ফজলুল হক একজন প্রথিতযশা চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও সাংবাদিক। এ দেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘প্রেসিডেন্ট’ (সান অব পাকিস্তান) এর নির্মাতা তিনি। চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার পথিকৃৎও তিনি। এ দেশের প্রথম চলচ্চিত্রবিষয়ক পত্রিকা ‘সিনেমা’ তাঁরই সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। তাঁর প্রকাশিত চলচ্চিত্রবিষয়ক সাময়িকী মাসিক ‘সিনেমা’কে ঘিরে সেই ৫০-এর দশকে তৈরি হয়েছিল শিল্পী সাহিত্যিকদের ফোরাম, যাদের হাত ধরে পরবর্তী সময়ে সুদৃঢ় হয়েছে এ দেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির ভিত। ১৯৫৫ সালে ইনল্যান্ড প্রেস নামক একটি প্রকাশনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। এ দেশের চলচ্চিত্র নির্মাণের সূচনালগ্নে চলচ্চিত্রশিল্পের অগ্রযাত্রায় রেখে গেছেন অনন্য ভূমিকা। একসময় ফজলুল হক চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৬০ সালে রহমান, শবনম, চিত্রা সিনহা, রানী সরকার ও অন্যদের নিয়ে শুরু করেন, ‘আযান’ নামে একটি চলচ্চিত্রের কাজ। পরবর্তী সময়ে ‘উত্তরণ’ নামে ১৯৭৫ সালে এ ছবিটি মুক্তি পায়। অনেক কিছুরই প্রথম-এর সঙ্গে যুক্ত থাকতেন ফজলুল হক। তদানীন্তন পাকিস্তানের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘সান অব পাকিস্তান’ নির্মাণ করেন ১৯৬৬ সালে। যেটি পরবর্তী সময়ে ‘প্রেসিডেন্ট’ নামে মুক্তি পায়। শিশুদের জন্য নিরাপদ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন ফুটে উঠেছিল তাঁর নির্মিত এই চলচ্চিত্রে। তাঁর নির্মাণ দক্ষতার ধারেকাছেও এখনো পর্যন্ত কোনো শিশুতোষ চলচ্চিত্র যেতে পারেনি বলে অভিমত সিনেমাপ্রেমীদের। ‘সান অব পাকিস্তান’ চলচ্চিত্রটি সেই সময়ে পুরস্কৃতও হয়েছিল। ছবিতে পরিচালক ফজলুল হক ও তাঁর দুই সন্তান ফরিদুর রেজা সাগর ও কেকা ফেরদৌসী অভিনয় করেছেন। শিশুনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে পুরস্কৃত হয়েছিলেন আজকের স্বনামধন্য মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ফজলুল হক। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কথিকা লিখতেন। আকাশবাণী কলকাতায় পদ্মা-মেঘনা-যমুনা নামে নাটক রচনা ও পরিচালনা করেন। আকাশবাণীতে তিনি মণি হক নামে অনেক অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলা ভাষাকে সর্বস্তরে পৌঁছে দিতে ঘড়ির ডায়ালে বাংলায় সময় লেখা ‘বাংলা ঘড়ি’ চালু করেন। ১৯৭৬ সাল থেকে তিনি কলকাতায় বসবাস শুরু করেন। সেখানে বসবাসকালে ‘চিত্রসারথী’ নাম নিয়ে দুটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এর মধ্যে একটি লোককাহিনি ভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘সাত ভাই চম্পা’। ফজলুল হক (আবু তাহের মোহাম্মদ ফজলুল হক) ১৯৩০ সালের ২৬ মে, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃকবাড়ি বগুড়া জেলার, গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের রানীরপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা এফ মাহমুদ একজন জাঁদরেল পুলিশ অফিসার ছিলেন। মা এফ জাহান। তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন ময়মনসিংহে। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা-ইসলামিয়া কলেজ কলকাতা থেকে। স্নাতক আজিজুল হক কলেজ বগুড়া থেকে। ফজলুল হক ১৯৯০ সালের ২৬ অক্টোবর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে কলকাতার গোবরা কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। তাঁর সহধর্মিণী প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন। তাঁর চার সন্তান। শিশুসাহিত্যিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগর, ফরহাদুর রেজা প্রবাল, রন্ধনবিদ কেকা ফেরদৌসী, ফারহানা মাহমুদ কাকলী।
শিরোনাম
- শাবিপ্রবিতে শহিদদের স্মরণে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল
- কুমিল্লায় লাইনচ্যুত পাহাড়িকা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন
- ঋণের চাপে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা
- বাগেরহাটে ৯ জুলাই শহীদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ
- নড়াইলে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত ২০
- শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শিরোপার আরও কাছে বাংলাদেশ
- বগুড়ার যুবলীগ নেতা আমিনুল ঢাকায় গ্রেফতার
- ‘আমাদের কোনো ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ফ্যাসিবাদ যেন পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ না পায়’
- 'সরকার গঠন করলে আমাদের প্রথম কাজ হওয়া উচিত হতাহতদের পুনর্বাসন'
- জামায়াত আমিরকে দেখতে হাসপাতালে মির্জা ফখরুল
- জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তিন শহীদ স্মরণে বরিশালের গৌরনদীতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
- সারাদেশে ২৪ ঘণ্টায় পুলিশি অভিযানে গ্রেফতার ১৭৬১ জন
- নীলফামারীতে চার শহিদের নামে চার গাছ রোপণ
- খুলনায় মদপানে ৫ জনের মৃত্যু
- যুক্তরাষ্ট্রসহ তিন গুরুত্বপূর্ণ মিশনে রদবদল
- মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে
- জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পঞ্চগড়ের পাঁচ শহীদের নামে বৃক্ষরোপণ
- কুমিল্লায় জুলাই শহীদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি
- সিদ্ধিরগঞ্জে হসপিটালে অভিযান, ৪০ হাজার টাকা জরিমানা
- চট্টগ্রামের ৪৬৪১টি পুকুরের মধ্যে ২৩৯০টিই বেদখল
সোনালি যুগের চলচ্চিত্র নির্মাতা - ফজলুল হক
আলাউদ্দীন মাজিদ
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর