ঘটনাক্রমে দীর্ঘকাল নেপালে থাকা আমেনা খাতুন (৮০) তার পরিবারের কাছে ফিরে এসেছেন। তার সন্তানরা মাকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা। ওই সন্তানরা ২২ বছর ধরে ভাবতেন, মা আর বেঁচে নেই। জাতীয় পরিচয়পত্রেও লেখা ‘মৃত’ আমেনা বেগম।
তাঁর দেশে ফেরার বিষয়ে সক্রিয় সহযোগিতা করে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। নেপাল থেকে গতকাল ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছুলে দুই দেশের নিয়ম পালন শেষে আমেনা বেগমকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বগুড়ার ধুনট উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের মাঝবাড়ি গ্রামে আমেনার বাড়ি। সেখানে তাকে বরণ করতে স্বজনরা সবাই অপেক্ষা করছে। জানা যায়, আজগর আলী প্রামাণিকের স্ত্রী আমেনা। তিন ছেলে সন্তানের জন্ম হওয়ার পর আমেনা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। আমেনার এক ছেলে ১৯৯৮ সালে বিদেশে যাওয়ার পর থেকে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারান। এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর তার আর খোঁজ নেই। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে সুনসারি জেলার ইনারোয়া পৌরসভার ডেপুটি মেয়র গত ৩০ মে ফেসবুকে আমেনার ছবি পোস্ট করে জানান বাংলাদেশি এক বৃদ্ধাকে পাওয়া গেছে যিনি নেপালি এক নারীর কাছে আশ্রিতা। বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর মাসুদ আলম ফেসবুকের লিংক ধরে আমেনার কাছে পৌঁছে অনেক চেষ্টার পর আমেনার গ্রামের বাড়ির হদিস পেয়ে যান। তিনি এনএসআই-এর মাধ্যমে আমেনার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। পরে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে নেপাল থেকে অসহায় আমেনাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হল। আমেনার নাতি আদিলুর রহমান আদিল জানান, তার যখন ৮ বছর বয়স তখন দাদি নিখোঁজ হন। দাদিকে দেখার জন্য গ্রামের শত শত মানুষ অপেক্ষা করছেন। দাদি গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকা থেকে গ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।