শুক্রবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চিকিৎসা ব্যয়

প্রান্তিকজনেরা অসহায় হয়ে পড়ছে

দেশে চিকিৎসা খাতে ব্যক্তিগত ব্যয়ের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ২০২০ সালে এ খাতে ব্যক্তিগত ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৬৯ শতাংশ। পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সালে যার পরিমাণ ছিল ৬৭ শতাংশ। ব্যক্তিগত ব্যয়ের মধ্যে ওষুধ বাবদই ব্যয় হয় ৬৫ শতাংশ। চিকিৎসা মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষার মতোই এটি গুরুত্বের অধিকারী। দেশে চিকিৎসা খাতে রাষ্ট্রের বদলে নাগরিকদের ব্যক্তিগত ব্যয় ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি সার্বিক বিবেচনায় উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের আয়োজনে বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টস ষষ্ঠ রাউন্ডের চূড়ান্ত ফলাফল অবহিতকরণ কর্মশালায় স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তিগত ব্যয় বৃদ্ধির কথা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৮ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে ব্যক্তির নিজ খরচে। আর স্বাস্থ্য খাতে সরকারি ব্যয় ছিল ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ, যা ২০১৫ সালের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। এ ছাড়া এ খাতে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার ব্যয়ের পরিমাণ ৫ শতাংশ। মানুষের খরচ করার প্রবণতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যয়ের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট ব্যক্তি পর্যায়ে খরচের ৫৪ শতাংশই খরচ করেন দেশের শীর্ষ ধনীরা। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী মাথাপিছু ২০০ টাকা স্বাস্থ্যের জন্য নিজ থেকে ব্যয় করে। যেখানে জনসংখ্যার ধনী অংশ খরচ করে এর তুলনায় আট গুণ বেশি অর্থাৎ ১ হাজার ৭১৪ টাকা। একই এলাকা বা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে মাথাপিছু খরচের তুলনায় দেখা যায় যে, সবচেয়ে ধনী পরিবারগুলো দরিদ্রদের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি ব্যয় করেছে। দেশে স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু ব্যয় ৫৪ ডলার বা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১০৫ টাকা হিসেবে)। এ ব্যয় শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের চেয়েও কম। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন দুর্নীতি বন্ধ হলে এ বিষয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। পাশাপাশি উন্নত দেশগুলোর মতো সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যবীমা প্রবর্তনের কথা ভাবতে হবে। বাংলাদেশে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ধনীদের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের যে পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে কর্মশালায়, তাতে অবহেলিত শ্রেণির পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার সক্রিয় হবে আমরা তেমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর