শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০১৫

বুদ্ধিজীবীর জারি : ১৯৭১

সলিমুল্লাহ খান
প্রিন্ট ভার্সন
বুদ্ধিজীবীর জারি : ১৯৭১

সবে বলে আচম্বিতে এ কি হৈল দায়। নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়। -ভারতচন্দ্র রায় (গ্রন্থাবলী : ১৪০৪, ৩৯২)
১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হামলা শুরু হইবার পর যাঁহারা সাবেক পূর্ব পাকিস্তান হইতে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন তাঁহাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন ‘বুদ্ধিজীবী’। এই বুদ্ধিজীবীরা পশ্চিম বাংলা ও ত্রিপুরায় বিশেষ করিয়া কলিকাতায় কিভাবে জীবনধারণ করিয়া থাকিতেন তাহার কিছু বিবরণ পাওয়া যায় গোলাম মুরশিদের স্মৃতিকথায়। স্মৃতিকথাটির নাম ‘যখন পলাতক : মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি’। প্রথম প্রকাশ : সন ১৯৯২। ২০০৩ সালে ইহার দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ পায়। আমার হাতে পড়িয়াছে এই দ্বিতীয় সংস্করণের তৃতীয় মুদ্রণ। সন ২০১০।
গোলাম মুরশিদ তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াইতেন। কিন্তু পুরাদস্তুর অধ্যাপক হইয়া সারেন নাই। এমন কি ‘ডাক্তার’ উপাধিও লভেন নাই। কিন্তু তাঁহার সম্পাদনায় ‘বিদ্যাসাগর’ নামে একটি বই প্রকাশিত হওয়ায় কিছু নামডাক হইয়াছে। আনন্দবাজার পত্রিকার বার্তা সম্পাদক অমিতাভ চৌধুরী তাঁহাকে দেখিয়া ডাক্তার উপাধিযুক্ত না ভাবিয়া পারেন নাই। ইহা ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের কথা। মুরশিদ বলিয়াছেন, ‘আমি তখনো ডক্টর হইনি। কিন্তু যে বইয়ের প্রকাশনার খবর দিয়েছিল রয়টার তার সম্পাদক পিএইচ.ডি. নন এটা অমিতাভ চৌধুরী ভাবতে পারেননি।’ (পৃ. ৩৭)
১৯৭১ সালের ৩রা এপ্রিল তারিখে তিনি সপরিবারে রাজশাহীর কাছাকাছি কোথাও সীমান্ত অতিক্রম করেন। জায়গাটার নাম কাতলামারি। মুরশিদ লিখিয়াছেন, এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ পশ্চিমবঙ্গে ঢুকিয়া পড়িয়াছিলেন। তাঁহার কথায়, ‘পাকিস্তানী ফৌজী বাহিনীর হামলা ছিল এমন নিষ্ঠুর ও ভয়ানক যে পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত অনেকেই নিয়েছিলেন একেবারে গোড়ার দিকে।’ (পৃ. ৩১-৩২)
পলায়নের একটি দৃষ্টান্ত এই রকম (গোলাম মুরশিদের জবানেই উদ্ধৃত করিতেছি) : ‘এরকম সময়েই একদিন আনন্দবাজার থেকে ফিরে এসে দেখি উদ্বাস্তু পরিবারের সংখ্যা বেড়ে গেছে- আমাদের বাড়িতে সপরিবারে আলী আনোয়ার। আলী আনোয়ার এবং তাঁর স্ত্রী হোসনে আরা দুজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সহকর্মী। তাঁদের দেখে খুব খুশি হলাম। ওঁরা বললেন, রাজশাহীতে পাকিস্তানী ফৌজী বাহিনী ঢুকে পড়ার আগে ওঁরা কিভাবে গ্রামে পালিয়ে যান। তারপর খানসেনারা যখন সেই গ্রামের দিকেও এগিয়ে আসে, তখন কোন উপায়ান্তর না দেখে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন। পশ্চিম বাংলায় আলী আনোয়ারের আমারই মতো কোন আত্মীয়স্বজন ছিল না। সঙ্গে টাকাপয়সাও ছিল খুব সামান্যই। তার ওপর, দুটি সন্তান ছাড়াও, ভাবী তখন গর্ভবতী। কিন্তু বর্বর সৈন্যদের সামনে করবেন কি! তাঁরা জানতেন, য পলায়তি স জীবতি। সেই আপ্তবাক্য মেনে নিয়েই তাঁরা অজানার উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন।’ (পৃ. ৫৭)
পলায়ন না করিলে কি হইত? এই জিজ্ঞাসার উত্তর গোলাম মুরশিদ লিখিয়াছেন একটি কাহিনীর মধ্যে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কাহিনীর একটি কাহিনী। পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দখল প্রতিষ্ঠা করে ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যা নাগাদ। ‘সংস্কৃতের একমাত্র অধ্যাপক সুখরঞ্জন সমাদ্দারকে ১৪ এপ্রিল খানসেনারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল তাঁর ফ্ল্যাট থেকে। তার দুয়েকদিন পরে এক দালালের ‘অসীম দয়ায়’ ফিরে এসেছিল শুধু সমাদ্দারের চশমা আর স্যান্ডেল। এছাড়া যুদ্ধের পরে ছাত্রদের কাঁধে করে ফিরে এসেছিল সুখরঞ্জনের হাড়গুলো। সেগুলো নতুন করে সমাহিত করা হয় লাইব্রেরি ভবনের সামনে।’ (পৃ. ১৯১)
সুখরঞ্জনের প্রাণদানকে গোলাম মুরশিদ অভিহিত করিয়াছেন ‘গোয়ার্তুমি’ বলিয়া। তিনি লিখিয়াছেন, ‘অবশ্য স্বীকার করতে হবে, তাঁর হত্যার জন্য সুখরঞ্জন নিজেও কম দায়ী ছিলেন না। টিক্কা খানের ঘাতক বাহিনীর হাতে রাজশাহী পতনের দিন সকালবেলায়ও কজন সহকর্মী তাঁকে পালানোর উপদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সুখরঞ্জন নাকি নিজে তাঁর হাতের রেখা দেখিয়ে বলেছিলেন: ‘দেখছেন না, আমার বয়স ৬৩? তার আগে আমাকে মারে কে?’ গোলাম মুরশিদও রসিক মুরিদ। তিনি টীকা করিয়াছেন : ‘সুখরঞ্জন তাঁর হাতের রেখার মধ্যে ৬ আর ৩ হয়ত সত্যিই দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু ৬ আর ৩-এর মধ্যে কোনটা আগে আর কোনটা পরে, সেটা যে ঠিকমত দেখতে পাননি, এটা হলপ করে বলতে পারি। সেজন্যেই মাত্র ৩৬ বছর বয়সে তিনটি সন্তান রেখে প্রাণ হারিয়েছিলেন তিনি।’ (পৃ. ১৯১)
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতশাস্ত্রের অধ্যাপক হবিবুর রহমানের প্রাণ দেওয়ার ঘটনাকেও গোলাম মুরশিদ নাম দিয়াছেন সেই একই বাক্যে- ‘গোয়ার্তুমি’। গোলাম মুরশিদের ভাষায় ‘তবে দুজনের মধ্যে পার্থক্য এই যে হবিবুর রহমান সত্যি সত্যি রাজনীতি করতেন। আর সুখরঞ্জন রাজনীতির ধারও ধারতেন না। একেবারে নিরীহ গোবেচারা বলতে যা বোঝায়।’ (পৃ. ১৯১)
গোলাম মুরশিদ বুদ্ধিজীবী আরও যোগ করিলেন : ‘এক যাত্রায় তাঁরা অবশ্য ফলও পেয়েছিলেন আলাদা। যুদ্ধের পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ছাত্রাবাস হয়েছিল হবিবুর রহমানের নামে। আর সমাদ্দারের বিভাগে বোধ হয় সেমিনার কক্ষের নামও সুখরঞ্জন হয়নি। একেই বলে কপাল।’ (পৃ. ১৯১)
এই তিতকুটে ভাষণের পশ্চাতে আর কি আছে? ইহা লইয়া এই গোলাম মুরশিদের মিষ্টি কৈফিয়তও আছে একটা। তিনি কিছু কথা বলিয়াছেন যাহা সকলের পছন্দ হইবে না। যেমন লিখিয়াছেন, ‘ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী আমার রাশি হলো বৃশ্চিক। এ রাশির লোকদের সবাই নাকি ভুল বোঝে। জ্যোতিষশাস্ত্রে আমার প্রগাঢ় কোন বিশ্বাস নেই। কিন্তু লক্ষ্য করেছি আমার পরিবারের লোকজন থেকে শুরু করে অনেকেই আমাকে অকারণে ভুল বোঝেন। অনেকে আমার লেখারও উল্টো অর্থ করেন এবং এসব ক্ষেত্রে আমি নিজের ভাগ্যকেই দোষ দিই।’ (পৃ. ১২০)
ভাগ্যের দোষে গোলাম মুরশিদ সীমান্ত অতিক্রম করিলেন একদিন।  সেদিন ছিল ৩রা এপ্রিল। কিছুদিনের মধ্যেই বেগম মৈত্রেয়ী দেবীর মধ্যস্থতায় আর সাহেব জাস্টিস মাসুদের কল্যাণে আনন্দবাজার পত্রিকার সহিত তাঁহার একটা যোগাযোগ হইল। সেই বহুল প্রচারিত পত্রিকায় আর তার সহযোগী দেশ ম্যাগাজিনে লেখার আমন্ত্রণ পাইলেন তিনি। তাঁহার প্রথম লেখা প্রকাশিত হইল ১৯৭১ সালের ১৩ই এপ্রিল। (পৃ. ৪২) বেশ দ্রুতই বলিতে হইবে।
১৯৭১ সালের এপ্রিল হইতে ১৯৭২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মোট দশ মাস গোলাম মুরশিদ কলিকাতায় শরণার্থীর জীবনযাপন করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। এই দশ মাসে- তিনি নিজেই লিখিয়াছেন- আনন্দবাজার আর দেশ এই দুটি পত্রিকায় গনিয়া গনিয়া তাঁহার মোট ৪৩টা লেখা বাহির হইয়াছিল। আর এই ৪৩ লেখার মজুরি বাবদ তিনি কমবেশি আড়াই হাজার টাকা পাইয়াছিলেন। অনেক বছর পর পশ্চিম বাংলার বুদ্ধিজীবী মৈত্রেয়ী দেবী নাকি কোথাও লিখিয়াছিলেন, আনন্দবাজারের সম্পাদকীয় পাতায় লেখা প্রকাশিত হওয়ায় কেহ কেহ মনে করিলেন জীবন ধন্য হইল। তাহা ছাড়া, তাঁহারা ছিলেনও রাজার হালে। গোলাম মুরশিদ মনে করেন মৈত্রেয়ী দেবীর এই শ্লেষ তাঁহাকে লক্ষ্য করিয়াই। তাঁহার কৈফিয়ত এই যে আনন্দবাজারে লেখা প্রকাশিত হওয়ার গুরুত্ব তাঁহার মাথায় মোটেও আসে নাই। তাই নিজেকে তিনি ধন্যও মনে করেন নাই। আর রাজার হালে তিনি তো মোটেও ছিলেন না। (পৃ. ৩৯)
গোলাম মুরশিদের কথার শেষ এখানেই নহে। তিনি লিখিয়াছেন : ‘আমি যে খুব ভালো আছি সেটা মুজিবনগর সরকারেরও অনেকে মনে করতেন। সে জন্যে আমার বন্ধুরাসহ উদ্বাস্তু বুদ্ধিজীবীরা প্রায় সবাই চাকরি পেলেও আমি আনন্দবাজারে লিখে আয় করছি বলে আমাকে কোন চাকরি দেয়া হয়নি। তখন সাধারণ সরকারী কর্মচারীদের বেতন মাসে বরাদ্দ করা হয়েছিল কারো ৪০০, কারো ৫০০ টাকা। প্ল্যানিং সেলের সঙ্গে যুক্ত সাধারণ কর্মচারীদের বেতন ছিল মাসে ৩৫০ টাকা। আমি যদি বাংলাদেশ সরকারের চাকরি পেতাম, তা হলে মোটামুটি সাড়ে তিন হাজার টাকা পেতাম। সেটা আনন্দবাজারে লেখার চেয়ে বেশি।’ (পৃ. ৩৯)
গোলাম মুরশিদ আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রথম যে লেখাটা লিখিয়াছিলেন তাহার নাম ছিল ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাংস্কৃতিক পটভূমি’। ইহা তাঁহার বক্তব্য। আমার স্মৃতি প্রতারণা না করিলে বলিব, এই লেখাগুলি যখন বই আকারে বাহির হয় তখন তাহার নাম দাঁড়ায় সামান্য ভিন্ন : ‘স্বাধীন বাংলাদেশ সংগ্রামের সাংস্কৃতিক পটভূমি’ বা এই জাতীয় কিছু। এই লেখা প্রসঙ্গে তাঁহার ঘোষণা : ‘আমি রাজনীতির ইতিহাস লিখিনি। একজন রাজনীতি সচেতন সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে লিখেছিলাম সাংস্কৃতিক রূপান্তরের ইতিহাস।’ (পৃ. ৪১)
বুদ্ধিজীবী হিশাবে তিনি আর কি করিতে পারিতেন? তিনি লিখিয়াছেন, ‘আমি দেশের ভিতরে গিয়ে তো লড়াই করিনি। বর্ডারে গিয়ে শরণার্থীদের সেবাও করতে পারিনি। কিন্তু তখন বাংলাদেশে ‘অজানা’ লড়াইয়ের প্রতি পশ্চিমবঙ্গে যে বিরাট সহানুভূতি আর ভাবাবেগের জোয়ার দেখা হইয়াছিল, আমি সেই জোয়ারটাকে আরও একটু জোরদার করারই প্রয়াস পেয়েছিলাম এই লেখাটি এবং পরবর্তী লেখাগুলোর মধ্য দিয়ে।’ (পৃ. ৪৭)
ছোট্ট একটি সতর্কতা অবলম্বন করিতে অবশ্য তিনি ভোলেন নাই। সুখরঞ্জন সমাদ্দারের কিংবা হবিবুর রহমানের মতো ‘গোয়ার’ নহেন তিনি। নহেন সৈয়দ আলী আহসান কিংবা আনিসুজ্জামানের মতো বেওয়াকুফও। তিনি লিখিয়াছেন : ‘এ লেখার জন্য আমার নামটা একটু বদলে দিয়েছিলাম। গোলাম মুরশিদের পরিবর্তে লিখেছিলাম হাসান মুরশিদ। দেশে আত্মীয়স্বজনরা সবাই রয়ে গেছেন, সে কথা মনে রেখেই এই সতর্কতা নিতে হয়েছিল।’ (পৃ. ৪১)
কে না জানে সতর্কতার মধ্যেই বুদ্ধিজীবীর পরিচয়। তিনি সতর্কতা অবলম্বন করিয়াছিলেন আরও একটি ক্ষেত্রে। কলিকাতায় বসবাসের দশ মাসে একদিনও ‘আকাশবাণী’ কিংবা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কণ্ঠ দিতে রাজি হন নাই তিনি। ঘোড়ার মুখেই না হয় শুনি কথাটা : ‘কলিকাতায় যাবার ছ সাত দিন পরে আকাশবাণীর কলকাতা কেন্দ্রে গিয়েছিলাম প্রণবেশ সেনের সঙ্গে দেখা করতে। নিচ থেকে স্লিপ পাঠাতেই উনি চলে এলেন আমাকে নিয়ে যাবার জন্যে। তারপর ওখানেই পরিচয় হলো দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় আর মিস্টার ভৌমিকের সঙ্গে। এতদিন পরে মিস্টার ভৌমিকের পুরো নাম আর মনে করতে পারছিনে। কিন্তু তিনি ছিলেন কলকাতা বেতারের বার্তা সম্পাদক। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে একটা সাক্ষাৎকার নিতে চাইলেন। কিন্তু যে কারণে আনন্দবাজারে নাম গোপন করেছিলাম, সেই একই কারণে সাক্ষাৎকার দিতে সঙ্কোচবোধ করলাম।’ (পৃ. ৪১)
গোলাম মুরশিদ এক জায়গায় অনুযোগ করিয়াছেন, কোন এক ‘অজ্ঞাত’ কারণে তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র অথবা জয় বাংলা পত্রিকায় কোন ভূমিকা পালন করতে পারেন নাই। (পৃ. ১২০) কেন পারেন নাই? আমি বেশ কয়েকবার পড়িয়াও সেই অজ্ঞাত কারণটা জ্ঞাত হইতে পারি নাই। গোলাম মুরশিদ ইঙ্গিত করিয়াছেন, হয়তো তিনি আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন না বলিয়াই তাঁহাকে কোন ভূমিকা গ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হয় নাই। তিনি লিখিয়াছেন, ‘আমি কোনকালে আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলাম না, সে কথা ঠিক। কিন্তু তাই বলে আমি অন্য কোন রাজনৈতিক দলেরও সমর্থক ছিলাম না। আমার নিজের ভূমিকাকে আমি রাজনীতি সচেতন বুদ্ধিজীবীর ভূমিকা বলেই বিবেচনা করি। আনন্দবাজারে আমার যে লেখাগুলো বের হয় তার মধ্যে কোন বিশেষ দলের মতামত ছিল না। একজন সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে আমি বাংলাদেশের চিত্তজাগরণের যে ধারাটি লক্ষ্য করেছিলাম, যদ্দুর সম্ভব নিরাসক্ত দৃষ্টিতে সে কথাটাই প্রকাশ করতে চেষ্টা করেছিলাম। (পৃ. ১২০)
এই লেখা লইয়াই- তিনি বলিতেছেন- তাঁহার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অনেকের ক্ষোভ ছিল, এমন কথাও তিনি শুনিয়াছিলেন। একবার- জুলাই মাসে- এই রকম একজন ভদ্রলোক প্রচ্ছন্ন হুমকির ভঙ্গিতে তাঁহাকে নাকি বলিয়াছিলেন, ‘শুনেছি আপনি নাকি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক মন্তব্য করেছেন। একবার পড়ে দেখতে হবে আপনার লেখাগুলো।’ (পৃ. ১২০)
এই অবস্থায় ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার দপ্তরে পৌঁছিয়া এই রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবীর যে অভিজ্ঞতা হইয়াছিল তাহাকে, তাঁহার ভাষায়, কোনক্রমেই ‘সুখের অথবা জয়ের বলা যায় না’। তিনি লিখিয়াছেন : ‘কিন্তু তার থেকেও [বেশি] দুঃখ পেলাম আমার একটা ধারণা ভেঙ্গে যাওয়ায়। বাংলাদেশের যে স্বাধীনতা সংগ্রামে জামায়াত আর মুসলিম লীগ ছাড়া দেশের তাবৎ লোক অংশ নিচ্ছিলেন সে সংগ্রামের নেতৃত্ব তো দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। আর দেশের বেশির ভাগ লোকও তো এই আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়েছিলেন। সুতরাং আওয়ামী লীগ তখন তো কেবল আওয়ামী লীগারদের দল নয়, এ তো আমারও দল। এটা একটা জাতীয় দল। কিন্তু ‘জয় বাংলা’র অফিসে আওয়ামী লীগের যে চেহারা দেখলাম তা সংকীর্ণ উপদলীয় চেহারা। ‘জয় বাংলা’ অফিস থেকে ফিরে এলাম পরাজিত মন নিয়ে।’ (পৃ. ১২১)
‘জয় বাংলা’ পত্রিকার সহিত বিরোধটা কোথায়- এক্ষণে তাহা পরিষ্কার হইল। কিন্তু স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সহিত বিবাদটা কোথায় সত্য সত্য বুঝা যাইতেছে না। গোলাম মুরশিদ লিখিয়াছেন, ‘চট্টগ্রামের কালুরঘাটে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, ২৫ মে তারিখে তাই একটা প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা পেল। তবে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের মতোই স্বাধীন বাংলা বেতারেরও কোন চালচুলো ছিল না। শরণার্থী বেতার কেন্দ্র যেমন হতে পারে, এ বেতার ছিল ঠিক তেমনি।’ (পৃ. ৮৩)
আরেকটু : ‘একটি বাড়ির মধ্যেই এই বেতারের দপ্তর এবং রেকর্ডিং স্টুডিও ছিল। পালিয়ে যাওয়া বেতারকর্মীরা এতে যোগ দিলেন নানা ভূমিকায়। খুব সামান্য সঙ্গতি নিয়ে তাঁরা তখন সত্যি সত্যি অসাধ্যসাধন করেছিলেন। এঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন আরও কিছু বুদ্ধিজীবী। কামাল লোহানী, আলমগীর কবির, আলী যাকের, হাসান ইমাম প্রমুখ অনেকেই। তবে স্বাধীন বাংলা বেতারের সবচেয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন এম আর [মুস্তাফা রওশন] আখতার মুকুল। বস্তুত স্বাধীন বাংলা বেতার আর এম আর আখতার মুকুল প্রায় সমার্থক শব্দ বলে বিবেচিত হত।’ (পৃ. ৮৩)
তাহা সত্ত্বেও গোলাম মুরশিদ লিখিয়াছেন, ‘আমি কোনদিন এ বেতার কেন্দ্রে যাইনি।’ বড় আশ্চর্যের কথা! অথচ ‘পার্ক সার্কাসে’ যেখানে থাকতেন তিনি, ‘সেখান থেকে ৫৭/৮ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের যে বাড়িতে এই কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছিল সেটা খুব দূরে ছিল না।’ (পৃ. ৮৩)
মনে হইতেছে, এতক্ষণে আমি সেই ‘অজ্ঞাত’ কারণের একটি প্রান্ত জ্ঞাত হইতে শুরু করিয়াছি। অন্য এক জায়গায় গোলাম মুরশিদ লিখিয়াছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে- এমন কি তাহার ঢের আগেও- বাংলাদেশের জাতীয় আন্দোলনে কলিকাতা বেতারের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ‘সেটা শুধু কেন্দ্রীয় [ভারত] সরকারের নীতির প্রতিফলন ছিল না। প্রণবেশ সেনের মতো বহু কর্মী ছিলেন বলেই সেটা সম্ভব হয়েছিল।’ (পৃ. ৪২)
গোলাম মুরশিদ লিখিয়াছেন, তিনি মাঝে মধ্যেই আকাশবাণীর কলিকাতা কেন্দ্রে যাওয়া আসা করিতেন ‘ওঁদের সঙ্গে গল্প করতে’, কিন্তু কলকাতা বেতারে কোনদিন কণ্ঠ দেন নাই তিনি। (পৃ. ৪২) দেশে আত্মীয়স্বজনরা সবাই রহিয়া গিয়াছেন কিনা!
বুদ্ধিজীবী বলিতে কে কি বুঝিতেন আমার পক্ষে আগাম বলা সম্ভব নহে। কিন্তু লেখক গোলাম মুরশিদকে বুদ্ধিজীবীর উদাহরণ বলিয়া মানিয়া লইতে আশা করি কাহারও আপত্তি হইবে না। আগেই উল্লেখ করিয়াছি, আনন্দবাজার আর দেশ পত্রিকার সহিত গোলাম মুরশিদের যোগটা ঘটাইয়া দিয়াছিলেন জাস্টিস মাসুদ নামের একজন বুদ্ধিজীবী। তাঁহার প্রসঙ্গ ধরিয়া গোলাম মুরশিদ আরও উপকার লাভ করিয়াছিলেন। যথা : ‘তার মধ্যে, যদ্দুর মনে পড়ছে, জুলাই মাসে একদিন সকালবেলায় জাস্টিস মাসুদ ডেকে পাঠালেন। সাধারণ কুশল বিনিময়ের পরে বললেন, আইসিআরসি বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের অর্থসাহায্য দিচ্ছে- প্রত্যেককে মাথাপিছু সাতশ টাকা। আমি যেন যোধপুর পার্কের একটা বাড়িতে গিয়ে এ টাকাটা নিয়ে আসি।’ (পৃ. ১১৭)
গোলাম মুরশিদের এই মন্তব্যটা উদ্ধার করিয়া আমি প্রবন্ধের সংহার করিব : ‘বুদ্ধিজীবীর ব্যাপক সংজ্ঞার অধীনে এ টাকা কারা পেয়েছিলেন, আমার জানা নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারী কলেজের অধ্যাপকরা পেয়েছিলেন, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। টাকাটা নেয়ার সময়েই অনেকেই সমালোচনা করে বলেছিলেন, এটা হলো সিআইএর টাকা। কিন্তু সমালোচনা করলেও টাকাটা নিতে তারা আপত্তি করেননি। আইসিআরসি পরে আরেক কিস্তি টাকা দিয়েছিল- চারশ টাকা। মাসুদ সাহেবের কল্যাণে আমি সে কিস্তির টাকাও পেয়েছিলাম।’ (পৃ. ১১৭)
বাংলাদেশ শেষমেষ একদিন পাকিস্তানমুক্ত হইল। কিন্তু কলিকাতা বুদ্ধিজীবী বা শরণার্থীমুক্ত হইতে আরও কয়দিন লাগিয়াছিল। গোলাম মুরশিদ লিখিতেছেন, ‘সে যাকগে, কলিকাতায় ছিলাম নিছক শরণার্থী হিসেবে। আমাদের যে কোন মুহূর্তে একটা ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়তে পারার কথা। কিন্তু কার্যকালে দেখা গেল বেরিয়ে পড়া অত সহজ নয়। নিরাপত্তার চিন্তা ছাড়াও, আর একটা কারণ যা দেশে ফেরার ব্যাপারে আমাকে দেরি করিয়ে দিচ্ছিল, তা হলো আমার গবেষণার কাজ।’ (পৃ. ১৮৮)
শেষ পর্যন্ত ফেরার তারিখ ঠিক হইল ৯ জানুয়ারি। গোলাম মুরশিদের দুঃখ, ‘দখলদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে, এ খবর ঢাকার জনগণ খুব আগে পাননি। তবু রেসকোর্সে তখন হাজার হাজার, এমন কি, হয়তো লাখখানেক লোকের ঢল নেমেছিল। কিন্তু লাখ লোকের মুখে মন্ত্র ছিল একটিই : জয় বাংলা, জয় বাংলা।’ গোলাম মুরশিদের অধিক বলিয়াছেন পাকিস্তান বাহিনীর বিখ্যাত কর্মকর্তা সিদ্দিক সালিক। ইঁহার মতে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় যত লোক রাস্তায় বাহির হইয়াছিল, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তারিখেও তত হয় নাই।
দুঃখ নাই। মুরশিদ লিখিতেছেন : ‘মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পলাতক থেকে ব্যক্তিগতভাবে আমি অনেক কিছুই হারিয়েছিলাম। সবচেয়ে [বেশি] যা হারিয়েছিলাম, তা রেসকোর্স ময়দানের এই অভূতপূর্ব দৃশ্য। অবশ্য মুক্তিযুদ্ধে পলাতকের সেটা আশা করাও অন্যায়।’ (পৃ. ১৮৫)
১৩ মার্চ ২০১৫
দোহাই গোলাম মুরশিদ, ‘যখন পলাতক : মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি’, ২য় সংস্করণ, ৩য় মুদ্রণ (ঢাকা : সাহিত্য প্রকাশ, ২০১০)।

এই বিভাগের আরও খবর
ঢাকায় সিরিজ বৈঠকে জাতিসংঘ প্রতিনিধিদল
ঢাকায় সিরিজ বৈঠকে জাতিসংঘ প্রতিনিধিদল
এখনো গ্রেপ্তার হয়নি চট্টগ্রামের প্রকাশ্য খুনিরা
এখনো গ্রেপ্তার হয়নি চট্টগ্রামের প্রকাশ্য খুনিরা
নির্বাচনের দিন গণভোটে অনড় থাকবে বিএনপি
নির্বাচনের দিন গণভোটে অনড় থাকবে বিএনপি
আবারও কমানো হচ্ছে বাজেটের আকার
আবারও কমানো হচ্ছে বাজেটের আকার
আজ রাজধানীতে জামায়াতসহ আট দলের সমাবেশ
আজ রাজধানীতে জামায়াতসহ আট দলের সমাবেশ
নির্বাচন পেছালে দায়ী বিএনপি জামায়াত
নির্বাচন পেছালে দায়ী বিএনপি জামায়াত
অবৈধ বাংলাদেশি প্রত্যাবাসন বাড়াবে ইতালি
অবৈধ বাংলাদেশি প্রত্যাবাসন বাড়াবে ইতালি
আসন ভাগাভাগির আলোচনা হয়নি
আসন ভাগাভাগির আলোচনা হয়নি
শেয়ারবাজারে সাত দিন টানা দরপতন
শেয়ারবাজারে সাত দিন টানা দরপতন
একটি চক্র ’৭১ ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে
একটি চক্র ’৭১ ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে
দক্ষতা বাড়াতে গুরুত্বারোপ সেনাপ্রধানের
দক্ষতা বাড়াতে গুরুত্বারোপ সেনাপ্রধানের
দিল্লিতে গাড়িবোমায় নিহত ৮
দিল্লিতে গাড়িবোমায় নিহত ৮
সর্বশেষ খবর
ভোলায় নবজাতক হত্যা, নানা-নানির কারাদণ্ড
ভোলায় নবজাতক হত্যা, নানা-নানির কারাদণ্ড

১ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

মহানবী (সা.) যেভাবে মানবজাতির জন্য রহমতস্বরূপ
মহানবী (সা.) যেভাবে মানবজাতির জন্য রহমতস্বরূপ

১ মিনিট আগে | ইসলামী জীবন

ষড়যন্ত্র নয়, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন: হেলাল
ষড়যন্ত্র নয়, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন: হেলাল

৯ মিনিট আগে | ভোটের হাওয়া

মঙ্গলের হারানো বায়ুমণ্ডল খুঁজবে নাসার দুই যান
মঙ্গলের হারানো বায়ুমণ্ডল খুঁজবে নাসার দুই যান

২৩ মিনিট আগে | বিজ্ঞান

এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আটক ৫
এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আটক ৫

৩১ মিনিট আগে | রাজনীতি

কর্মক্ষেত্র দখল করছে প্রযুক্তি, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করতে হবে
কর্মক্ষেত্র দখল করছে প্রযুক্তি, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করতে হবে

৩৫ মিনিট আগে | ক্যাম্পাস

ডেনমার্ক মডেলের কঠোর অভিবাসন নীতি আনছে যুক্তরাজ্য?
ডেনমার্ক মডেলের কঠোর অভিবাসন নীতি আনছে যুক্তরাজ্য?

৫৪ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বাগেরহাটে চারটি আসন বহাল, জেলাজুড়ে মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ
বাগেরহাটে চারটি আসন বহাল, জেলাজুড়ে মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

রাজকীয় উত্থান থেকে দেউলিয়া, যেভাবে ডুবল কিংফিশার
রাজকীয় উত্থান থেকে দেউলিয়া, যেভাবে ডুবল কিংফিশার

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

মায়া সভ্যতার দিনক্ষণ নির্ণয়ের রহস্য ভেদ করলেন বিজ্ঞানীরা
মায়া সভ্যতার দিনক্ষণ নির্ণয়ের রহস্য ভেদ করলেন বিজ্ঞানীরা

১ ঘণ্টা আগে | বিজ্ঞান

রাজবাড়ীতে বিএনপির জনসভা অনুষ্ঠিত
রাজবাড়ীতে বিএনপির জনসভা অনুষ্ঠিত

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

পরবর্তী যুদ্ধের প্রস্তুতি, ২৪ ঘণ্টাই ব্যস্ত ইরানি মিসাইল কারাখানা
পরবর্তী যুদ্ধের প্রস্তুতি, ২৪ ঘণ্টাই ব্যস্ত ইরানি মিসাইল কারাখানা

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দিল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ নিয়ে এখন পর্যন্ত যা জানা গেল
দিল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ নিয়ে এখন পর্যন্ত যা জানা গেল

১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

নভেম্বরে রাতের আকাশে দেখা মিলবে ‘টোরিডস’ উল্কাবৃষ্টি
নভেম্বরে রাতের আকাশে দেখা মিলবে ‘টোরিডস’ উল্কাবৃষ্টি

২ ঘণ্টা আগে | পাঁচফোড়ন

পৃথিবীর সবচেয়ে নীরব কক্ষ, নিজের রক্ত চলাচলের শব্দও শোনা যায়!
পৃথিবীর সবচেয়ে নীরব কক্ষ, নিজের রক্ত চলাচলের শব্দও শোনা যায়!

২ ঘণ্টা আগে | পাঁচফোড়ন

এখনো বিদেশি বিনিয়োগের অনুকূল নয় বাংলাদেশ : ইতালির রাষ্ট্রদূত
এখনো বিদেশি বিনিয়োগের অনুকূল নয় বাংলাদেশ : ইতালির রাষ্ট্রদূত

২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

এশিয়ার স্বচ্ছতম নদীর পানি এখন ঘোলা, কিন্তু কেন?
এশিয়ার স্বচ্ছতম নদীর পানি এখন ঘোলা, কিন্তু কেন?

২ ঘণ্টা আগে | পর্যটন

ফরিদাবাদে বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টা পরই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দিল্লি
ফরিদাবাদে বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টা পরই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দিল্লি

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দিল্লিতে বিস্ফোরণ, বিচ্ছিন্ন শরীর আর হাত পড়েছিল রাস্তায়
দিল্লিতে বিস্ফোরণ, বিচ্ছিন্ন শরীর আর হাত পড়েছিল রাস্তায়

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বাংলাদেশ সিরিজের আগে আয়ারল্যান্ড শিবিরে ধাক্কা
বাংলাদেশ সিরিজের আগে আয়ারল্যান্ড শিবিরে ধাক্কা

৩ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

বিএনপি সরকার গঠন করলে কাজের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম আসতে হবে না : আমীর খসরু
বিএনপি সরকার গঠন করলে কাজের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম আসতে হবে না : আমীর খসরু

৩ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

কুড়িগ্রামে বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীরের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার
কুড়িগ্রামে বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীরের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

বগুড়ায় পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে সেমিনার অনুষ্ঠিত
বগুড়ায় পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে সেমিনার অনুষ্ঠিত

৩ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণে নিহত ৮
দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণে নিহত ৮

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বঙ্গোপসাগরে ট্রলারসহ ২৪ জেলেকে উদ্ধার করল নৌবাহিনী
বঙ্গোপসাগরে ট্রলারসহ ২৪ জেলেকে উদ্ধার করল নৌবাহিনী

৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর দিল্লি উত্তর প্রদেশ ও মুম্বাইয়ে উচ্চ সতর্কতা জারি
ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর দিল্লি উত্তর প্রদেশ ও মুম্বাইয়ে উচ্চ সতর্কতা জারি

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

যুবককে কুপিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ
যুবককে কুপিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ

৩ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

কলাপাড়ায় প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি
কলাপাড়ায় প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি

৪ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

৪ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

দিনাজপুরে বিএনপি'র সম্ভাব্য প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল দাবিতে বিক্ষোভ
দিনাজপুরে বিএনপি'র সম্ভাব্য প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল দাবিতে বিক্ষোভ

৪ ঘণ্টা আগে | ভোটের হাওয়া

সর্বাধিক পঠিত
রাজধানীতে দুই বাসে আগুন
রাজধানীতে দুই বাসে আগুন

১৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি 'শীর্ষ সন্ত্রাসী' মামুন: পুলিশ
পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি 'শীর্ষ সন্ত্রাসী' মামুন: পুলিশ

১১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

পুরান ঢাকায় সিনেমা স্টাইলে গুলি, যা দেখা গেল সিসি ক্যামেরায়
পুরান ঢাকায় সিনেমা স্টাইলে গুলি, যা দেখা গেল সিসি ক্যামেরায়

১১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

মামদানি নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন?
মামদানি নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন?

২৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

একনেকে ৭ হাজার ১৫০ কোটি টাকার ১২ প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ৭ হাজার ১৫০ কোটি টাকার ১২ প্রকল্প অনুমোদন

১১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজ পরিবারের অবস্থান জানালেন মির্জা ফখরুল
মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজ পরিবারের অবস্থান জানালেন মির্জা ফখরুল

৯ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

নিউইয়র্কের নতুন মেয়র মামদানির নাগরিকত্ব বাতিলের চেষ্টা
নিউইয়র্কের নতুন মেয়র মামদানির নাগরিকত্ব বাতিলের চেষ্টা

৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

রাবির রেজিস্ট্রারের সঙ্গে জিএস আম্মারের বাগবিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল
রাবির রেজিস্ট্রারের সঙ্গে জিএস আম্মারের বাগবিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল

১৬ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন
ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে বাসে আগুন

৫ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি
২০২৬ সালের সরকারি ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি

১১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল রেখে হাইকোর্টের রায়
বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল রেখে হাইকোর্টের রায়

৮ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

মার্কিন নাগরিকদের ২ হাজার ডলার দেওয়ার ঘোষণা ট্রাম্পের
মার্কিন নাগরিকদের ২ হাজার ডলার দেওয়ার ঘোষণা ট্রাম্পের

১৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

তেল রপ্তানিতে ইরানের নতুন রেকর্ড
তেল রপ্তানিতে ইরানের নতুন রেকর্ড

১৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সরকারি কর্মচারীদের বেতন থেকে আয়কর কাটার নির্দেশ
সরকারি কর্মচারীদের বেতন থেকে আয়কর কাটার নির্দেশ

৫ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

গাজার সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ২০০ ফিলিস্তিনির নিরাপদ প্রত্যাবাসনের চেষ্টা তুরস্কের
গাজার সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ২০০ ফিলিস্তিনির নিরাপদ প্রত্যাবাসনের চেষ্টা তুরস্কের

১৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিদেশ সফরে যাওয়ায় আমাকে প্লট দেওয়া হয়নি : রবি চৌধুরী
খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিদেশ সফরে যাওয়ায় আমাকে প্লট দেওয়া হয়নি : রবি চৌধুরী

১২ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

পুরান ঢাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে
পুরান ঢাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে

১১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ পত্র পৌঁছে দিলেন টুকু
খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ পত্র পৌঁছে দিলেন টুকু

১৪ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

সাবেক মেয়র আইভীকে শ্যোন অ্যারেস্ট
সাবেক মেয়র আইভীকে শ্যোন অ্যারেস্ট

৬ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

প্রাথমিক শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত বদল, কর্মবিরতি চলবে
প্রাথমিক শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত বদল, কর্মবিরতি চলবে

১৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

দিল্লির লাল কেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, বহু হতাহতের আশঙ্কা
দিল্লির লাল কেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, বহু হতাহতের আশঙ্কা

৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

মাঠ পর্যায়ে এনআইডির বয়স সংশোধন কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে
মাঠ পর্যায়ে এনআইডির বয়স সংশোধন কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে

১৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার
১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার

৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

নিষিদ্ধ দল বিক্ষোভের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: প্রেস সচিব
নিষিদ্ধ দল বিক্ষোভের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: প্রেস সচিব

১৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ইসরায়েলে ভূগর্ভস্থ গোপন কারাগার, বন্দী ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলে ভূগর্ভস্থ গোপন কারাগার, বন্দী ফিলিস্তিনিরা

১৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

হ্যান্ডসেটের শুল্ক কমানো, বাজারে থাকা ফোন বৈধ করতে চায় বিটিআরসি
হ্যান্ডসেটের শুল্ক কমানো, বাজারে থাকা ফোন বৈধ করতে চায় বিটিআরসি

১৩ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারে নামল
আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারে নামল

১৫ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

জিএমপির সাবেক কমিশনার নাজমুল করিম খান বরখাস্ত
জিএমপির সাবেক কমিশনার নাজমুল করিম খান বরখাস্ত

১২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

স্কুলে ভর্তি লটারিতে, আবেদন শুরু ২১ নভেম্বর
স্কুলে ভর্তি লটারিতে, আবেদন শুরু ২১ নভেম্বর

৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণে নিহত ৮
দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণে নিহত ৮

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

প্রিন্ট সর্বাধিক
আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

বল এখন কার কোর্টে
বল এখন কার কোর্টে

প্রথম পৃষ্ঠা

এলেন, গুলি করলেন চলে গেলেন
এলেন, গুলি করলেন চলে গেলেন

প্রথম পৃষ্ঠা

অংশ কখনো সমগ্র নয়
অংশ কখনো সমগ্র নয়

সম্পাদকীয়

৬১৫ আসন কমেছে মেডিকেল কলেজে
৬১৫ আসন কমেছে মেডিকেল কলেজে

পেছনের পৃষ্ঠা

ধুঁকছে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন
ধুঁকছে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন

পেছনের পৃষ্ঠা

ওয়াজ মাহফিল আয়োজকদের সমীপে কিছু কথা
ওয়াজ মাহফিল আয়োজকদের সমীপে কিছু কথা

সম্পাদকীয়

জাল নোটের দৌরাত্ম্য
জাল নোটের দৌরাত্ম্য

সম্পাদকীয়

শহরেই শামুকখোল পানকৌড়ির বসবাস
শহরেই শামুকখোল পানকৌড়ির বসবাস

পেছনের পৃষ্ঠা

হঠাৎ চোরাগোপ্তা হামলা
হঠাৎ চোরাগোপ্তা হামলা

প্রথম পৃষ্ঠা

২০ লাখ টাকার স্বর্ণসহ আটক
২০ লাখ টাকার স্বর্ণসহ আটক

দেশগ্রাম

ছেলের হাতে বাবা খুন
ছেলের হাতে বাবা খুন

দেশগ্রাম

রাজশাহী নৌবন্দরে সম্ভাবনার হাতছানি
রাজশাহী নৌবন্দরে সম্ভাবনার হাতছানি

সম্পাদকীয়

চুরির অপবাদে দুই কিশোরকে রাতভর আটকে নির্যাতন
চুরির অপবাদে দুই কিশোরকে রাতভর আটকে নির্যাতন

দেশগ্রাম

জুলাই সনদ
জুলাই সনদ

সম্পাদকীয়

ছেলের পাত্রী দেখে ফেরার পথে বাবা মাসহ নিহত ৩
ছেলের পাত্রী দেখে ফেরার পথে বাবা মাসহ নিহত ৩

দেশগ্রাম

‘হাসিনা মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছেন’
‘হাসিনা মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছেন’

দেশগ্রাম

পিরোজপুরে বিএনপির ৩১ দফার প্রচার
পিরোজপুরে বিএনপির ৩১ দফার প্রচার

নগর জীবন

আরও ১৫ ফিলিস্তিনির লাশ ফেরত দিয়েছে ইসরায়েল
আরও ১৫ ফিলিস্তিনির লাশ ফেরত দিয়েছে ইসরায়েল

পূর্ব-পশ্চিম

দুই পা হারানো আহাদের পাশে মোশারফ
দুই পা হারানো আহাদের পাশে মোশারফ

দেশগ্রাম

সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট
সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

পেছনের পৃষ্ঠা

ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু
ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু

নগর জীবন

স্বস্তির আভাস চালের দামে
স্বস্তির আভাস চালের দামে

পেছনের পৃষ্ঠা

নিষেধাজ্ঞা উঠলেও জাহাজ ছাড়েনি
নিষেধাজ্ঞা উঠলেও জাহাজ ছাড়েনি

পেছনের পৃষ্ঠা

ডিসি গিয়ে পেলেন পাহাড়ের ‘কঙ্কাল’
ডিসি গিয়ে পেলেন পাহাড়ের ‘কঙ্কাল’

নগর জীবন

শিরকমুক্ত থাকা
শিরকমুক্ত থাকা

সম্পাদকীয়

দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ : তৃপ্তি
দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ : তৃপ্তি

দেশগ্রাম

দখল-দূষণে সংকটে খাল কৃষিতে ক্ষতি ৫০০ কোটি
দখল-দূষণে সংকটে খাল কৃষিতে ক্ষতি ৫০০ কোটি

দেশগ্রাম

দুদকের গণশুনানি
দুদকের গণশুনানি

দেশগ্রাম

প্লট ও ফ্ল্যাট জালিয়াতি
প্লট ও ফ্ল্যাট জালিয়াতি

প্রথম পৃষ্ঠা