বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

বিমানে যাচ্ছে ইয়াবা

পাচার হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে, জব্দ করা হচ্ছে ভয়ঙ্কর মাদক ইয়াবা ও ইয়াবা তৈরির প্রধান উপকরণ অ্যামফিটামিন

আনিস রহমান

বিমানে যাচ্ছে ইয়াবা

বিমানে যাচ্ছে ভয়ঙ্কর মাদক ইয়াবা। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে মাদক পাচারের জন্য ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বেছে নিয়েছে চোরাকারবারিরা। গত ৯ সেপ্টেম্বর এই বিমানবন্দর ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়ায় পাচারের সময় জব্দ করা হয় ইয়াবা তৈরির প্রধান উপকরণ অ্যামফিটামিন। এই ঘটনার এক মাসের মধ্যে গত ১৬ অক্টোবর মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর সময় জব্দ করা হয় ৩৮ হাজার ৮৮৭ পিস ইয়াবা। ইয়াবা তৈরির প্রধান উপকরণ অ্যামফিটামিন পাচার করা হচ্ছিল একটি আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আর ইয়াবা পাচারের চেষ্টা হচ্ছিল গার্মেন্ট পণ্যের প্যাকেটে।

আদালত সূত্র জানায়, গত শুক্রবার রাজস্ব কর্মকর্তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রপ্তানি কার্গো ভিলেজের ৩ নম্বর স্কেনিং কক্ষে অভিযান চালিয়ে ৩৮ হাজার ৮৮৭ পিস ইয়াবাসহ ফিরোজ আহাম্মেদ (২৮) ও আবু শামীমকে (৩০) আটক করেন। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ  অধিদফতরের কর্মকর্তাদের খবর দিয়ে ডেকে নিয়ে আটককৃতদের তাদের হাতে তুলে দেন। পরদিন এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক আজাদুল ইসলাম ছালাম বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আবু শামীম, ফয়েজ আহম্মেদ সোহেল এবং জ্যোতি মুন্সি নামে আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে আবু শামীমকে রবিবার আদালতে হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আবু শামীমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ইয়াবাসহ জব্দকৃত মালামালের মালিক ট্রান্সপিড গ্লোবাল লজোস্ট্রকসের কর্ণধার মুস্তাফিজুর রহমান রাসেল এবং একই প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার মাহাবুবুর রহমান। ওই মালামাল তারা মনির ওরফে শাহীন, বেলাল হোসেন, হামিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলামিন, আসাদুজ্জামান, উজ্জল ও রাজুর মাধ্যমে স্কেনিংয়ের জন্য লোডিং করেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. হেলাল উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, মামলাটির তদন্ত চলছে। এর সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসে অস্ট্রেলিয়ায় পাচারের সময় জব্দ করা হয় ইয়াবা তৈরিতে ব্যবহৃত মাদক অ্যামফিটামিনের একটি বড় চালান। পুরান ঢাকার মিটফোর্ডের রাসায়নিক (কেমিক্যাল) ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ ওরফে বান্টি মিথ্যা ঘোষণায় চালানটি ভারত সীমান্ত দিয়ে আনেন।

গত ৯ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে তল্লাশি করে ইয়াবার প্রধান উপকরণ ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম অ্যামফিটামিন জব্দ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। তদন্তের সূত্র ধরে গত ৪ অক্টোবর জুনায়েদ ইবনে সিদ্দিক নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়। মোহাম্মদপুরের বসিলায় তার বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন ভারতের তামিলনাড়ুর সতীশ কুমার তীলভারত। তার মাধ্যমেই অ্যামফিটামিন মাদক পাচারে জড়িয়ে পড়েন জুনায়েদ ও তার সহযোগীরা। বিমানবন্দরে চালান ধরা পড়লে দুবাইয়ে পালিয়ে যান সতীশ। তদন্তকারী সূত্র জানায়, জুনায়েদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৬ অক্টোবর মিটফোর্ডের কালাম ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক বান্টিকে গ্রেফতার করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর