শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দেশের স্বার্থেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের স্বার্থেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু কেউ কেউ ব্যক্তিস্বার্থ থেকে মতামত দিয়ে এ আইনের বিরোধিতা করছেন। তারা বলছেন, সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ হয়ে যাবে। কিন্তু কণ্ঠ তো রোধ হয়নি। রোধ হলে তো মতামত দিতে পারতেন না। কিন্তু সমগ্র দেশ ও সমাজের স্বার্থে এটি যে গুরুত্বপূর্ণ তা তারা ভাবেননি। আমি বুঝতে পারছি না সাংবাদিকরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছেন কেন? সাংবাদিকতা হবে গঠনমূলক। বিভ্রান্তি, সহিংসতা ছড়িয়ে দেবে না।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২২তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে গতকাল তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি, সাংবাদিক, সম্পাদক ডিজিটাল আইনের বিরোধিতা করছেন। কেউ কেউ ব্যক্তিস্বার্থে, গোষ্ঠীস্বার্থে নিজ নিজ মতামত দিচ্ছেন। দেশের স্বার্থ নিয়ে ভাবছেন না। কিন্তু শুধু ব্যক্তিস্বার্থ ও গোষ্ঠীস্বার্থ দেখলে হবে না। সবাইকে চিন্তা করতে হবে সমগ্র দেশ ও সমাজের স্বার্থে। এ আইন করেছি দেশের কল্যাণে, রাষ্ট্রের কল্যাণে, শিশুর কল্যাণে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে একটা মাত্র টেলিভিশন ছিল। টিভি, রেডিও বেসরকারি খাতে দিতে কোনো সরকার সাহস করেছিল? আমরাই দিয়েছি। সারা রাত টকশো হচ্ছে কেউ তো বাধা দিচ্ছে না। তিনি বলেন, ব্যাপকহারে সংবাদপত্রের অনুমোদন দিয়েছি। এত পত্রিকার অনুমোদন পৃথিবীর কোনো দেশে আছে? শেখ হাসিনা বলেন, কী করতে পেরেছি, কী করতে পারিনি সে বিষয়ে পত্রিকা পড়ে শিখতে হবে না। পত্রিকা পড়ি শুধু তথ্য জানার জন্য।

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নের উদাহরণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ উন্নত করতে যোগাযোগব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বিশেষ অবদান রাখতে হয়। মাত্র ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে আজকে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এ খাতের বিপুল উন্নয়ন করেছি। সব শিল্পকারখানা যাতে চালু থাকতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক, নৌ ও বিমান সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হয়েছে। মানুষকে সুন্দর একটি জীবন উপহার দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আমরা সরকার পরিচালনা করি।

মাত্র ১০ দিনে ১৮টি বিল আমরা পাস করেছি। এত অল্প সময়ে এত বিল কমই পাস হয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, দশম জাতীয় সংসদে অশালীন কথা নেই, আজেবাজে মন্তব্য নেই। সুন্দর একটি পরিবেশ ছিল। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এটা সম্ভব হয়েছ সরকার ও বিরোধী দলের পারস্পরিক সহযোগিতার কারণে।

নিউইয়র্কে দুই পুরস্কার পাচ্ছেন : রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি এ সংকট সামাল দিতে দূরদর্শী ভূমিকার জন্য জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন চলার সময় নিউইয়র্কে দুটি পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে লন্ডনে একদিন যাত্রাবিরতি করে রবিবার নিউইয়র্কে পৌঁছবেন। এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রী ৫০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। ব্যবসায়ীদের ২০০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও তার সঙ্গে যাচ্ছে। এ বিষয়ে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, মানবিক কারণে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে ‘নজির স্থাপন করায়’ প্রেস সার্ভিস নিউজ এজেন্সি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এবার ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ দেবে। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান ও বুট্রোস বুট্রোস-ঘালি এবং ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মার্তি আহতিসারি এর আগে এ পুরস্কার পেয়েছেন।

এ ছাড়া রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে ‘দূরদর্শী  নেতৃত্বের কারণে’ দাতব্য সংগঠন ‘গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন’-এর পরিচালনা পর্ষদ শেখ হাসিনাকে ‘স্পেশাল রিকগনিশন ফর আউটস্ট্যান্ডিং লিডারশিপ’ অ্যাওয়ার্ড দেবে।

সর্বশেষ খবর