সরকারি চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি থেকে পদত্যাগ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম আবারও সুস্পষ্ট করে বললেন, ‘আমি আগেই গণমাধ্যমে এ বিষয়ে জানিয়েছি এবং এখন আবারও বলছি, আমি কমিটিতে গিয়েছিলাম রাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে। সেটা পারিনি বলেই নিজের কাছে ফিরে আসা।’ মম বলেন, ‘এখানে আসলে অভিযোগের কিছু নেই। এটা আমাদের সিস্টেমের জটিলতা। সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা তো আছেই।’ সব শেষে জাকিয়া বারী মম আবারও বলেন, ‘আমি গিয়েছিলাম রাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে। সেটা পারিনি বলেই ফিরে আসা নিজের কাছে। আর কিছু নয়।’
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার তার বর্তমান সময়ের কাজ নিয়ে বলেন, এখনকার বেশির ভাগ নাটকের গল্প প্রায় একই ধাঁচের। সেসব গল্পে অভিনয়ের কতটুকু মূল্যায়ন হবে বলা কঠিন। নতুনদের মধ্যে যারা নিয়মিত অভিনয় করছেন, গল্প-চিত্রনাট্য লিখছেন, নাটক-সিনেমা-সিরিজ পরিচালনা করছেন তাদের সবার সঙ্গেই যে কাজ করা হয়েছে, তা নয়। কিন্তু অনেকের কাজ দেখেছি, বেশ কয়েকজনকে সম্ভাবনাময় মনে হয়েছে। তাই নতুনদের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে কখনো অনীহা ছিল না। যখন কোনো গল্প, চরিত্র ভালো লাগছে, নির্মাণ পরিকল্পনায় একটু আলাদা মনে হচ্ছে, সে কাজগুলো করছি। কাজের ফলাফলও আশাবাদী করে তুলেছে। যেমন পরিচালক সোহেল রাজের কথাই বলি, তিনিও নতুন। কিন্তু শুটিং করতে গিয়ে দেখেছি, টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তিনি দারুণভাবে রপ্ত করেছেন। গল্প উপস্থাপনেও নিজস্ব ধরন আছে। তাই সোহেল রাজের মতো নির্মাতা কাজে নিজস্বয়তার ছাপ রাখতে পারছেন। তিনি বলেন, ‘সময়ের চাহিদা’ বলে একটা কথা আছে। এর মানে হলো সময়ই আপনাকে নির্ধারণ করে দেবে, কখন কী করতে হবে। একসময় রোমান্টিক গল্পের নাটকে বেশি কাজ করেছি, কারণ আমার কাছে দর্শকের প্রত্যাশা সেটাই ছিল। তারপরও যখন সুযোগ পেয়েছি, অভিনয়ে নিজেকে ভেঙে ভিন্ন রূপে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এভাবে যতটুকু পেরেছি দর্শক প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি চেষ্টা করেছি নিজের শিল্পীসত্তাকে খুশি রাখতে। কারণ অভিনয় শুধু তো পেশা নয়, ভালোবাসার একটা জায়গা। আরেকটি কথা হলো, নায়িকা হতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। অভিনয়ের মূল্যায়ন হবে, এমন যে কোনো চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আমি প্রস্তুত। আমি কাজের সংখ্যা নিয়ে মাথা ঘামাইনি। ক্যারিয়ার নিয়ে কখনো হতাশ ছিলাম না; বরং প্রতিনিয়ত মনে করি, যখন যে অবস্থানে আছি, সেখান থেকেই শুরু হবে নতুন করে পথচলা। মম আরও জানান, বেশ কিছু নাটক ও সিরিজ নিয়ে কথা হচ্ছে। তার মধ্যে যেগুলো ভিন্ন ধরনের মনে হবে, অভিনয়ের জন্য সেগুলো বেছে নেব। এর বাইরে ‘মাস্টার’ নামে একটি সিনেমায় অভিনয় করেছি। এ বছরই সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার কথা আছে। আশা করছি, সেখানে দর্শক আমাকে নতুন রূপে আবিষ্কার করবেন। মম ২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় জয়লাভের ফলে হুমায়ূন আহমেদ রচিত ও তৌকীর আহমেদ পরিচালিত দারুচিনি দ্বীপ চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। এ চলচ্চিত্রে জরি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এরপর তিনি নাটকে অভিনয় শুরু করেন। স্বর্ণমায়া, বিবর, নীড় নাটকে অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয়তা পান। এ ছাড়া তিনি যেসব সিনেমা ও ওয়েব ফিল্মে অভিনয় করেন ও প্রশংসা কুড়ান তার মধ্যে রয়েছে দারুচিনি দ্বীপ, প্রেম করবো তোমার সাথে, ছুঁয়ে দিলে মন, আলতা বানু, দহন, স্বপ্নের ঘর, স্ফুলিঙ্গ, আগামীকাল, ওরা সাতজন, সাহসিকা দুই, রেডিও, অনাবৃত্ত, এই মুহূর্তে, মহানগর, কন্ট্রাক্ট, ৯ এপ্রিল, রিফিউজি, মারকিউলিস, অগোচরা, সাড়ে ষোল প্রভৃতি।