প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামীকাল শুক্রবার দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লি যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট কাল দুপুর ২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ দ্বিপক্ষীয় সফর উপলক্ষে ২১-২২ জুন সে দেশে অবস্থান করবেন তিনি। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর এটি হবে কোনো সরকারপ্রধানের ভারতে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। ১৫ দিনেরও কম সময়ে ভারতের রাজধানীতে এটি শেখ হাসিনার দ্বিতীয় সফর হতে চলেছে। গত ৯ জুন মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনিও ছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এবারের সফরের মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে আন্তসীমান্ত সংযোগ উদ্যোগ, তিস্তা, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতীয় বিনিয়োগ, মোংলা বন্দরের ব্যবস্থাপনা ও বিদ্যুৎ বাণিজ্য। এ ছাড়া একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি আলোচনারও প্রত্যাশা করা হচ্ছে। গত এক দশকে শক্তিশালী আঞ্চলিক অংশীদারি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে অসংখ্য আন্তসীমান্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২২ জুন অনুষ্ঠেয় হাসিনা-মোদি শীর্ষ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা অংশীদারি বাড়ানোর বিষয়টিও উঠে আসতে পারে। ভারত প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলারের ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২২ জুন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নয়াদিল্লির ফোরকোর্টস্থ রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র সালাম গ্রহণ ও গার্ড অব অনার পরিদর্শন করবেন। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হবে। ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ছবিও তোলা হবে এই সংবর্ধনা পর্বে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজঘাটে অবস্থিত মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করবেন। একই দিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক উপলক্ষে হায়দরাবাদ হাউসে গমন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা এবং দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এমওইউ ও চুক্তিবিনিময় এবং দুই নেতার প্রেস বিবৃতি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে এখানে। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজ আয়োজনের কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করবেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ছবি তোলার আয়োজনও থাকছে এ পর্বে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সফরের শুরুর দিন ২১ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবাসস্থলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। ২২ জুন বিকালে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখারের সঙ্গে তার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাক্ষাৎ করবেন। উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে গমন করবেন। এ সময় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে।
দুই দিনের এ সফর শেষে ২২ জুন স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
