সোমবার, ৬ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

ঢাকা ছাড়লেন আরও ৩২২ মার্কিন নাগরিক

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

দ্বিতীয় চার্টার্ড ফ্লাইটে গতকাল ঢাকা ছেড়েছেন আরও ৩২২ মার্কিন নাগরিক। দুটি কুকুর ও একটি বিড়াল নিয়ে কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে তারা গতকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওয়াশিংটনের ডালাস এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে যান। বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ফ্লাইটের আনুষ্ঠানিকতার জন্য দুপুর ১২টার আগে থেকেই বিমানবন্দরে আসা শুরু করেন মার্কিন নাগরিকরা। তাদের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে সন্ধ্যায় ফ্লাইটটি ছেড়ে যায়। এর আগে ৩০ মার্চ কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়েন ২৬৯ জন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, কূটনীতিক ও পর্যটক। তার আগে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য দূতাবাস থেকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়, বিমানটি দোহা হয়ে ওয়াশিংটনের ডালাস এয়ারপোর্টে যাবে। মার্কিন দূতাবাস, তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মিলে ওই চার্টার্ড বিমানের ব্যবস্থা করেছে। ফেরত যাওয়া যাত্রীদের নিজেদেরই খরচ বহন করতে হবে। কত টাকা খরচ হবে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না জানিয়ে ওই বার্তায় বলা হয়েছে, বিমানে ওঠার আগে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে একটি প্রমিজরি নোটে (অঙ্গীকারনামা) সই করতে হয়েছে। পরে এই অর্থ ফেরত দিতে হবে। এই ঋণ পরিশোধ না করলে তারা নতুন পাসপোর্ট পাবেন না। এর আগে ২ এপ্রিল ৩২৭ জন জাপানের নাগরিক, ২৫ মার্চ মালয়েশিয়ার ২২৫ জন নাগরিক, ২৬ মার্চ ১৩৯ জন ভুটানের নাগরিক বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন।

বিদেশিদের সার্বিক সহায়তায় সর্বোচ্চ সচেষ্ট সরকার : গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকার বিদেশি নাগরিক এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের স্থায়ী বাসিন্দাদের সার্বিক সহায়তার বিষয়ে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি মিশনগুলো যারা তাদের নাগরিক এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের এই দুর্যোগকালীন পরিবারের সঙ্গে থাকার জন্য নিজ নিজ দেশে নিয়ে যেতে ইচ্ছুক, তাদের যে কোনো সহযোগিতার বিষয়ে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বিশেষ ফ্লাইটসহ এখন পর্যন্ত ৬টি বিশেষ ফ্লাইটে ৯০০ এর অধিক বিদেশি নাগরিক নিজ নিজ দেশে ফিরে গেছেন। এদের অধিকাংশই নিয়মিত যাত্রী, যারা বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ মহামারীর আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন এবং নিয়মিত ফ্লাইট বন্ধের কারণে এ দেশে আটকা পড়েন। তারা তাদের দূতাবাসগুলোর সঙ্গে নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে যোগাযোগ করেন এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে দূতাবাসগুলো বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় ভাড়া করা বিমানের মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রগামী অধিকাংশ যাত্রীই বাংলাদেশি বংশো™ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দা, যারা বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজ নিজ পরিবারের সঙ্গে থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত স্থায়ী বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে সেদেশে ফিরে যাওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতার জন্য নির্ধারিত সময়সীমার আগেই ফেরত গেছেন। জাপানি এবং রাশিয়ান নাগরিক যারা বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন তাদের একটি বড় অংশ এদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করতেন, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে তাদের কোনো কাজ না থাকায় তারা নিজ পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের সবাই বাংলাদেশে ফিরে আবার কাজে যোগ দেবেন বলে আশা করা যায়। বাংলাদেশে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের অনেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় নিজ নিজ দেশে ফিরে গেছেন। একই সঙ্গে সরকার বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দা, বিশেষ করে কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যথাযথ স্বাস্থ্য সুবিধা এবং সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়েও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

সর্বশেষ খবর