গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসা অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে পুলিশ কার্যত আড়াল করছে বলেই অভিযোগ তুললেন দুর্ঘটনায় নিহত মডেল সনিকা সিংহ চৌহানের পরিবার। সেদিন রাতের শহরে গাড়িতে বাড়ি ফেরার পথে সনিকার মৃত্যুর তদন্তে সামান্য বিষয়গুলোও পুলিশ মানেনি বলে তার পরিবারের অভিযোগ। এবং এর পিছনে টালিগঞ্জ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী একটি মহলের হাত থাকতে পারে বলেও তাঁদের আশঙ্কা। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
সনিকার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পুলিশি তদন্তের ঘাটতি নিয়ে তাঁরা শীঘ্রই কলকাতা পুলিশের শীর্ষস্তর তথা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন। গোয়েন্দাপ্রধান বিশাল গর্গ অবশ্য শনিবার দাবি করেছেন, পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গেই বিষয়টি দেখছে।
ওই দুর্ঘটনায় মৃত, ২৭ বছরের মডেল সনিকার কাছের লোকেরা কিন্তু ঘটনাক্রম দেখে ততটা আশ্বস্ত নন। বরং থানাস্তরের পুলিশের মাথায় কোন অদৃশ্য চাপ রয়েছে বলে সনিকাদের ধারণা হয়েছে। তার এক আত্মীয়ের বরাত দিয়ে খবর আরও বলা হয়েছে, পুলিশ হয় বিষয়টি একেবারেই গুরুত্ব দেয়নি, নয় তো ভেবেচিন্তেই সত্যিটা ধামাচাপা দিতে চাইছে।
ঘনিষ্ঠ মহলে ১০টি জরুরি প্রশ্ন তুলেছে সনিকার পরিবার। সেগুলো হলো:
• বিক্রম মদ খেয়েছেন কি না বুঝতে কি দুর্ঘটনার পরে তাঁর ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার টেস্ট’ বা রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছিল পুলিশ?
• সনিকার বাড়িতে খবর দিতে ৫ ঘণ্টা কেন লাগল? (অভিযোগ, সকাল পৌনে ৯ টায় থানা থেকে খবর পান সনিকার মা।)
• সনিকার ফোন, ওয়ালেট কেন বিক্রমের বাড়ির লোকজনকে দেয় পুলিশ? (পরে বিক্রমের এক বন্ধু সে সব ফেরত দেন।)
• সনিকার রক্তাক্ত পোশাকের মতো তথ্যপ্রমাণ সে দিনই সংগ্রহ না করে কেন ১১ দিন বাদে তা নিতে নিহতের বাড়িতে গেল পুলিশ?
• প্রমাণ নষ্ট বা বিকৃত হতে পারে জেনেও দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিকে কেন অরক্ষিতভাবে ফেলে রাখা হয়েছিল?
• গাড়ির ফরেন্সিক পরীক্ষা কেন ৩০ ঘণ্টা বাদে করা হল?
• বিক্রমের বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর লিখিত অভিযোগ করা সত্ত্বেও ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর মামলা কেন দায়ের করেনি পুলিশ?
• তথ্যপ্রমাণ হিসেবে ঘটনাস্থলেই লেক মলের সিসিটিভি-র ফুটেজ কেন সংগ্রহ করেনি পুলিশ?
• দুর্ঘটনার সাক্ষীদের জবানবন্দি কেন ৮ দিন বাদে নেওয়া হল?
• বিক্রমকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে টিভি-র ছবিতে বিক্রমের বাবাকে থানায় ক্যারম খেলতে কেন দেখা গেল? অভিযুক্ত পক্ষের সঙ্গে থানার এই সম্পর্কের কী কারণ?
বিডি-প্রতিদিন/১৪ মে, ২০১৭/মাহবুব