বুধবার, ১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

ট্রায়ালের অনুমতি পেল ভারতের ভ্যাকসিন

অক্সফোর্ডে তৃতীয় পরীক্ষা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস প্রতিহত করতে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি পেল ভারতের প্রথম ভ্যাকসিন। কোভ্যাকসিন নামে করোনার এই ভ্যাকসিনটি মানবদেহে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনেরাল অব ইন্ডিয়া। আগামী জুলাই থেকে সারা দেশে এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। সরকারি উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে এই ভ্যাকসিন। হায়দরাবাদভিত্তিক ভারত বায়োটেক এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) যৌথ উদ্যোগে করোনার এই প্রতিষেধকটি তৈরি করা হয়েছে। ভারত বায়োটেকের চেয়ারম্যান    ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. কৃষ্ণ এল্লা বলেন, আমরা কভিড-১৯ প্রতিরোধ করতে দেশের প্রথম টিকা আবিষ্কার করতে পেরে গর্বিত। কোভ্যাকসিন নামের এই টিকা তৈরির কাজে আইসিএমআর এবং এনআইভি আমাদের সহযোগিতা করেছে। এর আগে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত এই ভ্যাকসিনের প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা সংক্রান্ত ট্রায়ালের ফলাফল সরকারকে জমা দেয় বায়োটেক। এর পরেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (ডিসিজিআই) মানবদেহে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দিয়েছে। চলতি বছরের ৯ মে আইসিএমআর ভারত বায়োটেকের এই গবেষণার কথা জানায়। দুই মাসেরও কম সময়ে মানবদেহে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হয়েছে তারা তবে টিকা তৈরির পরবর্তী পদক্ষেপগুলোতে কতটা সময় লাগতে পারে কিংবা ভ্যাকসিনটি কবে বাজারে আসতে পারে সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। প্রথম দফায় মানবদেহে প্রয়োগ করে দেখা হবে এটি কেমন আচরণ করছে বা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটছে কিনা। সেক্ষেত্রে ওষুধের উপাদানে পরিবর্তন আনা হতে পারে। এরপর দ্বিতীয় দফায় ভ্যাকসিনটি কী পরিমাণে মানবদেহে ব্যবহার করতে হবে তা নির্ধারণ করা হবে। সব মিলিয়ে মাস চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এর আগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে যে, দেশে ৩০টি গ্রুপ ভ্যাকসিন উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। অন্যদিকে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করোনার টিকার মানবদেহে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য একাধিক সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও শেষ হয়েছে। কিন্তু সব পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর কবে বাজারে আসবে, আপাতত সে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, অন্তত ১৪০টি টিকা আবিষ্কারের প্রকল্প চলছে সারা বিশ্বে।

এর মধ্যে অন্তত ১৩টি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ইতিমধ্যেই তৃতীয় ধাপে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অগ্রগতি কতটা, কোন ধাপে রয়েছে, সে বিচারে তারা মনে করছেন অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। অক্সফোর্ডের পরই মার্কিন সংস্থা ‘মডার্না আইএনসি’র তৈরি এমআরএনএ-১২৭৩ ভ্যাকিসন এগিয়ে আছে। এই টিকারও তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হচ্ছে আগামী মাসে।

সর্বশেষ খবর