গত বছরের জুলাই-আগস্ট বিপ্লব অন্য যে কোনো রাজনৈতিক দলের চেয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে বেশি লাভবান করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে জামায়াত জনগণের অনেক কাছে এসেছে এবং তাদের কথা জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারছে। অন্তর্বর্তী সরকার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে জামায়াতের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকে এমন ভাবতে শুরু করেছেন, জামায়াতে ইসলামী আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে, অথবা জামায়াতের সঙ্গে কোয়ালিশন গঠন না করে বা জামায়াতের সমর্থন ছাড়া কোনো দলের পক্ষে এককভাবে সরকার গঠন সম্ভব হবে না। তবে জামায়াতের দৃশ্যমান জনপ্রিয়তায় আওয়ামী লীগশূন্য বাংলাদেশের বড় দল বিএনপির মাথা খারাপ হওয়ার অবস্থা। দলটির মূল নেতা, অর্থাৎ যিনি দলের আশা-ভরসার উৎস, তার অনুপস্থিতিতে অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা তাদের বক্তব্যে যেভাবে অস্থিরতা প্রকাশ করতে শুরু করেছেন, তাতে তাদের ভীতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা ভাবছেন, নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, তাদের প্রতি জনসমর্থন তত হ্রাস পাবে।
জামায়াতে ইসলামী তাদের সমমনা দলগুলোর সঙ্গে জোট বেঁধেও কি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে এবং সরকার গঠন করতে সক্ষম হবে? আমার বিবেচনায় তা-ও সম্ভব হবে না। জামায়াত যদি ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের মতো জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, সামনের নির্বাচনে জামায়াতের পক্ষে যদি গণজোয়ারও সৃষ্টি হয়, তাহলেও তাদের পক্ষে এককভাবে সরকার গঠনের জন্য ১৫১ আসনে বিজয়ী হওয়া অসম্ভব ব্যাপার। সমমনা ইসলামি দলগুলোর জেতা আসন যোগ করেও যদি জামায়াত নিয়ন্ত্রিত সরকার গঠিত হয়, তাহলে সে সরকার দ্রুত মুখ থুবড়ে পড়বে। কারণ ‘ইরানের কোম নগরীভিত্তিক অপ্রতিদ্বন্দ্বী ও জনগণের কাছে বিপুল ভাবমূর্তিসম্পন্ন আয়াতুল্লাহদের মতো নেতৃত্ব বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে নেই, যার চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণ থাকবে সামরিক বাহিনী, গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর ওপর এবং অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে তার কর্তৃত্বই হবে মুখ্য। অথবা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে ১৯৩২ সালে বর্তমান সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ ইবনে সউদের মতো কোনো প্রবল শক্তিধর ও প্রভাবশালী উপজাতি নেতার মতো ব্যক্তিত্বও নেই, যার পক্ষে বাংলাদেশের বর্তমান জনচিত্র ও রাজনৈতিক ধারাকে পাল্টে ফেলা সম্ভব।
অতএব বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর মূলমন্ত্র ‘আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন’ বাস্তবায়ন করা অসম্ভব ও অবাস্তব এবং কল্পনাবিলাস ছাড়া আর কিছু নয়। জামায়াতের যে কোনো মন্ত্র বাস্তবায়নের প্রধান বাধা ‘১৯৭১’। জামায়াত নেতারা যতই একাত্তরে তাদের ভূমিকাজনিত দোষস্খলনের চেষ্টা করুন না কেন, গত চুয়ান্ন বছরে একাত্তর তাদের ছাড়েনি, ভবিষ্যতেও ছাড়বে না। এমনকি একাত্তরে যারা নাবালেগ ছিলেন, অথবা একাত্তরের বহু পর যাদের জন্ম হয়েছে, জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারাও একাত্তর দ্বারা প্রশ্নবিদ্ধ হতে থাকবেন। নিজেদের ওপর থেকে একাত্তরের কালিমা মোছার জন্য যারা জামায়াতে ইসলামী থেকে বের হয়ে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ (এবি পার্টি) গঠন করে জামায়াতের চরম বিরাগ ও ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপের শিকারে পরিণত হয়েছেন, একাত্তর তাদেরও পিছু ছাড়ছে না। মুক্তিযুদ্ধের তথাকথিত চেতনাধারী’ বা স্বাধীনতার তথাকথিত সপক্ষের শক্তিগুলো এবি পার্টিকে চিহ্নিত করেছে ‘জামায়াতের বি-টিম’ হিসেবে। ধরেই নেওয়া যায়, এ ধারা প্রজন্ম পরম্পরায় চলতে থাকবে।
এ প্রসঙ্গে আমার জানা দুটি গল্পের অবতারণা করছি। এক গ্রামে দাগি চোর ছিল আলাউদ্দিন। লোকজনের কাছে সে কুখ্যাত ছিল ‘আলা চোরা’ নামে। বয়সের একপর্যায়ে পৌঁছে লোকটির মধ্যে অনুশোচনা জাগ্রত হলো। চৌর্যবৃত্তি পরিহার করে নামাজ-কালামে মন দেয়, দাড়ি রাখে, মাথায় সারাক্ষণ টুপি পরে এবং চুরি করে যা সঞ্চয় করেছিল, তা থেকে দান-খয়রাত শুরু করে। সে তার আলা চোরা নাম ঘোচাতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু কোনোভাবেই তার আলা চোরা নাম ঘোচে না। আলা চোরা নিজেকে ‘আলা হাজি’তে রূপান্তরিত করার উদ্দেশ্যে হজ পালন করতে যায়। ওই যুগে হাজি সাহেবদের বিশেষ কদর ছিল। দশ গ্রামের লোক হাজিকে দেখতে আসত, দোয়া নিত। আলা চোরা পবিত্র হজব্রত পালন শেষে বাড়ি ফিরে আসে। কয়েক দিনের মধ্যে দেখা গেল, তার নামের ‘আলা’ শব্দটি খসে গেছে এবং নতুন নাম হয়েছে ‘চোরা হাজি’।
দ্বিতীয় গল্পটি ইরানের। প্রকাশ্যে, সশব্দে বা দুর্গন্ধযুক্ত বায়ুত্যাগ আমাদের সংস্কৃতিতে অশালীন এবং অনেকটা অমার্জিত। বিশেষ করে দুর্গন্ধ ছড়ানো নিঃশব্দ বায়ুত্যাগে কাউকে শনাক্ত করা যায় না বলে উপস্থিত প্রত্যেকে এমন ভাবভঙ্গি করে, কাজটা তার নয়, অন্য কারও। যা হোক, ইরানিরাও বায়ুত্যাগ সম্পর্কে আমাদের মতোই অনমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। এক তরুণ অসাবধানতাবশত ভরা মজলিশে বায়ুত্যাগ করে ফেলে। সবাই তাকে নিয়ে হাসাহাসি করে। এতে তার আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে এবং গভীর অনুশোচনা জাগে। মনের দুঃখে সে তার গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। বহু বছর আত্মনির্বাসিত থাকার পর পরিণত বয়সে এই আশা নিয়ে সে তার গ্রামে ফিরে আসে, দীর্ঘকাল আগে তার সেই ক্ষুদ্র অভদ্রতার প্রসঙ্গ এত দিনে লোকজন বিস্মৃত হয়েছে। সময়ের দীর্ঘ ব্যবধানে গ্রামের অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। সহসা সে তার বাড়ি চিনতে পারে না। নিজের নাম বলে সে খেলায় মগ্ন কিছু ছেলেকে তার পুরোনো বাড়িটি দেখিয়ে দিতে অনুরোধ করে। রাস্তার ছেলেগুলো তার কাছে জানতে চায়, ‘আপনি কি অমুক বায়ুত্যাগকারীর বাড়ি খুঁজছেন?’ হতভাগ্য লোকটি বাড়িতে না গিয়ে আবারও নির্বাসনে চলে যায়।
রাজনীতির মতো জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় ওপরের গল্প দুটির উপস্থাপন স্থূল বিবেচিত হতে পারে, কিন্তু এটাই বাস্তব ও মহাসত্য। ব্যক্তি হোক, দল হোক, যে কারও ললাটে একবার কালিমালিপ্ত হলে তা মুছে ফেলা শুধু কঠিন নয়, প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। একাত্তরের হত্যা, ধর্ষণ, ধ্বংসের হিসাবনিকাশ নিয়ে যত বিতর্কই থাকুক না কেন, সেজন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী সর্বাংশে দায়ী হলেও একাত্তর সালের সংকটক্ষণে অখণ্ড পাকিস্তানের প্রতি জামায়াতে ইসলামীর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিশ্বাস তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের বহু নাগরিক এবং মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামসহ বেশ কিছু দলেরও ছিল। তারা পাকিস্তানের অখণ্ডতা বজায় রাখার স্বার্থে সেনাবাহিনীর পদক্ষেপকে সমর্থন ও মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় বিরোধিতা করেছে। পাকিস্তানের পক্ষে বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা তাদের ভোল পাল্টে নিজেদের রক্ষা করেছে। ব্যতিক্রম ঘটেছে কেবল জামায়াতে ইসলামীর বেলায়, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নেওয়া এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য জানমাল কোরবান করার জন্য সদাপ্রস্তুত থাকার কথা বারবার ঘোষণা করেও অজ্ঞাত একাত্তরের দাগ মুছে ফেলতে পারেনি, অথবা মুছে ফেলার কোনো উপায় ছিল না।
জামায়াতের এই দুর্বলতাকে আওয়ামী লীগ সফলভাবে কাজে লাগিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী দলগুলো পঁচাত্তর-পরবর্তী ভস্ম থেকে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে ওঠা জামায়াতে ইসলামীর পুনরুত্থানকে সহ্য করতে পারেনি। অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বনকারী সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের সব দল ইতিহাসের অলিগলিতে হারিয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক গগনে জামায়াতের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান কীভাবে মেনে নেবে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার সব কৃতিত্বের একক দাবিদার আওয়ামী লীগ ও তার সমগোত্রীয়রা?
জামায়াতে ইসলামী যে ইতিহাসের পাতায় পাতায় ভুল করেছে, সে কাহিনি আমি আগেও একাধিকবার লিখেছি এবং আমার মাঝে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছে, বারবার ভুল করাই জামায়াতের বিলাসিতা ও ভাবাবেশ। স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াত নেতারা প্রথম বড় ভুল করে বসলেন ১৯৯৬ সালে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার দরজা উন্মুক্ত করতে তারা কার ইঙ্গিতে, কার বুদ্ধিতে জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছিলেন, তা আমার মতো রাজনীতিতে যৎসামান্য ধারণা রাখেন, এমন কারও বোধগম্য হয়নি। বিএনপি সরকার ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জামায়াতের ওই সময়ের শীর্ষ ব্যক্তির নাগরিকত্ব বহাল না করার কারণে বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে যদি আওয়ামী লীগের মতো একটি পরীক্ষিত দানবীয় শক্তিকে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ করে দেয়, তাহলে এ কথা বলায় আমার আদৌ ভুল হবে না, জামায়াত যদিও কোরআন-সুন্নাহর বিধানকে সমুন্নত রাখার বুলি আওড়ায়, প্রকৃতপক্ষে প্রাধান্য দেয় ব্যক্তিকে। এক ব্যক্তির স্বার্থে জামায়াত ’৯৬-এ ভুল করেছিল, তার চরম খেসারত তাদের দিতে হয়েছে এবং দেশ-জাতির অপূরণীয় ক্ষতির কারণ ঘটিয়েছে।
২০০১ সালের নির্বাচনে জামায়াত যখন তাদের ভুল শোধরায় তখন অনেক বিলম্ব ঘটে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেতে না পারার ক্ষোভে-দুঃখে জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় ফেলার জন্য একাত্তরে সংঘটিত সব অপরাধের দায়ভার চাপায় ওই দলটির ওপর। আওয়ামী লীগ তক্কে তক্কে ছিল, জামায়াত যদি তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় অথবা সরকার গঠনে বারবার বিএনপিকে সমর্থন দেয়, তাহলে ক্ষমতার বাইরে থাকলেও তারা জামায়াতকে ধোলাই করবে এবং ক্ষমতায় গেলে জামায়াতকে ‘কাট টু সাইজ’ করবে। তাই করেছে তারা। বিএনপি ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ঢাকার রাজপথে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করেছিল ছয় শিবির কর্মীকে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জামায়াতকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার কাজ শুরু করতে বিলম্ব করেনি। তারা প্রথম উদ্যোগেই স্বাধীনতার চার দশক পর জামায়াতের সব শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে একাত্তরে সংঘটিত সব অপরাধের অভিযোগ আনে। তাদের বিচার করার জন্য ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করে। সরকার ও আওয়ামী লীগের প্রোপাগান্ডায় মিথ্যাও সত্যে পরিণত হয়ে যায়। পাকিস্তান ও দখলদার বাহিনীর সমার্থকে পরিণত করা হয় জামায়াতকে। তাদের প্রচারণায় জনগণের একটি অংশের মধ্যে এমন ধারণাও হয়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান সেনাবাহিনী ছিল না, তারা হত্যা, অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ী ছিল না; অপকর্ম যা করার সবই করেছেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। এমনকি ট্রাইব্যুনাল কোনো কোনো জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে একাত্তরের বাংলাদেশে সংঘটিত সব অপরাধের জন্য তাদের ওপর ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’র দায় পর্যন্ত চাপিয়েছে। অর্থাৎ অভিযুক্ত জামায়াত নেতারাই ইস্টার্ন থিয়েটারে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দান করেছেন, সামরিক অভিযানের নীতি ও কৌশল নির্ধারণ করেছেন। জেনারেল টিক্কা খান, নিয়াজি ও রাও ফরমান আলিরা জামায়াত নেতাদের হুকুমের দাস ছিলেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা সাজানো বিচারে নিরপরাধ জামায়াত নেতাদের ঘাতক, ধর্ষক, লুণ্ঠনকারী সাব্যস্ত করে ফাঁসিতে ঝোলায়। যাদের ফাঁসিতে ঝোলাতে পারেনি, তাদের অনেকে আওয়ামী গুন্ডা-মাস্তানদের নিগ্রহের শিকার হয়েছেন, অনেককে সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত আয়নাঘরে কাটাতে হয়েছে বছরের পর বছর। তাদের পরিবারগুলোর দুঃখ-দুর্দশার সীমা-পরিসীমা ছিল না।
এসব থেকেও যদি জামায়াত নেতারা কোনো শিক্ষা গ্রহণ না করে থাকেন এবং ফাঁদে পড়ার জন্য নিজেদের পা এগিয়ে রাখেন, তাহলে তাদের মধ্যে বোধশক্তি জাগ্রত করার শক্তি কারোর নেই। বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও তাদের সিংহভাগই যে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করে, জামায়াত যদি এ সত্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় এবং ক্ষমতায় যাওয়ার, অথবা ক্ষমতার শরিক হওয়ার অভিলাষ পরিহার করে সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলে, তাদের জন্য তত মঙ্গল। জামায়াতের উচিত ক্ষমতায় যাওয়ার ইচ্ছা ত্যাগ করে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে থাকা। চুরাশি বছরের পুরোনো একটি দলের আর ভুল করা উচিত নয়।
এক উর্দু কবি বলেছেন : ‘বুরা ওয়াক্ত বাতাকর নেহি আতা/মাগার বহুত কুছ সিখা কর জাতা হ্যায়,’ (মন্দ সময় বলে-কয়ে আসে না, বরং অনেক কিছু শিখিয়ে যায়)। আল্লাহ জামায়াত নেতাদের সুবুদ্ধি দান করুন!
লেখক : যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সিনিয়র সাংবাদিক ও অনুবাদক