শুক্রবার দিবাগত রাতে ভারতে প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করেছে পাকিস্তান। ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’ নামের এই পাল্টা হামলায় ভারতের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় সফলভাবে আঘাত করেছে পাকিস্তান বাহিনী।
এর মধ্যেই পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রক কমিটির সভা ডেকেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দেশটির ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির (এনসিএ) বৈঠক ডেকেছেন। এনসিএ দেশটির স্থল, আকাশ ও নৌ বাহিনীর জন্য যৌথ কৌশল প্রণয়নে ভূমিকা রাখে। তবে এর আরও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের দেখভাল করা এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
এনসিএ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা সামগ্রী উৎপাদন বিষয়কমন্ত্রীও এ সংস্থার সদস্য। এই কমিটিতে জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ, তিন বাহিনীর প্রধান, স্ট্র্যাটেজিক প্লানস ডিভিশনের (এসপিডি) ডিরেক্টর সদস্য হিসাবে রয়েছেন।
এদিকে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ‘রেডিও পাকিস্তান’ ও দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন নিউজের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারতের পাঁচটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান বাহিনী। এগুলো হলো- আদমপুর, উধমপুর, পাঠানকোট, সুরতগড় এবং সিরসা বিমানঘাঁটি।
এছাড়ও আরও বেশ কিছু সামরিক স্থাপনায় হামলার দাবি করেছে পাকিস্তান।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে- দেহরাঙ্গারিতে আর্টিলারি বন্দুক অবস্থান, জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরিতে অবস্থিত ভারতের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, উরি সরবরাহ ডিপো ও কে জি টপ ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার্স।
পাকিস্তান আরও দাবি করেছে, তারা ভারতে একসঙ্গে সাইবার হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে। সাইবার হামলায় ভারতের ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ভারতের আদমপুরে অবস্থিত এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়ারও দাবি করেছে পাকিস্তান।
রেডিও পাকিস্তান জানায়, পাকিস্তান বিমান বাহিনী জেএফ-১৭ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের দিয়ে ভারতের আদমপুরে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আঘাত হানে। এতে ওই সিস্টেম ধ্বংস হয়ে যায়।
এছাড়াও বিয়াস অঞ্চলে ভারতের ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।
এদিকে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে শুক্র ও শনিবার সকালের মধ্যে উত্তরের বারামুল্লা থেকে গুজরাটের ভুজ পর্যন্ত ২৬টি স্থানে ড্রোন দেখা গেছে। এসব সন্দেহভাজন সশস্ত্র ড্রোন বেসামরিক ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার চেষ্টা করেছিল বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বারামুল্লা, শ্রীনগর, অবন্তীপোরা, নাগরোটা, জম্মু, ফিরোজপুর, পাঠানকোট, ফাজিলকা, লালগড় জাট্টা, জয়সলমীর, বারমের, ভুজ, কুয়ারবেত এবং লক্ষী নালার কাছে ওই ড্রোনগুলো দেখা গেছে।
ফিরোজপুরের একটি বেসামরিক এলাকায় একটি ড্রোন থেকে হামলা চালানো হয়েছে। ওই হামলায় স্থানীয় অনেক বাসিন্দা গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে।
ভারত জানিয়েছে, তাদের সামরিক বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং এ জাতীয় সব হামলা ড্রোন প্রতিরোধী ব্যবস্থাপনা দিয়ে মোকাবিলা করা হচ্ছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের বাড়ির ভেতরে থাকার এবং এলাকায় জারি করা সুরক্ষা নির্দেশাবলী মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, সিনহুয়া, ডন নিউজ, রেডিও পাকিস্তান
বিডি প্রতিদিন/একেএ