আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) থেকে পদত্যাগ করেছেন দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী। দলীয় কার্যক্রম ও সব ধরনের পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, আবারও জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এবং শুক্রবার রাতে একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘২০২০ সালের ২ মে এবি পার্টি আত্মপ্রকাশ করেছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এই তিন মূলনীতিকে ভিত্তি করে। কিন্তু আজ এই দলের মধ্যে প্রতিষ্ঠার সময়কার অঙ্গীকারের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।’
তিনি বলেন, ‘এবি পার্টি এখন ঢাকা-কেন্দ্রিক একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। জনসম্পৃক্ততা নেই, তৃণমূল কার্যক্রম নেই। বরং বিভিন্ন জেলার নেতারা একে একে দল ছেড়ে যাচ্ছেন।’
সোলায়মান অভিযোগ করেন, তাকে নামমাত্র উপদেষ্টা রেখে কার্যত দল থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। ‘আমার উপদেশ চাওয়া হয় না। এমন দলে থাকার চেয়ে সরে যাওয়াই শ্রেয় মনে করছি।’
তিনি বলেন, ‘এবি পার্টি এখন অন্য উদ্দেশ্যে ব্যস্ত, যেটা ছিল না আমাদের প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্দেশ্যের মধ্যে।’
দীর্ঘদিন জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় সদস্য থাকা সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘আমি নতুন কোনো দলে যাচ্ছি না, ফিরে যাচ্ছি আমার আগের রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামীতে। দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে, তিনি আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন। কেবল আনুষ্ঠানিকতা বাকি।’
তবে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে কীভাবে ফিরছেন বা জামায়াতে ইসলামী তাকে গ্রহণ করছে কিনা? তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের গণমাধ্যমকে বলেন, তার পদত্যাগের বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু তিনি জামায়াতে ইসলামীর আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বা জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করছেন তা নিশ্চিত নই। খোঁজ-খবর নিয়ে জানাতে পারবো।
স্কুল জীবনেই নবম শ্রেণিতে থাকতে ১৯৬৪ সালে ইসলামী ছাত্রসংঘে যোগদান করেন এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী। ১৯৭৫ সালের অক্টোবর মাসে তিনি জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশে যোগদান করেন। ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে জামায়াতের রোকন হোন। ঐ বছর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক নিযুক্ত হন।
বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে ১৯৭৯ সালের মার্চ মাসে সহকারী কমিশনার পদে যোগদান করেন এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী। ফেনীতে জেলা প্রশাসক থাকা অবস্থায় জয়নাল হাজারীর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক আলোচিত হন। পরে সংস্থাপন সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান হন।
২০০৭ সালে সরকারি চাকরি হতে অবসর নিয়ে পুনরায় জামায়াতে যোগদান করেন তিনি। সোলায়মান চৌধুরী জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য এবং দলের পেশাজীবীদের সংগঠন জাতীয় পেশাজীবী ফোরামের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত