চলচ্চিত্র শিল্পের সুদিন ফিরছে। কারন বন্ধ প্রেক্ষাগৃহ খুলছে। ভালো মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে। নতুন অভিনয় শিল্পী দর্শক প্রিয়তা পাচ্ছে এবং এফডিসি ডিজিটাল হচ্ছে। সবমিলিয়ে আবার জমে উঠেছে চলচ্চিত্র ব্যবসা। দর্শক হয়েছে হলমুখী।
১৯৯৭ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী শ্যামলী প্রেক্ষাগৃহটি উন্নত প্রযুক্তিতে চালু হচ্ছে। গতকাল এতে হয়ে গেল 'জোনাকির আলো' ছবির প্রিমিয়ার শো। বহুতল ভবনের শ্যামলী স্কোয়ারের নিচতলায় নির্মিত প্রেক্ষাগৃহটির আসন সংখ্যা ৩০৬। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে চালু হচ্ছে এটি। তাছাড়া এবছরই আবার চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে 'গুলিস্থান' এবং 'লায়ন' প্রেক্ষাগৃহ দুটি। এই ধারাবাহিকতায় ঢাকা ও মফস্বলে চালু হবে বন্ধ হওয়া বেশ কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহ। মালিকরা বলছেন এখন চলচ্চিত্রের ব্যবসা আবার চাঙা হচ্ছে। তাই নতুন করে এই ব্যবসায় আশার আলো দেখতে পেয়ে প্রেক্ষাগৃহ গুলো পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছি।
ঢালিউডে ইতিমধ্যে উন্নত প্রযুক্তিতে বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু হয়েছে। মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী, রেদওয়ান রনি, মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ, স্বপন আহমেদদের মত নবীন নির্মাতারা আধুনিক প্রযুক্তি ও ধ্যান ধারনার চলচ্চিত্র নির্মাণ করে ইতোমধ্যে সব শ্রেনীর দর্শককে সিনেমা হলে ফেরানোর কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। পাশাপাশি তাদের কাজ বিদেশেও প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হয়েছে। এসব নির্মাতার সমৃদ্ধ নিমার্ণের ধারা এখনও অব্যহত রয়েছে।
ঢালিউডের দীর্ঘদিনের সমস্যা 'শিল্পী সংকট'ও কাটতে শুরু করেছে। নতুন মুখ হিসেবে ইতিমধ্যে আরিফিন শুভ, সাইমন, মাহি, ববি, আইরিন, রুহী, পিয়াসহ অনেককে দর্শক গ্রহন করেছে এবং ছোটপর্দার হার্টথ্রব অপূর্ব ও অমৃতাকে বড় পর্দায় বরণের অপেক্ষায় আছে।
এদিকে এফডিসি তার 'অ্যনালগ' দুর্ণাম ঘুচাতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এই সংস্থায় ডাবিং থিয়েটারকে ডিজিটাল করা হয়েছে। শীঘ্রই আধুনিক ক্যামেরা, সম্পাদনা বিভাগের উন্নত যন্ত্রপাতিসহ প্রায় সব সেকশনই ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সাজানো হচ্ছে। সবমিলিয়ে চলচ্চিত্র শিল্প আবার তার সোনালী ঐতিহ্য ফিরে পেতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন চলচ্চিত্র বোদ্ধারা।
এদিকে গত এক বছরে চলচ্চিত্র ব্যবসায় ফিরেছে সুদিন। আর এ সুদিন ভিন্নস্বাদের ছবির ডানায় ভর করে ফিরেছে। গত এক বছর মুক্তিপ্রাপ্ত বেশিরভাগ ছবিই ব্যবসা সফল। এ প্রসঙ্গে জাজা মাল্টিমিডিয়ার কর্নধার আব্দুল আজিজ বলেন, 'চলচ্চিত্র দেখতে দর্শক হলে আসছেন। এটা অবশ্যই সুখবর। আমরা শুরু থেকেই চেষ্টা করেছিলাম ভিন্নস্বাদের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে। কারন বাংলাদেশে একই ধরনের চলচ্চিত্র নির্মিত হয়ে আসছিল। তাই দর্শক বিরক্ত। সেখান থেকে আমরা নতুন স্বাদের ছবি উপহার দিয়ে তাদের হলমুখী করেছি। ব্যবসাও ভালো হচ্ছে। আশা করি খুব শীঘ্রই আমাদের চলচ্চিত্র আবার কামর সোজা করে দাঁড়াবে।'
নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু বলেন, 'দর্শক অপেক্ষায় ছিল ভালো ছবির। এখন ভালো ছবি নির্মিত হচ্ছে। তাই তারা আবার হলে ফিরছে। নতুন মুখ, নতুন গল্প, নতুন নির্মাণশৈলি তারা গ্রহণ করছে। আর দর্শকই ছবির প্রাণ।'