মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
সাগর-রুনি হত্যা নিয়ে হাই কোর্ট

অনন্তকাল কি তদন্ত চলবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আদালতের তলবে হাজির হওয়া সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার শফিকুল আলমকে উদ্দেশ করে হাই কোর্ট বলেছে, দীর্ঘ ৭ বছর মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ হবে কবে? তদন্ত কি অনন্তকাল ধরে চলবে? গতকাল বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এমন প্রশ্ন তোলে। পরে আদালত এ মামলায় সন্দেহভাজন আসামি তানভীর রহমানের মামলা বাতিলের আবেদনের ওপর আদেশের জন্য আগামী ১৪  নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেন। আদালতে আসামি তানভীরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। আদালতের তলব আদেশে হাজির হয়ে মামলার তদন্তের বিষয়ে খন্দকার শফিকুল আলম হাই কোর্টকে জানান, এ মামলায় এখনো কোনো ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডিএনএ টেস্টের চারটি নমুনা পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুটি নমুনা এসেছে। এসব নমুনার সঙ্গে আসামিদের কারও সঙ্গে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। অপর দুটি নমুনা পরীক্ষার জন্য এফবিআইতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। এ সময় অদালত বলেন, আপনারা আলামত হিসেবে কী পেয়েছেন? জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আমরা কয়েকটি ছোরা, দা, বঁটি পেয়েছি। তবে রিপোর্ট না আসায় কারও সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি। আসামি তানভীরের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ আদালতকে বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জন তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু মামলার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এর একপর্যায়ে আদালত হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ হবে কবে? তদন্ত কি অনন্তকাল ধরে চলবে? তখন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন আদালতকে বলেন, আপনারা (হাই কোর্ট) এ মামলার দ্রুত প্রতিবেদন দিতে এক মাস সময় দিয়ে আদেশ দিতে পারেন। জবাবে আদালত বলে, ৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে কিছুই হয়নি। এখন সেটির আদেশ দেব। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি।

পরের দিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় রুনির ভাই বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন শেরেবাংলা নগর থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই)। পরে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু গত সাত বছরেও মামলার তদন্তে অগ্রগতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর