আকাশে উড়তে রানওয়েতে চলতে শুরু করেছিল থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইট (টিজি-৩২২)। তবে হঠাৎ করেই গতিপথ পরিবর্তন। ডানা মেলার আগেই বিমানটি ঠিক উল্টোপথে আবার ফিরতে শুরু করে। যাত্রীরা অবাক। কী হতে যাচ্ছে? যান্ত্রিক কোনো গোলযোগ! কিছু সময় পর উড়োজাহাজ ঠিক আগের জায়গায়, বোর্ডিং ব্রিজে। যেখান থেকে আকাশে উড়তে যাত্রা শুরু করেছিল উড়োজাহাজটি। দরজা খুলতেই র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ঢুকে পড়েন ফ্লাইটটিতে। আসনে বসা একজন যাত্রীকে নামিয়ে নিয়ে যান। ওই যাত্রীর নাম সেলিম প্রধান। তিনি হলেন অনলাইন ক্যাসিনোর কান্ট্রি হেড। গতকাল বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে সেলিম প্রধানকে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় র‌্যাব সদর দফতরে। র‌্যাব বলছে, অনলাইনভিত্তিক ক্যাসিনোর মূল গডফাদার হলো সেলিম প্রধান। থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশের অনলাইনের মাধ্যমে ক্যাসিনো ব্যবসা চালাতেন। অনলাইনে কয়েন বিক্রি করে এই ক্যাসিনো চালানো হতো। মানি লন্ডারিং করে হাতিয়ে নিয়েছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। থাইল্যান্ডের পাতায়াতেও রয়েছে তার ক্যাসিনো ব্যবসা। জানা গেছে, প্রধানগ্রুপ ডট কম নামের একটি ওয়েবসাইট রয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়ছে, সেলিম প্রধানের লাইভ ক্যাসিনো মার্কেট পি২৪ লিমিটেড নামের গেমিং কোম্পানি ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠা করা হয়। ওয়েবসাইটে দেওয়া ঠিকানায় দেখা যায়, গুলশান-২ এর ৯৯ নম্বর রোডের ১১/এ নম্বরে রয়েছে ‘পি২৪’ এর অফিস। করপোরেট অফিসের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, ডি-১ মমতাজ ভিশন, গুলশান-২ এর ৯৯ নম্বর রোডে ১১/এ। বিদেশের অফিসের ঠিকানা হচ্ছে, ১৬৫/৯৬ মো ১০, সুরাসাক, শ্রী রাখা, চনবুন, থাইল্যান্ড, ২০১১০। সূত্র বলছে, সেলিম প্রধান রূপালী ব্যাংক থেকে ১০০ কোটি টাকা লোন নিয়েছেন। তিনি ঋণ খেলাপি। তার পুরো পরিবার বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার বাবার নাম হান্নান প্রধান। ঢাকার মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে তার বাসা। র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস্্) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারওয়ার বলেন, অনলাইনে কয়েন বিক্রি করে ক্যাসিনো খেলায় জুয়াড়িদের উদ্বুদ্ধ করতেন সেলিম প্রধান। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খুলেছিলেন তার গোপন ক্যাসিনো। ক্যাসিনো থেকে অর্জিত বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি বিভিন্নভাবে বিদেশে পাচার করেছেন।

সেলিমের বাসায় র‌্যাবের অভিযান : গত রাতে সেলিম প্রধানের অফিসে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব-১। গুলশান-২ এর ৯৯ নম্বর সড়কের ১১/এ নম্বর ভবনে রাত ১০টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়। এই ভবনেই সেলিম পি ২৪ গ্যাম্বলিং নামে অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালনা করতেন। রাত সাড়ে ১২টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় অভিযান চলছিলো বলে জানা যায়।