দাম বাড়বে

রাজস্ব আহরণ বাড়াতে প্রস্তাবিত বাজেটে মোটাদাগে করহার বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া ডলার সাশ্রয়ে এবং শুল্ক ফাঁকি রোধে অনেক পণ্যের আমদানি শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। এতে প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র, টিস্যু, কলম, মোবাইল ফোন, খেজুর, সাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে পারে। যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে-

মোবাইল ফোন : স্থানীয় উৎপাদন ও সংযোজন পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে গ্রাহক পর্যায়ে ফোনের দাম আরও বাড়তে পারে।

এলপি গ্যাস : উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে সিলিন্ডার বানানোর কাজে ব্যবহৃত স্টিল ও ওয়েল্ডিং ওয়্যার আমদানিতে শুল্ক আরোপ হয়েছে। এতে এলপিজি ও সিলিন্ডারের দাম বাড়তে পারে।

কলম : কলম উৎপাদনে বর্তমানে ভ্যাট অব্যাহতি তুলে দিয়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে শিক্ষা উপকরণ কলমের দাম বাড়তে পারে।

চশমার ফ্রেম : চশমার ফ্রেম ও সানগ্লাস আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হচ্ছে। তাই বাড়তে পারে চশমার ফ্রেমের দাম।

সাইকেল : সাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। তাই সাইকেলের দাম বাড়তে পারে।

প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র : বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র উৎপাদনে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। এতে তৈজসপত্রের দাম বাড়তে পারে।

টিস্যু পেপার : কিচেন টাওয়াল, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন টিস্যু, ফেসিয়াল টিস্যু/পকেট টিস্যু ও পেপার টাওয়াল উৎপাদনে ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে টিস্যু পেপারের দাম বাড়তে পারে।

মাইক্রোওয়েভ ওভেন : শুল্ক ফাঁকি রোধে মাইক্রোওয়েভ ওভেন আমদানির শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বিদেশি ওভেনের দাম বাড়তে পারে।

বাসমতি চাল : নন ফর্টিফাইড বাসমতি চাল আমদানিতে ভ্যাট বসানো হয়েছে। এতে এ চালের দাম বাড়তে পারে।

খেজুর : তাজা ও শুকনো খেজুর আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্কের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এতে খেজুরের দাম বাড়তে পারে।

কাজুবাদাম : স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন বাড়াতে কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে আমদানি করা কাজুবাদামের দাম বাড়তে পারে। এ ছাড়া ফল-বাদাম আমদানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

সিগারেট : সিগারেট ও তামাক পণ্যের শুল্ক বাড়ছে। তরল নিকোটিনের বিপরীতে ১৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব এসেছে। ই-সিগারেট ও ভেপোরাইজিং ডিভাইস ও এর যন্ত্রাংশ আমদানিতে ২১২ দশমিক ২০ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে সব ধরনের সিগারেটের দাম বাড়তে পারে।

গাড়ি : ২০০০ সিসির ঊর্ধ্বের গাড়ি আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ব্যাপক হারে বাড়ানো হয়েছে। তাই উচ্চ সিসির গাড়ি কেনার খরচ বাড়বে। এ ছাড়া একাধিক গাড়ির ক্ষেত্রে সিসি বা কিলোওয়াটভিত্তিক পরিবেশ সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। ফলে একাধিক গাড়ি রাখার ক্ষেত্রে খরচ বাড়বে।

সিমেন্ট : সিমেন্টের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে টনপ্রতি শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে সিমেন্টের দাম বাড়তে পারে।

ভ্রমণ ব্যয় : বিদেশগামী বিমানযাত্রীদের ওপর কর ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আকাশপথে দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও যাত্রীদের ২০০ টাকা করে কর দিতে হবে। এ ছাড়া স্থলপথ অথবা জলপথে কোনো দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বাড়ছে ভ্রমণ ব্যয়।

লিফট : লিফট ও এস্কেলেটর আমদানি শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বাড়তে পারে এসব পণ্যের দাম।

বিদেশি সফটওয়্যার : সফটওয়্যার আমদানির শুল্ক ২৫ শতাংশ ও ভ্যাট ১৫ শতাংশ আরোপের প্রস্তাব করায় এ পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

জমি : জমি নিবন্ধনে উৎস কর বৃদ্ধির প্রস্তাব করায় জমির দাম বাড়বে।

এ ছাড়া দাম বাড়তে পারে শিরিষ কাগজ, আঠা বা গ্লু, চিজ ও দই, চা-কফিমেট, গ্যাস লাইটার প্রভৃতি পণ্যের।