভাতের জন্য কান্নাকাটি শুরু করে।
টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীতে নেমে এসেছে মানবিক বিপর্যয়।
বৃহস্পতিবার বিকালে ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার ফুলগাজী পাইলট হাই স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। ওই এলাকায় আরো দেখা যায়, বন্যার্তরা যে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে ওই স্কুলের মাঠে বুক সমান পানি। ডুবে গেছে স্কুলের টিউবওয়েল। রাস্তায় তখনও কোমর সমান পানি। স্কুলের মাঠে মাছ ধরছেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। স্কুলের নিচতলায় আশ্রয় নিয়েছেন ৩০টি পরিবার। স্কুলের নিচতলা থেকে হাসিনা হাতের ইশারায় জানান আমাদের সাথে তিনি কথা বলতে চান। তার শাশুড়ি, স্বামী, দুই ছেলে এক মেয়েসহ ঠাঁই হয়েছে স্কুলের আশ্রয়ণ কেন্দ্রে। তার বাচ্চারা ক্ষুধায় অনবরত কান্নকাটি করছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে হাসিনার ছোট্ট মেয়ে বললো, আংকেল আমি ভাত খাব, মায়ের কাছে ভাত চাইলে শুধু চিড়ামুড়ি খেতে দেয়। মােটেও ভালো লাগে না চিড়ামুড়ি খেতে। আপনি আমাদের জন্য ভাত নিয়ে আসেন।
হাসিনা বেগম আকুতি করে বলেন, বন্যার পানিতে সব ভেসে গেছে। ঘরে কিছু চাল আর ডাল ছিল তা নিয়ে এসেছি। বাচ্চারা শুধু ভাত ভাত করে কান্না করছে। তাই অনেক কষ্ট করে চুলায় আগুন দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ নেই, মোবাইল বন্ধ। কাউকে যে ফোন করে খাবার আনতে বলবো সে ব্যবস্থাও নেই।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল