রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা
মন্তব্য প্রতিবেদন

বিএনপিকে জামায়াত ছেড়ে আসতেই হবে

পীর হাবিবুর রহমান

গতকাল মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন। এর পর পর মাননীয় বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া নেতা-কর্মীদের নিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রীর গায়ে ছিল শোকের প্রতীক কালো চাদর। বিএনপি নেত্রীর গায়েও ছিল শোকের কালো চাদর। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনই নয়; গণমানুষও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা। আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক শাহীন রেজা নূর আলোচনা করতে গিয়ে এতটাই আবেগাপ্লুত হয়েছিলেন যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চোখ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু ঝরছিল। শহীদ সাংবাদিক, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু সিরাজউদ্দিন হোসেনের ছেলে শাহীন রেজা নূর তার মায়ের বেদনার কথা বলেছিলেন। তার বক্তব্য যারা টিভি পর্দায় দেখেছেন তাদের হৃদয়ও স্পর্শ করেছে। আমাদের সুমহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়লগ্নে পরাজয়ের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের এ-দেশীয় দোসর আলবদরদের নিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। কাল শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথ হাঁটা সব দল ও মতের মানুষের পাশাপাশি বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যখন শোকার্তচিত্তে ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে শ্রদ্ধা নিবেদন করছিলেন তার কয়েক ঘণ্টা পরই দেশের বিভিন্ন স্থানে তার জোটের প্রধান শরিক জামায়াত-শিবির সহিংস রূপ নিয়ে মাঠে নেমেছিল।

আগামীকাল বিজয় দিবসে যখন মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিক তখন আজ সারা দেশে জামায়াত-শিবির সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। জাতির স্মৃতির মিনার শহীদ মিনার থেকে বাংলাদেশের অস্তিত্বের স্মারক শহীদ বুদ্ধিজীবী ও জাতীয় স্মৃতিসৌধ সবখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াসহ সব দল, মত ও পথের মানুষ বার বার যান শ্রদ্ধা নিবেদনে। এবারও যাবেন। যাবে না শুধু '৭১-এর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর জামায়াত-শিবির। এখানেই বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের মোটা দাগের পার্থক্যটা জাতির সামনে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসা বিএনপি জামায়াতের নেতা, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের গাড়িতে তুলে দিয়েছিল লাখো শহীদের রক্তে ভেজা জাতীয় পতাকা। সেই ভুলের পথে বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে সারা দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছিল। সন্ত্রাসবাদের অভয়ারণ্য হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের পবিত্র ভূমি। শিবির শিক্ষাঙ্গনগুলোয় অস্ত্র আর রগ কাটার রাজনীতি চালু করেছিল। এই শিবিরের বিরুদ্ধে বার বার ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলও রুখে দাঁড়িয়েছে। বিএনপির সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মী-সমর্থকরা '৭১-এর কলঙ্কের ঢোল জামায়াতের সঙ্গসুখ নিতে চায় না। তবুও অনেকে মনে করেন, জামায়াতের অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যের মোহে ও তাদের আন্তর্জাতিক মোড়লদের কারণে বিএনপি অভিশপ্ত এ দলটির সঙ্গ ছাড়তে পারে না। গতকাল দুই নেত্রীর পরনের চাদর ও শাড়ির রং ছিল কাছাকাছি। শ্রদ্ধা নিবেদনের চিত্র ছিল একই বৈশিষ্ট্যের।

দুই নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে রাজপথ থেকে লড়ে এসেছেন। কিন্তু জামায়াত প্রশ্নে আজকের রাজনীতিতে দুজনের অবস্থান দুই দিকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার হাঁটছে জামায়াত দমনের পথে। অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপি জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটছে সরকার পতনের লক্ষ্যে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বিএনপির আন্দোলনের ধারা হারিয়ে গেছে জামায়াত-শিবিরের সহিংস সন্ত্রাসের উন্মত্ত তাণ্ডবে। সেদিন যে জামায়াত-শিবিরকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল ওরা সন্ত্রাসী দল কি না, আজকের গোটা দুনিয়া দেখছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনায় লালিত বাংলাদেশে জামায়াতের আসল সন্ত্রাসী রূপ। একবাক্যে এখন সবাই বলছে, জামায়াত একটি সন্ত্রাসী দল। তারা সেই '৭১-এর খুনির হৃদয় নিয়ে পেট্রলবোমায় বাস, বাসাবাড়ি, ট্রেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ দেশজুড়ে মানুষ হত্যার উন্মত্ত নেশায় মেতে উঠেছে। রাস্তাঘাট অবরোধের নামে সড়ক কেটে দেওয়া হচ্ছে। ব্রিজের পাটাতন সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রেললাইনের ফিশপ্লেট তুলে নেওয়া হচ্ছে। দেশজুড়ে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে দিচ্ছে। সন্ত্রাসকবলিত জামায়াত-শিবিরের সেই আগুন আর আক্রমণে পুড়ছে দেশ, মরছে মানুষ। শেষ হয়ে যাচ্ছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি। ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ যেখানে দক্ষিণ এশিয়ায় উদীয়মান টাইগার হিসেবে আবিভর্ূত হয়েছিল সেখানে ফের তলাবিহীন ঝুড়ি বানিয়ে দিতে চাইছে। জামায়াত-শিবিরের সহিংস সন্ত্রাসের কাছে বিএনপির অবরোধ, হরতালের রাজনীতি আর নিয়মতান্ত্রিক বা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সেই চিরচেনা চেহারা পাচ্ছে না। মানুষের কাছে, বিশ্ববাসীর কাছে বিএনপি আর জামায়াতকে এক পাল্লায় তুলে দেওয়া হচ্ছে। বিএনপি আর জামায়াত-শিবির একাকার হয়ে যাচ্ছে রাজপথের সহিংস রূপের চিত্রায়নে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দুনিয়া গণতন্ত্রের পক্ষে আজীবন কথা বললেও এই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করার মতো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছে না। যে বৃহত্তম গণতান্ত্রিক ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে দুনিয়ার বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে তারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গণতন্ত্রের মহান নেত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে নিজেদের অভ্যন্তরীণ সংকট রেখেও আমাদের আশ্রয় দিয়েছে, খাবার দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে, ট্রেনিং দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে_ পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করতে ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে। সেই ভারত তার নিরাপত্তার স্বার্থে এ ভূখণ্ডে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য হতে দিতে পারে না। বেগম খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ নেতৃত্বকে এটি উপলব্ধি করতে হবে। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দক্ষিণপন্থিদের আপত্তির মুখে ভারত সফরে গিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন। কিন্তু দেশে ফেরার পর ভারতের আজকের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ঢাকায় এলে শিবিরের হরতালের কারণে তার সঙ্গে সাক্ষাৎসূচি পর্যন্ত বাতিল করে দিয়েছিলেন। কোন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় এ ভুলটি করেছিলেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এখনো তা খোলাসা করতে পারেননি। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির মাত্র দুই বছর পর শাসক মুসলিম লীগের পেট থেকে বেরিয়ে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শামসুল হক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা জনসমর্থন পেয়েছিল। এমনকি ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে মওলানা ভাসানী ন্যাপ করে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর ষাটের শুরুতে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মৃত্যুবরণ করলেও শাসকদের দমননীতির মুখেও শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বৈরী সে াতের বিপরীতে সাঁতার কেটে আওয়ামী লীগ জনসমর্থন আদায় করে। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে শুধু বিকশিতই করেননি, স্বাধিকার-স্বাধীনতার সংগ্রামের পথে ১৯৭০-এর গণরায় নিয়ে একটি জাতিকে এক সুতায় বেঁধে সুমহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছিলেন। সেই পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে আজ পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের বাংলাদেশে কখনো দক্ষিণপন্থি উগ্র জামায়াত-শিবির জনগণের রায় নিতে পারেনি। উগ্র বামরা অনেক জ্বালাও-পোড়াও করেও মানুষের ভোটে সংসদের মুখ দেখেনি। স্বাধীনতা-উত্তরকালে মুক্তিযুদ্ধ ফেরা টগবগে তারুণ্যের দল জাসদ উগ্র রোমান্টিক হঠকারী রাজনীতির পথ নিয়ে হারিয়ে গেছে। গণরায় নিতে পারেনি। উগ্রপন্থিদের দেশের মানুষ কখনো হৃদয়ে ঠাঁই দেয়নি। আজকের জামায়াত-শিবির সহিংস সন্ত্রাসে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, মন্দিরে হামলা করছে। বাংলাদেশ বিনির্মাণে সব ধর্মের মানুষই জীবন দিয়েছে। সব ধর্মের মানুষ এ ভূখণ্ডে শত শত বছর ধরে আত্দীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এক সুন্দর সম্প্রীতির পরিবেশে বসবাস করে আসছে। এই ধর্মান্ধ উগ্র রাজনীতিকে মানুষ প্রশ্রয় দেয়নি। সমর্থন দেয়নি। মানুষের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মূল্যবোধ ও ধারা নির্বাসিত হয়নি বলেই কোনো ধরনের উগ্রতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেয়নি। বর্তমান জামায়াত-শিবিরের সহিংস সন্ত্রাসকেও সমর্থন দিচ্ছে না। কয়েক দিন আগে সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সম্প্রীতির শহর সুনামগঞ্জে গিয়েছিলাম। দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি শান্তিপূর্ণ মিছিলের মাধ্যমে অবরোধ আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করছে। বড় বড় মিছিল হচ্ছে। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা জনসংযোগ করছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও বাড়াবাড়ি করছেন না। জামায়াত-শিবিরের আস্ফালন নেই। অবরোধকালে বিএনপির একদল কর্মী একটি সিএনজি ভাঙচুর করেছিলেন। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আ স ম খালিদ ওই সিএনজি চালককে তার বাহন মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত টাকা দিয়েছেন নিজের পকেট থেকে। বিএনপিতে এখনো এ রকম মানসিকতার কর্মী যেখানে রয়েছেন সেখানে আজকের সহিংস তাণ্ডবের উগ্রমূর্তির সন্ত্রাসী জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল বিএনপির কোনো রাজনৈতিক ঐক্য থাকতে পারে না। মানুষ সাহসী নেতৃত্বকে বারবার পছন্দ করেছে। কিন্তু কোনো উগ্র নেতৃত্বকে গ্রহণ করেনি। আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতিকে মেনে নেয়নি। এ জাতির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের অর্ধেক জেলে কাটিয়ে প্রকাশ্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এ দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। মওলানা ভাসানীর রাজনীতিও কখনো সন্ত্রাসের পথ নেয়নি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের রাজনীতির কলাকৌশল ও শাসনকাল নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বরাবর তিনি নিয়মতান্ত্রিক ও শৃঙ্খলাবোধের কথা বলেছেন। বিএনপিকে মানুষ একটি মধ্যপন্থি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বার বার ক্ষমতায় অভিষিক্ত করেছে। পছন্দ করেছে। বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া কিছু দিন আগেও বলেছেন ক্ষমতায় এলে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদকে কঠোর হাতে দমন করবেন। নতুন ধারার সরকার দেবেন। আজকে গোটা বাংলাদেশে যে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসের আগুন ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাতে জিয়াউর রহমানের উৎপাদনের রাজনীতির কবর দিচ্ছে; বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ দমনের এবং নতুন ধারার শাসনব্যবস্থার স্বপ্নকে ধুলায় মিশিয়ে দিচ্ছে; বিএনপির রাজনৈতিক চরিত্রকেই হরণ করে ঘোর অন্ধকার পথে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। নিজের অজান্তেই বিএনপি এক অন্ধকার সময়ের ভেতর ডুবে যাচ্ছে। এ অন্ধকার পথ থেকে এ মুহূর্তে বিএনপি বেরিয়ে না এলে দেশের শাসনব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য দুঃসংবাদ। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় এবং এ দেশের ঐতিহ্যের রাজনীতির উত্তরাধিকারিত্বের ধারাবাহিকতা নিরঙ্কুশ রাখতে ভারসাম্যমূলক রাজনীতির বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে একটি মধ্যপন্থি উদার গণতান্ত্রিক দলের চরিত্র নিয়ে বিএনপিকে নিজস্ব ভাবমূর্তি নিয়ে গণমানুষের আস্থার ওপর দাঁড়ানোর বিকল্প নেই। দেশ, মানুষ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে বিএনপিকে ফিরে আসতেই হবে। সন্ত্রাসবাদী জামায়াত-শিবিরের সঙ্গ এ মুহূর্তে ছাড়তেই হবে। ছেড়ে দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার ও খোলাসা করতে হবে। জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসের রাজনীতির কলঙ্কের দায় নিয়ে বিএনপি জনসমর্থন হারিয়ে দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে, নাকি সঙ্গ ত্যাগ করে স্বমহিমায় ক্লিন ইমেজ নিয়ে গণতন্ত্রের আলোর পথে হাঁটবে সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখনই মাহেন্দ্রক্ষণ। জামায়াত-শিবিরের সহিংস রাজনীতির সঙ্গে পায়ে পায়ে হাঁটতে গিয়ে অনেক নেতা-কর্মী জেলই খাটছেন না, অনেকে জীবনও দিচ্ছেন। বিএনপি নেতৃত্বকে ভাবতেই হবে জনগণের ওপর নির্ভর করবেন, নাকি জামায়াত-শিবিরের ওপর ভর করেই অন্ধকার পথে হাঁটবেন। গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ধারার রাজনৈতিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে বিএনপিকে জামায়াত ছেড়ে আসতেই হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর