মঙ্গলবার, ১৫ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

মাদক থাকলে ফেলে যান

মাদক থাকলে ফেলে যান

মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। বলেছেন, ‘কারও কাছে অবিক্রীত মাদক থাকলে তা র‌্যাবের ক্যাম্পের পাশে ফেলে যান, ভালো হবে। মাদক প্রতিরোধে আইনি ব্যবস্থায় যত কাঠামো আছে, তার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করবে র‌্যাব।’ এর বাস্তবায়নে তিনি সহায়তা চেয়েছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিচারিক প্রশাসন, আইনজীবী, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ সর্বস্তরের মানুষের। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব সদর দফতরে মাদক নির্মূলে র‌্যাবের বিশেষ তৎপরতা গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তুলে ধরেন বেনজীর আহমেদ। এ সময় সম্প্রতি মাদক নির্মূলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের ভিডিও পুনরায় গণমাধ্যমকর্মীদের দেখানো হয়। র‌্যাবপ্রধান বলেন, ‘র‌্যাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসন তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আমাদের সহায়তা করছেন। বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আমাদের অভিযানে সহায়তা করবেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ী-সেবীদের অন স্পট পানিশমেন্টের (শাস্তি) ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনার বিষয়টি উল্লেখ করে বেনজীর আহমেদ বলেন, ৩ মে প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে র‌্যাবকে সোচ্চার হওয়ার কথা বলার পর ৪ মে থেকেই বিশেষ অভিযান শুরু করে র‌্যাব। ১৩ মে পর্যন্ত গত ৯ দিনে র‌্যাব ১ হাজার ৪১৫ জন মাদকসেবীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে। ২০ লাখের বেশি টাকা জরিমানা করেছে। প্রায় ১৫ কোটি টাকা মূল্যের মাদক আটক করেছে। ৩৮১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে র‌্যাবের সাফল্যের বিষয়টি উল্লেখ করে র‌্যাব ডিজি বলেন, এ পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৪৯৮ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এ সময় প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে আইন প্রয়োগকারী এ সংস্থাটি।

মাদকদ্রব্য উদ্ধারে র‌্যাব নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও জরিমানা করা অব্যাহত রেখেছে।

মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের মাদক সেবন না করা ও ব্যবসা না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাইব, যারা মাদক সেবন করবেন, তারা আর মাদক নেবেন না। যারা ব্যবসা করেন, তারা মাদক বিক্রি বন্ধ করবেন। কারও কাছে মাদক থাকলে তা র‌্যাবের ক্যাম্পের পাশে ফেলে যান। ফেলে রেখে গেলে আমরা তা সহজেই ধ্বংস করতে পারব।’ মাদকের হাত থেকে নিস্তার পেতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনজীবী, বিচারক সবার কাছে সাহায্য চাই, মাদক ব্যবসায়ীরা যাতে আইনের অপব্যবহার করতে না পারে।’ একই সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকেও সহায়তা প্রত্যাশা করেন তিনি।

সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পরিবহনে মাদকের চোরাচালান হয় জানিয়ে বেনজীর বলেন, ‘এসব পরিবহন কোথায় কী কাজে ব্যবহার করা হয়, তার খেয়াল রাখতে হবে। কারণ আমরা মাঝেমধ্যেই দেখি, মাদক পরিবহনে সরকারি-বেসরকারি পরিবহন ব্যবহার হয়। ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক, রাজনৈতিক নেতা, ধর্মীয় নেতা, ইমাম, সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে মাদকের শিকড় উৎপাটনের জন্য কাজ করতে হবে।’ পত্রিকা বা টেলিভিশনকে মাদকের সংবাদ প্রচারের কথা জানিয়ে বেনজীর বলেন, ‘আপনারা মাদকের খবর ছাপলে বা প্রচার করলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। র‌্যাবের অ্যাপ, ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, হটলাইনের মাধ্যমে মাদকের খবর র‌্যাবকে দেওয়ার আহ্বান জানান বেনজীর আহমেদ।

মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকার বিষয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘বিভিন্ন সংস্থার দেওয়া তালিকা থেকে একটি সমন্বিত তালিকা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। আমরা এই তালিকাও পেয়েছি। ওই তালিকা ধরেই কাজ করছি আমরা। প্রয়োজনে নিয়মিত আপনাদের এসব খবর জানানো হবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর