রবিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বিচারের আশায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন মোর্শেদের স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দেশ তোলপাড় করা বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল মোর্শেদ চৌধুরীর আত্মহত্যা প্ররোচনার ঘটনায় এখনো আসামিরা কেউ গ্রেফতার হননি। উল্টো আলোচিত এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ও নেপথ্য হোতারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফলে এ মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে নিহত ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল মোর্শেদের পরিবার। তার স্ত্রী ইশরাত জাহান চৌধুরী স্বামীর মৃত্যু ও নির্যাতনের বিচার চেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। 

মামলার বাদী ইশরাত জাহান চৌধুরী অভিযোগ বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ পুলিশ তাদের কাউকেই গ্রেফতার করছে না। প্রশাসনের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে আসামিরা অধরাই থেকে যাবে। এ মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’

এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন মামলার তদন্তকারী সংস্থা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মামলার অগ্রগতি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি কোনো কর্মকর্তা। যদিও এর আগে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘মামলা হলেই আসামি ধরতে হবে এমন বিধান নেই। তদন্ত হচ্ছে। শিগগিরই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, কথিত লগ্নিকৃত টাকা ফেরত নেওয়ার অন্যায় দাবিতে ব্যাংক কর্মকর্তা মোর্শেদের ওপর চাপ প্রয়োগ, অত্যাচার এবং মানসিক নির্যাতন করে মামলার আসামিরা। আসামিদের সহযোগী হিসেবে হুইপপুত্র নাজমুল হক চৌধুরী শারুন, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চুসহ তাদের রাজনৈতিক অনুসারীরা মোর্শেদের বাড়িতে হানা দেন। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপ সইতে না পেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন এ ব্যাংক কর্মকর্তা। আত্মহত্যার পর মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেফতার করেনি। উল্টো ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল মোর্শেদ চৌধুরীর আত্মীয়স্বজনদের ফোন করে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে মামলা প্রত্যাহারের জন্য। নিহত মোর্শেদের বাসার আশপাশেও অপরিচিত লোকজন ঘোরাঘুরি করছে। এতে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। একই সঙ্গে মামলার ভবিষ্যৎ নিয়েও তারা শঙ্কিত। প্রসঙ্গত, গত ৭ এপ্রিল নগরীর পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ আবাসিক এলাকায় নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় আবদুল মোর্শেদ চৌধুরী লাশ উদ্ধার করে পুুলিশ। নিহতের পরিবারের দাবি, টাকা উদ্ধারের নামে হুইপপুত্র শারুন চৌধুরী ও তার রাজনৈতিক অনুসারীরা মোর্শেদকে মানসিক ও রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করেছে। এতে বাধ্য হয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল নিহতের স্ত্রী ইশরাত জাহান চৌধুরী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যাতে আসামি করা হয় যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল হক চৌধুরী রাসেল, জাবেদ ইকবাল, পারভেজ ইকবাল এবং নাইম উদ্দিন সাকিবকে। গতকাল পর্যন্ত মামলার কোনো আসামি গ্রেফতার হননি।

সর্বশেষ খবর