মায়রনের টেলিভিশন পর্দা খুব প্রিয়। মোবাইল ল্যাপটপ যে কোনো পর্দায় গভীরভাবে চোখ রাখে। পর্দায় কত কিছু দেখা যায়। ছবিগুলো নড়াচড়া করে। হাতি, ভালুক, বাঘ, ঘোড়া কত প্রাণী। নানাভাই সন্ধ্যা হলেই ক্রিকেট খেলা দেখেন। মায়রা এই খেলার নাম দিয়েছে টিভি খেলা। টিভিতে জীবজন্তু দেখে মায়রা-মায়রন জীবজন্তুদের চিনে ফেলেছে। যে কোনো বড় প্রাণী দেখেই ওরা ওদের নাম বলে দিতে পারে। একবার ওরা নানাভাইয়ের সঙ্গে মিরপুর চিড়িয়াখানায় গিয়েছিল। বাঘের খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে ওরা চিৎকার করে উঠল।
বাঘ! বাঘ! রয়েল বেঙ্গল টাইগার!
হরিণের খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে মায়রন বলল, হরিণ! হরিণ!
হাতির সামনে দাঁড়িয়ে মায়রা বলে, হাতি তোর গোদা পায়ে লাথি।
জিরাফ, জেব্রা, শেয়াল, ভালুক, সিংহ কত প্রাণী খাঁচায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাসায় ফেরার পথে নানাভাই মহাখুশি। নাতি-নাতনি আমার কচি বয়সেই প্রাণীদের চিনে ফেলেছে। এর চেয়ে আনন্দ আর কি হতে পারে? নানাভাই ওদের সঙ্গে নিয়ে গুলশানে এলেন খেলনার দোকান থেকে প্লাস্টিকের প্রচুর পরিমাণে খেলনা কিনে দিলেন। সবই জীবজন্তু। ছোট-বড় নানা রকমের। মায়রা-মায়রন মহাখুশি। বাসায় এসে জীবজন্তুদের সাজিয়ে ওরা ঘরের মেঝেতে একটা চিড়িয়াখানা বানালো। সেখানে বাঘ ডাকছে হালুম হুলুম। সিংহ ডাকছে হুম। ঘোড়া ডাকছে চিঁহিঁ। মায়রা-মায়রন খুব মজা পেল। পশুপাখিদের নিয়ে খেলাধুলা করতে খুব মজা। এমন সময় ওরা টিভি পর্দার দিকে তাকিয়ে দেখে একটা ডাইনোসর মুখে আগুন ছড়াচ্ছে। আর চিৎকার করছে-হুম, হুম। ছোট-বড় অনেক ডাইনোসর ছোটাছুটি করছে।
নানাভাই, এই জন্তুটা কোথায়?
ওই তো-পর্দার দিকে তাকিয়ে বললেন নানাভাই।
চিড়িয়াখানায় তো এই জন্তুটা দেখিনি।
নানাভাই বললেন, এই জন্তু কেবল টেলিভিশনের পর্দায় থাকে।
মায়রন তখন পর্দার দিকে তাকিয়ে এগিয়ে যায়। পর্দায় হাত দিয়ে আদর করে। ডাইনোসর তখন চিৎকার করছে- গোঁ গোঁ গোঁ।
নানাভাই চুপ করে সেদিকে তাকিয়ে আছেন। মায়রন খেলছে ডাইনোসরের সঙ্গে।
মায়রা জানতে চাইলো, চিড়িয়াখানায় ডাইনোসর নেই কেন?
নানাভাই কোনো জবাব দিলেন না।
চলো নানাভাই, আমরা একটা ডাইনোসর কিনে চিড়িয়াখানায় উপহার দিয়ে আসি।
নানাভাই বললেন, কোথা থেকে কিনবো?
কেন টেলিভিশনের পর্দা থেকে কিনবো!
নানাভাই হেসে উঠলেন।
ঠিক আছে- পর্দায় যখন ডাইনোসর আসবে তখন খপ করে কিনে ফেলবো।
ঠিক আছে।
মায়রা-মায়রন খুব খুশি। ওদের নানা সব পারে। চিড়িয়াখানার জন্য একটা জীবন্ত ডাইনোসর কিনে দেবে।