দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে সরকারপ্রধান এ নির্দেশনা দেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন। দুর্গাপূজার মধ্যে ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। এরপর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয় হিন্দুদের উপাসনালয়, ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার এসব ঘটনায় মোট ৭১টি মামলা হয়েছে এবং ৪৫০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কুমিল্লার ঘটনার বিষয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়মিত ব্রিফ করছেন। সেখানে আমাদের ইন্টেলিজেন্সও কাজ করছে। গত রাতেও আমরা বসেছিলাম। নিশ্চয়ই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজকে ব্রিফ করবেন। সেজন্য আমি আর এটা নিয়ে বলছি না। কুমিল্লার বিষয়ে আমার ধারণা যে খুব কুইকলি একটা ফাইন্ড আউট হবে।’ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে জেলা-উপজেলা প্রশাসন কাজ করে, এখানে কোনো ঘাটতি আছে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আজকে কেবিনেট মিটিংয়ে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে এটা আগেই বলে দেওয়া হয়েছে হোম মিনিস্ট্রিকে, ইনস্ট্যান্ট অ্যাকশনে যেতে হবে। যারা এর সঙ্গে জড়িত আছে তাদের অবশ্যই ধরতে হবে। পাশাপাশি জনগণকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে, রিঅ্যাকশন করা যাবে না। আমার কোরআনের যদি কেউ অবমাননা করে, কোরআন আমাকে অথরিটি দেয়নি যে ঘরবাড়ি ভাঙব, সেটা ঠিক না। এটা অপরাধ। ধর্ম নিয়ে অবমাননা করলে প্রতিবাদ করতে পারি, সরকারের কাছে দাবি করতে পারি যে ধরে শাস্তি প্রদান করতে হবে। কিন্তু ধ্বংসাত্মক কাজ করব, এটা সম্পূর্ণ আন-অ্যাকসেপ্টেবল, এটা ঠিক না। ইসলামে যেটা সবচেয়ে বড় অপরাধ ফিতনা।’ খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে এটাই বলা হয়েছে যে এটা অলরেডি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইনস্ট্যান্ট অ্যাকশন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, যারা এগুলোর সূত্রপাত করল তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেবে। পাশাপাশি ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বলা হয়েছে, ছোটখাটো টুইস্টিং কেউ করলেই যে এভাবে রিঅ্যাকশন করতে হবে, এটা করা যাবে না।’ ফেসবুক বন্ধের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘না’।
