জুতার সামগ্রী আনা নেওয়া করতেন ভ্যানচালক ইসহাক। গুদামের মালামাল পরিবহনের কাজ সাধারণত রাতেই করতে হয়। কামরাঙ্গীর চরে বোনের পরিবারের সঙ্গে থাকতেন তিনি। গত বুধবার দুপুরে আসার সময় ভাত রান্না করে দিয়েছিলেন বোন খাদিজা বেগম। সারারাত ভাইয়ের কোনো খোঁজ মেলেনি। দুপুরে মর্গে এসে মিলেছে আগুনে পুড়ে ঝাঁজরা হয়ে যাওয়া ভাইয়ের লাশ। অচেনা মানুষের ভিড়ে সহোদরের এই করুণ পরিণতিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন খাদিজা বেগম। তার কান্না দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছে না অচেনা মানুষও। ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের সামনে প্রিয়জনের খোঁজে ভিড় করছে মানুষ। আহাজারি আর কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে বাতাস। বাবা-মা খুঁজে ফিরছেন প্রিয় সন্তানকে। বেঁচে আছে কিনা তাও জানেন না তারা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত বুধবার রাত থেকে ছেলে রোহানের খোঁজে ছোটাছুটি করছেন মোহাম্মদ হোসেন। দুপুর পার হলেও মেলেনি ছেলের খোঁজ। তার ছেলে রোহান আগুন লাগার সময় চুড়িহাট্টাতেই ছিল। গতকাল দুপুর গড়িয়ে গেলেও ছেলে বেঁচে আছে কিনা তা জানতে পারেননি বাবা। চোখ দিয়ে অঝরে ঝরছে পানি। হন্যে হয়ে ঘুরছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট থেকে মর্গ পর্যন্ত। মর্গে থাকা লাশের সারির মধ্য থেকে নিজের স্বজনদের শনাক্ত করতে ছোটাছুটি করছে লোকজন। কেউ পারছে, কেউ পারছে না। কারণ, কিছু কিছু লাশ পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। ভাইয়ের খোঁজে মর্গের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ইলিয়াস হোসেন। ভাই আর নেই জানতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ইলিয়াসের কান্না দেখে অপলক চোখে তাকিয়ে কাওসারের যমজ দুই শিশু সন্তান। অসংখ্য মানুষের ভিড় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে। কেউ একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে উচ্চৈঃস্বরে কাঁদছে, কেউ বা স্বজনদের ছবি হাতে নিথর দৃষ্টিতে মাটিতে বসে আছে। দুই চোখ দিয়ে অঝরে ঝরছে পানি। চারদিকের বাতাস যেন ভারি হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে কেউ কেউ স্বজনদের ছবি নিয়ে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছে, মোবাইলে ছবি দেখিয়ে খুঁজে ফিরছে স্বজনদের। ওই এলাকায় ওষুধের দোকানে কাজ করতেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দুই ভাই মাসুদ রানা ও রাজু। আগুনে পুড়ে মারা গেছেন দুজনই। কাজ শেষে তাদের সঙ্গে আড্ডা দিতে আসার কথা ছিল বন্ধু আবদুল্লাহর। প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে বলা শেষ কথা মনে করে চোখের কোণ ভিজে ওঠে তার। মৃতের মধ্যে অধিকাংশই নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী এলাকার। এ দুর্ঘটনার খবর শুনেই রাত থেকে ঘটনাস্থলে এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভিড় করেছে স্বজনরা। প্রিয়জন হারানোর বেদনায় আহাজারি আর কান্নায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের সামনে অবতারণা হয়েছে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। ভাইয়ের লাশ কাঁধে নিয়ে কান্নায় চোখ মুছছেন সহোদর। কাছের মানুষের এই করুণ পরিণতি শেল হয়ে বিঁধছে তাদের বুকে। বেঁচে আছেন কিনা তা-ও জানেন না অনেকেই। এজন্য ঢাকা জেলা প্রশাসনের তথ্য কেন্দ্রে নিখোঁজ স্বজনদের নাম ও ছবি জমা দিচ্ছে অনেকে। কেউ ছুটছে বার্ন ইউনিটে। সেখানে খোঁজ না মিললে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে পা বাড়াচ্ছে মর্গের দিকে। স্বজনের লাশ শনাক্ত করতে মর্গের দরজায় ভিড় করেছে স্বজনরা। কফিনবন্দী প্রিয়জনের লাশ নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছে তারা।
শিরোনাম
- দেশের বাজারে কমলো স্বর্ণের দাম
- তরুণরাই গড়বে সুন্দর বাংলাদেশ: ইসরাফিল খসরু
- রুশ গোয়েন্দা জাহাজ থেকে লেজার নিক্ষেপ, যুক্তরাজ্যের কড়া হুঁশিয়ারি
- নেত্রকোনায় ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার আটক, ৭ দিনের কারাদণ্ড
- ফটিকছড়ি প্রেস ক্লাবের নতুন কার্যালয় উদ্বোধন
- সীমান্তে কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি
- তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হলে নারীর নিরাপত্তা উন্নত হবে: শামা ওবায়েদ
- গাজায় ইসরায়েলের হামলায় কাতারের নিন্দা
- ভারতীয় বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আবারও বাড়ালো পাকিস্তান
- আফগান সীমান্তে পাকিস্তানের অভিযান, নিহত ৩০
- ঢাকার যে আসনের প্রার্থী হতে মনোনয়ন কিনলেন রিকশাচালক সুজন
- রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র মিলে তৈরি করছে শান্তিচুক্তির খসড়া, বিপাকে ইউক্রেন
- চবিতে চীনের অর্থায়নে কনফুসিয়াস সেন্টার স্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
- বেগম রোকেয়ার সুলতানা’স ড্রিমের বাংলা নাট্যরূপ মঞ্চস্থ করল আইইউবি থিয়েটার
- ‘সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ৩২ শতাংশই ৫-২৯ বছর বয়সী’
- টঙ্গীতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন
- চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ ছাত্র নিহত
- কুমিল্লায় পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
- যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র’ হিসেবে সৌদিকে শ্রেণিকরণের তাৎপর্য কী?
- ভিসা আবেদনকারীদের জন্য ব্রিটিশ হাইকমিশনের সতর্কবার্তা
আহাজারি কান্নার রোল শোকের মাতম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন
টপিক
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর