দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে পারিবারিকভাবে যেন সব সময় মনোনয়ন না পায় সেদিকটায়ও লক্ষ্য রাখতে বলেছেন তিনি।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় এ নির্দেশ দেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। দলের মূল লক্ষ্য তৃণমূলের সম্মেলন করা। দলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সম্মেলনের মধ্য দিয়ে লিডারশিপ তৈরি করুন। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে ততই বিরোধী পক্ষের মিথ্যা প্রচার, অসত্য বক্তব্য ও গুজব বাড়বে। এগুলো মোকাবিলা করতে হবে। আপনারা যখন যেখানে যাবেন সবার কাছে দেশের উন্নয়নে সরকারের অবদান প্রচার করবেন। এ ছাড়া আগামী নির্বাচনে ইশতেহার প্রণয়নে ইকোনমি অ্যাক্টিভিটির কাজ শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুজন সিনিয়র সদস্য জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রধান তিন নেতাকে নির্দেশনা দেন। এর মধ্যে রয়েছে লিডারশিপ তৈরি, দল ও সরকার নিয়ে মিথ্যা প্রচারের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নেওয়া এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড দেশের মানুষের কাছে বেশি করে তুলে ধরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক নেতা বলেন, এ তিন বিষয়ে আওয়ামী লীগ পিছিয়ে রয়েছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশ সফরের জন্য দলের পক্ষ থেকে যে আটটা টিম করা হয়েছে, সেই টিমগুলোকে দ্রুত সময়ের ভিতরে মাঠে নেমে যেতে বলা হয়েছে। করোনার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রমে দল অনেক পিছিয়ে গেছে এ দাবিও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা যেহেতু কমেছে, আমি চাই আপনারা সাংগঠনিক কাজ শুরু করেন।’ বৈঠক সূত্র জানায়, দলীয় সভানেত্রী বলেন, ‘আপনারা যখন সম্মেলনসহ সাংগঠনিক কাজে বিভিন্ন এলাকায় যাবেন, তখন দলীয় নেতৃত্ব এমন লোকের হাতে তুলে দেবেন যারা দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ, দলের জন্য কাজ করে এবং দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত।’
কুমিল্লা-৭ আসনের উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আলোচনার সময় উত্তরাধিকারের মনোনয়ন প্রসঙ্গটি আলোকপাত করা হয়। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু পারিবারিক বিবেচনায় নিয়ে যেন মনোনয়ন না দেওয়া হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’ যারা দুঃসময়ে মাঠে ছিলেন তারা যেন যথাযথ মূল্যায়ন পান সেদিক বিবেচনায় রাখার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘নেতা বা এমপি-মন্ত্রীর ছেলে হলেই মনোনয়ন নয়। দলের জন্য তার অবদান কতটুকু সেটা দেখতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনুপ্রবেশকারীরা যেন মনোনয়ন না পায় সেদিকেও নজর দিতে হবে।’ আর অনুপ্রবেশকারীরা যেন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে না আসে সে জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। কুমিল্লা-৭ আসনের উপনির্বাচনে অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
