বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

স্রোত না কমা পর্যন্ত পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে চলবে না ফেরি

ফেরি জাহাঙ্গীরের মাস্টার বরখাস্ত তদন্ত কমিটি গঠন

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

পদ্মা সেতুর পিলারে বারবার ফেরির ধাক্কার কারণে এ রুটে পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে স্রোত না কমা পর্যন্ত বাস ও ট্রাকবাহী ফেরি চলবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ দিকে পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিয়ারে ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের ধাক্কার ঘটনায় ফেরির ভারপ্রাপ্ত ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার মো. দেলোয়ার ইসলাম ও হুইল সুকানি মো. আবুল কালাম আজাদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দুর্ঘটনার বিষয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে বিআইডব্লিউটিসির চিফ পার্সোনাল মার্সোনেল ম্যানেজার মানসুর আহমেদের স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি দফতরাদেশে দুজনকে বরখাস্ত ও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তদন্ত কমিটিতে বিআইডব্লিউটিসি পরিচালক (কারিগরি) মো. রাশেদুল ইসলামকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। অপর চার সদস্য হলেন, বিআইডব্লিউটিসির জি এম (মেরিন) ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ হাসেমুর রহমান চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (নৌসংরক্ষণ ও পরিচালনা) মো. শাহজাহান খান, বিআইডব্লিউটিসির  মাওয়া (শিমুলিয়াঘাট)-এর এজিএম মো. রুবেলুজ্জামান ও বিআইডব্লিউটিসি মাওয়া (শিমুলিয়াঘাট) এর এ জি এম মেরিন আহমেদ আলী। তদন্ত কমিটিকে সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গকে শনাক্তকরণ এবং দায়-দায়িত্ব নিরূপণসহ সুপারিশ সহকারে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান বরাবর দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফেরির মাস্টার ও সুকানির সাময়িক বরখাস্তের দফতরাদেশে বলা হয়, জলযানে কর্মরত ভারপ্রাপ্ত মাস্টার অফিসার ও হুইল সুকানি দক্ষতার সঙ্গে ফেরি পরিচালনা করলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো মর্মে প্রতীয়মান হয়। দায়িত্বপূর্ণ কর্মচারী হিসেবে ফেরিটি অত্যন্ত সাবধানতার সহিত পরিচালনা করা তাদের উচিত ছিল। পদ্মা সেতুর নিচে এ ধরনের দুর্ঘটনা কোনোমতে কাম্য নয়। তাদের এহেন কার্যকলাপ কর্মচারী চাকরির নিয়মশৃঙ্খলা পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনার পর রাত ১১টার দিকে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুর কাদের লৌহজং থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সিরাজুল কবির। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর রাতেই লৌহজং থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী। অভিযোগের বিষয়ে নৌপুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িগুলো সংশ্লিষ্টদের বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় মাদারীপুরের বাংলাবাজার থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়াঘাটে আসার সময় নদীর মাওয়া প্রান্তে ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয় ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর। এ সময় ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক ছিটকে অপর দুটি প্রাইভেটকারে পড়লে গাড়ি দুটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফেরিতে ফাটল ধরে পানি উঠতে থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কোনোমতে শিমুলিয়া ২ নম্বর ফেরিঘাটে এসে নোঙর করে অল্পতে রক্ষা পায় ফেরিতে থাকা দুই শতাধিক যাত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফেরিতে থাকা এক নারীসহ অন্তত পাঁচ যাত্রী আহত হন।

সর্বশেষ খবর