বছর ১২ আগের কথা। সুইডেনে থাকি।
দেশ থেকে ৬-৭ জন সরকারি বড় কর্তা এসেছেন একটা প্রশিক্ষণে। উনারা আমার সাথে যোগাযোগ করেছেন। তখন সুইডেনে গ্রীষ্ম প্রায় চলে এসছে।
এই দেশে গ্রীষ্মের সময় ছেলে-মেয়ে সবাই ছোট-খাটো পোশাক পরে ঘুরে বেড়ায়। এটা খুব স্বাভাবিক এই সব দেশে।
তো, প্রথম যেদিন ওই সরকারি কর্তাদের নিয়ে আমি বের হয়েছি; উনারা একজন আরেজনের সাথে কথা বলছেন। স্থানীয় মেয়েদের নিয়ে তারা আপত্তিকর শব্দ উচ্চারণ করেছেন।
আমি বেশ অবাকই হয়েছি তাদের কথা বলার ভাষা দেখে।
খানিক বাদে একজন আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন:
-ভাই এখানে ন্যুড বিচ আছে না? আমাদের একটু ন্যুড বিচে নিয়ে যান।
আমি বেশ অবাক হয়েছি। কারণ সেদিনই তাদের সাথে আমার পরিচয়। প্রথম পরিচয়ে কেউ এই ধরনের কথাবার্তা বলতে পারে, আমার অন্তত জানা ছিল না।
এই কর্তারা প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে চলে গেলেন। অনেক দিন আর যোগাযোগ নেই।
একদিন হঠাৎ দেখি এদের মাঝে একজন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন
- "নারীদের উচিত সঠিক পোশাক পরে বাইরে বের হওয়া। ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলো দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।"
তার ওই স্ট্যাটাস পড়ে আমার চোখ কপালে উঠার জোগাড়।
যেই ভদ্রলোক বিদেশে এসে নারীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করছেন কিংবা ন্যুড বিচে যেতে চেয়েছেন; তিনি'ই দেশে গিয়ে নারীদের পোশাক নিয়ে কথাবার্তা বলছেন। এবং সেখানে তার অনুসারীরা এসে- "জ্বি স্যার", "ইয়েস স্যার", "সহমত স্যার" ইত্যাদি আরও কতো রকম মন্তব্য করেছেন।
আমি এদের মন্তব্য পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম- আচ্ছা, এরা কি জানে, তাদের এই স্যার বিদেশে এসে ন্যুড বিচ খুঁজে বেড়ায়?
আপনাদের জানিয়ে রাখি- এখানকার বেশিরভাগ ন্যুড বিচে যেতে হলে আপনাকেও জামা-কাপড় খুলে ন্যুড হয়েই যেতে হবে। এতে অবশ্য ওই ভদ্রলোকের কোন সমস্যা হয়নি!
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা