প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন সামনে রেখে সৃষ্ট সহিংসতায় আহতদের অবস্থা দেখার জন্য শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সে সময় প্রতিশ্রুতি দেন সাম্প্রতিক সহিংসতায় দলমতনির্বিশেষে আহতদের চিকিৎসা ও আয়-রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার। সহিংসতায় যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বিপুলসংখ্যক মানুষের হতাহত হওয়ার ঘটনাকে প্রধানমন্ত্রী বেদনাদায়ক বলে অভিহিত করেন। বলেন, তিনি বাবা-মা, ভাই সব হারিয়েছেন। জানেন মানুষের স্বজন হারানোর ব্যথা কী, যারা নৃশংসতা ঘটিয়েছে তাদের খুঁজে বের করা হবে। জামায়াত-শিবির, বিএনপি, ছাত্রদল কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে দেশব্যাপী ধ্বংসাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। এদের মনুষ্যত্ববোধ নেই, দেশের প্রতি মায়া-মমতা ও দায়িত্ববোধ নেই। মানুষকে এরা মানুষ হিসেবেই গণ্য করে না। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, এর মধ্য দিয়ে তাদের অর্জনটা কী। তাদের আচরণে ‘সেই ’৭১ সালের কথা মনে পড়ে। ২০১৩-তে ৩ হাজার ৮০০ মানুষকে পোড়ানো, মেরে ফেলা হয়, আবার ২০১৪-তেও সেই একই কাজ করা হয়েছে। ২০২৩-এর ২৮ অক্টোবরে তারা পুলিশকে যেভাবে মেরেছে, এবার পুলিশকে শুধু মারাই হয়নি, মেরে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে। এ কেমন বর্বরতা?’ সহিংসতায় চিকিৎসাধীন আহতদের সুচিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট আশ্বাসে মানবিক চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে- যা প্রশংসার দাবিদার। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নামার ঘটনাকে দেশবাসী স্বাভাবিক চোখেই দেখেছে। সরকারের মনোভাবও ছিল ইতিবাচক। কিন্তু অশুভ মহল কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সামনে রেখে নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়েই ১৯৭১ ও ২০১৩, ২০১৪ স্টাইলে যে আগুনসন্ত্রাসে নামে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সহিংসতার উসকানিদাতা ও তাদের ভাড়াটিয়া হয়ে যারা জ্বালাও-পোড়াও এবং হত্যাকাণ্ডে হাত পাকিয়েছে তাদের সবার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোথাও বাড়াবাড়ির আশ্রয় নিয়ে থাকলে সে ঘটনাকেও আমলে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো হেরফেরই কাম্য নয়।