শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

তৃণমূল থেকে ঢাকামুখী কর্মসূচি বিএনপির

লোডশেডিং ও দুর্নীতির প্রতিবাদে হবে পদযাত্রাও

শফিউল আলম দোলন ও শফিকুল ইসলাম সোহাগ

তৃণমূল থেকে ঢাকামুখী কর্মসূচি বিএনপির

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে চলমান আন্দোলন আরও জোরদার করতে চাইছে বিএনপি। এ জন্য তৃণমূল থেকে আন্দোলনের নতুন ঢেউ তুলতে চাইছেন দলটির নেতারা। এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার আগে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি যাচাই করতেই এই কর্মসূচি হাতে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন নেতারা। তারা বলেন, বিএনপি ধারাবাহিকভাবে এক দফার আন্দোলনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। শিগগিরই কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে। চলতি মাসেই আসতে পারে নতুন কর্মসূচি।

জানা যায়, মাঠ পর্যায়ে শক্তি বাড়িয়ে চলমান আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করতে ইতোমধ্যে ৮২টি সাংগঠনিক জেলায় নিত্যনতুন কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, গত বছরের বিভাগীয় সমাবেশের মতো আবারও সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে চান তারা। এ জন্য জেলায় জেলায় কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। জেলা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে ঢাকাসহ সারা দেশে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করতে চায় বিএনপি। এসব কর্মসূচিতে বিএনপির সঙ্গে মাঠে থাকবে সমমনা দলগুলোও।  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, খুব শিগগিরই পরিবর্তন আসবে। সরকারের পতন সন্নিকটে। এখন শুধু প্রয়োজন যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখে তা নিশ্চিত করা। এ জন্য তিনি সর্বস্তরের মানুষকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, শিগগিরই রূপরেখা চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে। তবে এখন সবার দফা একটাই। তা হলো পরিবর্তন। এই সরকারের পতন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিশ্বাসী সব দলের এখন সেই দফায় সরাসরি চলে যাওয়া উচিত।

জানা যায়, ‘রাষ্ট্র মেরামত ও পুনর্গঠনের’ লক্ষ্যে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ রূপরেখার খসড়া প্রস্তুত করেছে বিএনপি। ক্ষমতায় গেলে এই দফাগুলোই হবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নির্ধারিত ‘জাতীয় সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের বিধিমালা’। গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোটসহ অন্য জোট ও দলগুলোর মতো নিয়ে এই রূপরেখা শিগগিরই চূড়ান্ত করা হবে। একই সঙ্গে আগামী সেপ্টেম্বর মাসকে সরকার পতন আন্দোলনের চূড়ান্ত সময় হিসেবে টার্গেট করেছে বিএনপি।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের মাস হিসেবে সেপ্টেম্বর মাসকে মোক্ষম সময় হিসেবে বিবেচনা করলেও আগাম নির্বাচনের ঘোষণা আসলে সে ক্ষেত্রে চূড়ান্ত আন্দোলনের সময় এগিয়ে নেবে বিএনপি। ধারাবাহিক কর্মসূচির পাশাপাশি চলতি মাসেই ফের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি। বিএনপির নীতিনির্ধারণী মহলের একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, বিএনপির এবারের চূড়ান্ত আন্দোলন হবে রাজধানীমুখী। ঢাকাকে কেন্দ্র করেই এবার ছক তৈরি করা হচ্ছে এক দফা কর্মসূচি। সারা দেশেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত ধাক্কা দেওয়া হবে রাজধানী ঢাকায়। আর ওই সময় সমমনা দলগুলো যুগপৎ থেকে সরে গিয়ে বিএনপির কর্মসূচিতে সম্মিলিতভাবে সরাসরি অংশ নিতে পারে। আসছে কোরবানির ঈদের পর বিএনপি চলমান আন্দোলনকে চাঙা করবে। ঢাকা মহানগরের রাজপথে কর্মসূচি বাড়ানো হবে। তৃণমূল থেকে ঢাকা অভিমুখী কর্মসূচি দেওয়া হবে। সমাবেশ কিংবা মানববন্ধনের বদলে দাবি আদায়ে অবস্থান কিংবা ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।

দল ও অঙ্গ-সংগঠনের সর্বস্তরের সাংগঠনিক ইউনিটগুলোকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সমগ্র দেশে প্রস্তুতি নেওয়ার পরই সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে যেতে চায় দলটি। এ জন্যই মূলত জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসকে টার্গেট করা হয়েছে। সামনে কোরবানির ঈদ ও শোকের মাস (আগস্ট) মিলিয়ে কেটে যাবে সময়। এসবের মধ্যে বিএনপি সব অঙ্গ-সংগঠনকে চাঙা করবে। তবে অক্টোবরের আগেই যদি জাতীয় নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করা হয়, সেক্ষেত্রে বিএনপির এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচিও এগিয়ে আনবে দলটি।

স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকার পতনের আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। আমরা আন্দোলনে আছি। আন্দোলন চলছে। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামছে। সরকার বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে।    

যুগপৎ আন্দোলনের খসড়া রূপরেখা : বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন এবং রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে যে যৌথ রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে, এতে বলা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা হবে। পরপর দুই মেয়াদের  বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। বাংলাদেশের ভূখন্ডে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী তৎপরতা বরদাস্ত করা হবে না। বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ বাতিল করা হবে। থাকবে সবার জন্য স্বাস্থ্যকার্ড, সব দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আবাসন। স্বাধীনতা যুদ্ধে যার যার অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান আন্দোলন সম্পর্কে বলেন, আমাদের হাতে সময় কম। অক্টোবরের দিকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হবে- এসব মাথায় রেখেই আমরা কর্মপরিকল্পনা করছি। মাসখানেক পর ঈদ। পরে আগস্ট মাস। সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা কর্মসূচি দিচ্ছি। সব পরিস্থিতি বিবেচনা করেই দাবি আদায়ে চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা আসবে।

লোডশেডিং ও দুর্নীতির প্রতিবাদে পদযাত্রা করবে বিএনপি : লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির প্রতিবাদে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ১৩ জুন মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণসহ সারা দেশের মহানগরগুলোতে এবং ১৬ জুন শুক্রবার শুধু ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে শান্তিপূর্ণভাবে ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালিত হবে। রিজভী বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে আগামী মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে নাবিস্কো সাতরাস্তা মোড়, হাতিরঝিল মোড় ও এফডিসি হয়ে সোনারগাঁও হোটেল সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ‘পদযাত্রা’ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী শুক্রবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে পল্লবী সিটি ক্লাব থেকে শুরু করে ১০ নম্বর গোলচত্বর, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া হয়ে তালতলা আগারগাঁও পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ‘পদযাত্রা’ অনুষ্ঠিত হবে। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করিম শাহিন, মো. আমিনুল হক প্রমুখ।

লোডশেডিং ও দুর্নীতির প্রতিবাদে পদযাত্রা করবে বিএনপি : লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির প্রতিবাদে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ১৩ জুন মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণসহ সারা দেশের মহানগরগুলোতে এবং ১৬ জুন শুক্রবার শুধু ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে শান্তিপূর্ণভাবে ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালিত হবে। রিজভী বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে আগামী মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে নাবিস্কো সাতরাস্তা মোড়, হাতিরঝিল মোড় ও এফডিসি হয়ে সোনারগাঁও হোটেল সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ‘পদযাত্রা’ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী শুক্রবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে পল্লবী সিটি ক্লাব থেকে শুরু করে ১০ নম্বর গোলচত্বর, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া হয়ে তালতলা আগারগাঁও পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ‘পদযাত্রা’ অনুষ্ঠিত হবে। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করিম শাহিন, মো. আমিনুল হক প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর