বর্ষা যেতেই গুলশান লেকের পচা পানির দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ কূটনৈতিক পাড়া ও রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বারিধারার বাসিন্দারা। রাজধানীর মাদানী এভিনিউয়ের একপাশে মার্কিন দূতাবাস ও কানাডিয়ান হাইকমিশন; অপর পাশে সৌদি আরব, ফ্রান্স, কোরিয়াসহ আরও অনেক দূতাবাস। এই কূটনৈতিক পাড়ার গা ঘেঁষে চলে গেছে লেকটি। বেশ কিছুদিন ধরে লেকের পানি থেকে বের হচ্ছে উৎকট গন্ধ। সেই দুর্গন্ধ কূটনৈতিক পাড়া ছাপিয়ে কখনো বাতাসে ভেসে চলে যাচ্ছে নতুন বাজার পর্যন্ত, কখনো বা গুলশান সার্কেল পর্যন্ত। বাতাস যেদিকে, দুর্গন্ধও ছুটছে সেই দিকে।
এই পথ দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী অনেকের কাছে এ দুর্গন্ধ গা-সওয়া হয়ে গেলেও অধিকাংশ মানুষ নাকে রুমাল চেপে এলাকাটি পার হচ্ছেন। লেকের ওপরে কালভার্টে যানজট তৈরি হলে বিপদে পড়ছেন যানবাহনে থাকা যাত্রীরা। নাকে রুমাল চেপেও তখন আর কাজ হচ্ছে না। দুর্গন্ধে বিপাকে পড়ছেন জরুরি কাজে বিভিন্ন দূতাবাসে আসা মানুষ। গত বৃহস্পতিবার মাদারীপুর থেকে ভিসা সংক্রান্ত কাজে সৌদি দূতাবাসে আসা হারুন শিকদার বলেন, দূতাবাসে দেরি হবে দেখে লেকপাড়ে গিয়ে বসেছিলাম। ৫ মিনিটও টিকতে পারিনি। গুলশান-বারিধারার মতো অভিজাত এলাকার লেকের পানিতে এমন দুর্গন্ধ ভাবাই যায় না। এ ছাড়া এখানে বিভিন্ন দূতাবাসের অবস্থান। বিদেশের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, ছয় মাস আগে লেকের পানিতে প্রচুর আবর্জনা ভাসতে দেখা গেলেও এখন তেমন একটা নেই। তবে লেকের পানির রং ঘন সবুজ হয়ে গেছে। সেই পানি থেকে বের হচ্ছে উৎকট দুর্গন্ধ। লেকের দুই পাড়ে থাকা বড় বড় আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোর লেকমুখী জানালাগুলো সব সময় বন্ধ থাকছে। এ ব্যাপারে একটি বাণিজ্যিক ভবনের নিরাপত্তা কর্মী বলেন, শুধু বর্ষাকালে দুর্গন্ধ কিছুটা কমে। শীতকাল আসলে দুর্গন্ধ আরও বাড়বে। এ জন্য সব ভবনে জানালা বন্ধ করে এসি চালিয়ে রাখে। সবাই এখানে আবর্জনা ফেলে। কিছুদিন আগেও লেকের পানি থেকে প্রচুর আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে পানি পচে যাওয়ায় দুর্গন্ধ যায়নি।
এদিকে হাতিরঝিলের পানি থেকেও বের হচ্ছে উৎকট দুর্গন্ধ। এতে জায়গাটিতে ঘুরতে আসা মানুষজন বিপাকে পড়ছেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তারা এলাকা ছাড়ছেন।