করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২১২ জন। দেশে মহামারীকালে এক দিনে এত মৃত্যু এই প্রথম দেখল বাংলাদেশ। এর আগে গত ৭ জুলাই এক দিনে সর্বোচ্চ ২০১ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। তার পরদিন ৮ জুলাই ১৯৯ জনের মৃত্যুর কথা জানালেও গতকাল ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে মৃত্যুর সংখ্যা নতুন রেকর্ড করল।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২১২ জনকে নিয়ে দেশে সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত মৃত্যু ১৬ হাজার পার হলো। সরকারি হিসাব বলছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার চারজনের মৃত্যু হলো। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন করে ১১ হাজার ৩২৪ জনের সংক্রমণের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সবমিলিয়ে দেশে ১৬ মাসের মহামারীকালে রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেল। দেশে সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেন ১০ লাখ ৫৪৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টার শনাক্ত হওয়া ১১ হাজার ৩২৪ জনকে নিয়ে দেশে টানা চতুর্থ দিনের মতো শনাক্ত হওয়া রোগী সংখ্যা ১১ হাজারের ওপরে থাকছে।
এর আগে ৮ জুলাই শনাক্ত ১১ হাজার ৬৫১ জন, যা এখন পর্যন্ত মহামারীকালে এক দিনে সর্বোচ্চ। এর আগে ৭ জুলাই ১১ হাজার ১৬২ জন, আর তার আগের ২৪ ঘণ্টায় গত ৬ জুলাই শনাক্ত হয়েছিলেন ১১ হাজার ৫২৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার ৩৮ জন। তাদের নিয়ে দেশে করোনা থেকে সুস্থ হলেন ৮ লাখ ৬২ হাজার ৩৮৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৯৫ শতাংশ আর এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ১৯ শতাংশ আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৬০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ৩৯ হাজার ২০৯টি আর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩৬ হাজার ৫৮৬টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬৯ লাখ ৩ হাজার ২৬৮টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ৫০ লাখ ৪৯ হাজার ২০৩টি আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ১৮ লাখ ৫৪ হাজার ৬৫টি।
২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২১২ জনের মধ্যে পুরুষ ১১৯ জন আর নারী ৯৩ জন। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুরুষ মারা গেলেন ১১ হাজার ২৫৪ জন আর নারী মারা গেলেন ৪ হাজার ৭৫০ জন। তাদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ৯০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪০ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৭ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে সাতজন আর ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছে দুইজন।
২১২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের আছেন ৫৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ২৬ জন, রাজশাহী বিভাগের ২৩ জন, খুলনা বিভাগের ৭৯ জন, বরিশাল বিভাগের পাঁচজন, সিলেট বিভাগের ছয়জন, রংপুর বিভাগের ১২ জন আর ময়মনসিংহ বিভাগের রয়েছেন আটজন। আর ২১২ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬০ জন, বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৬ জন আর বাড়িতে মারা গেছেন ১৬ জন।
