বৃহস্পতিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ন্যায্য হিস্‌সা আদায় করে জোট : এরশাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে যে দলের সঙ্গেই জোট করা হোক না কেন, ন্যায্য হিস্সা আদায় করেই তা করার জন্য জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম ও এমপিরা দলীয় চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে অনুরোধ করেছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বাঁধবার আগে শতবার চিন্তাভাবনা করার ওপর জোর দিয়ে বলেন, আসনসহ ক্ষমতায় গেলে কীভাবে সরকার গঠন হবে সবকিছুর ন্যায্য হিস্সা আগেভাগেই জাপাকে বুঝে নিতে হবে। সূত্র জানায়, গতকাল রাজধানীর বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌথসভায় একাধিক এমপি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য তাদের বক্তৃতায় এমন মনোভাব প্রকাশ করেন। বৈঠকে জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, আমরা কারও কাছে সিট চাই না, মন্ত্রীসংখ্যাই বা আমরা কেন চাইব! আমরা বিরোধী দল বা সরকারের অংশীদার হওয়ার জন্য তো রাজনীতি করছি না। রাজনীতি করছি ক্ষমতায় গিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। এবার আমরা সরকার গঠন করে রাষ্ট্র পরিচালনা করব। তবে নির্বাচনী রাজনীতিতে জোট করা যায়। কিন্তু এবার আমরা কারও সঙ্গে আগ বাড়িয়ে জোটে যাওয়ার কথা কেন বলব! কেউ যদি ক্ষমতার অংশীদার হতে চায়, তাহলে তারাই আমাদের সঙ্গে জোটে আসব। সভায় এইচ এম এরশাদ বলেন, রওশনের বক্তব্যে আমি খুশি হয়েছি, উৎসাহিত হয়েছি। আমরা এবার নিজেরাই রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করব। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজন হলে আরও বৃহৎ জোট করব। তবে এটা নিশ্চিত, এবার ন্যায্য হিস্সা আদায় করেই জোটের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। সভার শুরুতেই জাপা মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশের মানুষ লাঙ্গলে ভোট দিয়ে এরশাদ সাহেবকে ক্ষমতায় বসানোর অপেক্ষায়। এজন্য সর্বশক্তি দিয়ে আমাদের নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়তে হবে। আগামী দেড় মাসের মধ্যেই ৩০০ আসনের সব কটি কেন্দ্র চালনার জন্য কমিটি গঠন ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগ করে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তিনি প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপিদের প্রতি আহ্বান জানান। সভায় কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রথম দিনে ১ লাখ মানুষ মারা যাবে। তো দ্বিতীয় দিনে কতজন মারা যাবে তা বলেননি। আমরা চাই কোনো মানুষ মারা না যাক। এজন্য জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় আসা ছাড়া উপায় নেই। সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, এরশাদ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া জোটের রাজনীতি যে বিগ জিরো তা দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতারা যেমন ভালো করে জানেন, তেমনি সাধারণ মানুষও জানে। তাই জাতীয় পার্টি আর এরশাদ ছাড়া তথাকথিত বড় কোনো দলের রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই। পীর মিসবাহ এমপি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করলে তারা আমাদের ছেড়ে দেওয়া আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দেয়। এবারও তা করতে পারে, তাই তাদের সঙ্গে জোট করার আগে বুঝেশুনে করতে হবে। বৈঠকে জাপার কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ উপস্থিত থাকলেও বক্তৃতা করেননি। সভায় আরও বক্তৃতা করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এম এ সাত্তার, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন খান, সাহিদুর রহমান টেপা, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, সুনীল শুভরায়, এস এম ফয়সল চিশতী, সোলায়মান আলম শেঠ, এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ফখরুল ইমাম, মশিউর রহমান রাঙ্গা, মুজিবুল হক চুন্নু, নুর-ই হাসনা লিলি চৌধুরী, মীর আবদুস সবুর আসুদ, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, আজম খান, মুজিবুল হক সেন্টু, আবদুর রশীদ সরকার, ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার, মাসুদা এম এ রশিদ চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জিয়াউল হক মৃধা, নুরুল ইসলাম মিলন, নুরুল ইসলাম ওমর, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লিয়াকত হোসেন খোকা, ইয়াহিয়া চৌধুরী, সেলিম উদ্দীন।

সর্বশেষ খবর