বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারকে সরাতে হবে। তাদের সরাতে হলে একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এক করতে হবে। এই সরকার দানবের মতো আমাদের সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে। তারা ভোট ডাকাতির মাধ্যমে নির্বাচন করেছে। অবিলম্বে এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি নতুন নির্বাচন দিতে হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে জনগণের সরকার। জনগণের পার্লামেন্ট গড়ে তুলতে হবে। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যিনি গণতন্ত্রের প্রতীক তার মুক্তি এবং অবিলম্বে নতুন নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার দাবি করছি।
গতকাল রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (এ্যাব)-এর উদ্যোগে ‘জলসা ঘর’ মিলনায়তনে ‘ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহার চুক্তি : বাংলাদেশের সম্ভাব্য বিপর্যয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন। এতে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন তথ্যচিত্রের মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, অধ্যাপক জি কে মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক নেতা এম আবদুল্লাহ, কাদের গনি চৌধুরী, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, এ্যাবের আবদুস সালাম, আশরাফ উদ্দিন বকুল, গোলাম মাওলা, এ কে এম জহিরুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন বিপ্লব বক্তব্য দেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দর-কষাকষির সক্ষমতা নেই বলেই সরকার ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান আনতে পারছে না। আমরা ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলতে তো কখনো বলি না, ভারতের সঙ্গে আমাদের তো বিরোধ নেই। সমস্যাটা হচ্ছে যে, আজকে এমন একটা সরকার, যে আমাদের সমস্যাগুলো নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলতে পারে না। সেই শক্তি তার নেই, সেই বার্গেনিং ক্যাপাবিলিটি তার নেই। কারণ সে তাদের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। এটা হচ্ছে মূল কথা, এটা বাস্তবতা। এ বিষয়গুলো যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি, এ সরকার যতদিন থাকবে ততই বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণœ হবে, একে একে নষ্ট হবে এবং বাংলাদেশ নিঃস্ব হয়ে যাবে। অমীমাংসিত সমস্যাগুলো তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফেনী নদীর পানি-এটা বাংলাদেশের নদী, এটা অভিন্ন নদী নয়। সেই ফেনী নদীর পানি নিয়ে যাচ্ছে অথচ আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলছেন, খাওয়ার পানি চাইলে পানি দেব না? ভালো কথা পানি দেবেন। তা আমাদের যে লাখ লাখ মানুষ তিস্তার অববাহিকায় আজকে পুরোপুরিভাবে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে, তাদের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, জীবন-জীবিকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে- সে বিষয়ে আপনারা একটি কথাও বলবেন না। এটা তো হয় না। মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের অর্থনীতির অবস্থা একদম ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। খুব বড়াই করে তারা (সরকার) বলছে, বাংলাদেশ রোল মডেল, সেই রোল মডেল এমন হয়েছে যে, শুধু ঋণের ওপরে তাদের টিকে থাকতে হচ্ছে। ব্যাংকগুলো ফোকলা হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলো থেকে এমনভাবে ঋণ নিয়েছে যে, কীভাবে শোধ করবে এটা আমরা জানি না। অর্থনীতিবিদরা অনেকে বলেই ফেলছেন, অর্থনীতির ভবিষ্যৎ কিন্তু খারাপ।
