শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনা

বিএনপির কীসের এত লাফালাফি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপিকে ২০০৮ সালের নির্বাচনের ফলাফল স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের জিজ্ঞেস করুন, এত যে লাফালাফি, কীসের জন্য। সেই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে বিএনপি কয়টা সিট পেয়েছিল। মাত্র ৩০টা। জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ২৭টা। মাত্র ৩টা সিট বেশি পাওয়ায় খালেদা জিয়া বিরোধীদলীয় নেত্রী হয়েছিল। জাতীয় পার্টি আর তিন-চারটা সিট পেলে খালেদা জিয়া বিরোধীদলীয় নেত্রী হতে পারতেন না। এটাই হলো বাস্তবতা। গতকাল দুপুরে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বেলা ১২টা ৫ মিনিটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় সংগীতের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। নাজমা আকতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল। এতে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সকাল থেকেই খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনস্থলে আসতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে উপস্থিতির সংখ্যাও। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয়-আন্তর্জাতিক কোনোভাবেই কী ওই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওঠে নাই। নির্বাচনের ফলাফলটা কী ছিল। অনেকেই ভুলে গেছেন। তিনি বলেন, ২০০৬ সালে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোট নিয়ে নির্বাচন করতে গেল খালেদা জিয়া। তখন বাংলাদেশের মানুষ সেই ভোট মানেনি। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর কারও চোখ তুলে নিয়েছে, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাড় গুঁড়া গুঁড়া করে দিয়েছে, জেলে নিয়ে গেছে। একেকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে শত শত মামলা দিয়েছে। হয়রানির চরম অবস্থা। বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে যখন ক্ষমতায় এলো, মনে হলো সেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার-গণহত্যারই পুনরাবৃত্তি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ অফিসে যেতে পারতাম না। রাজনীতি করার সুযোগ ছিল না। যুব মহিলা লীগ করার পর সব বাধা অতিক্রম করে আমার এই মেয়েরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছে। এই মেয়েদেরও কিন্তু ওরা ছাড়েনি! একদিকে পুলিশ বাহিনী, আরেকদিকে ছাত্রদল; বিএনপির গুন্ডা বাহিনী। অকথ্য নির্যাতন করেছে আমাদের মেয়েদের ওপর। তারা যে অত্যাচার করেছে, আমরা কিন্তু তার কিছুই তাদের ওপর করিনি। আমরা প্রতিশোধ নিতে যাইনি, দেশের উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিয়েছি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, স্বাধীনতার ৯ মাস পর বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সংবিধানে নারীদের অধিকার দেওয়া হয়েছিল। চাকরির ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা করে দিয়েছিলেন জাতির পিতা। আমি যুব মহিলা লীগ করে দিয়েছি, সঙ্গে মহিলা শ্রমিক লীগও করে দিয়েছি। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতা এলে নারীদের ওপরে নির্যাতন চালায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ৭১-এর সঙ্গে মিল রয়েছে তাদের। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নারীদের যেভাবে নির্যাতন করেছিল, সেভাবে নারী নির্যাতন করে বিএনপি। তারা নারীর অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশের মানুষের ভাগ্যে কালো মেঘ নেমে এসেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি জনগণকে পরোয়া করে না। ওরা ক্ষমতায় গেলেই নির্বাচন নিয়ে, মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। এটা বিএনপির চরিত্র। তার কারণ একটাই, ওরা গণমানুষের দল না। ওরা মানুষকে পরোয়া করে না। ক্ষমতা ওদের কাছে ভোগের বস্তু, লুটের সুযোগ, লুটের মাল। আর বাংলাদেশের মানুষ তাদের কাছে কিছুই না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে এই আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা এনে দিয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে। কাজেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০১৪ সালে তো ইলেকশন করলই না। বাধা দেবে বলে শুরু করল অগ্নিসন্ত্রাস। ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে তাদের অগ্নিসন্ত্রাস। কত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। খালেদা জিয়া তার গুলশানের অফিসে বসে অবরোধ ডাকল। তার আন্দোলন মানে মানুষ পুড়িয়ে মারা।

সর্বশেষ খবর