গণহত্যায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটিকে নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্র-জনতা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এর পরই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে বলে জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এর জবাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিষিদ্ধ করার প্রহসন মেনে নেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
গতকাল রাত ১০টায় এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ একটি মিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এর পর মিছিল নিয়ে সেখানে জড়ো হতে থাকেন জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলন, ইনকিলাব মঞ্চ, জুলাই ঐক্যসহ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। এদিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র?্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এসময় আন্দোলনকারীরা ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’, ‘খুনি লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, ‘ব্যান করো, ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রদ্রোহী, সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা না করছেন এবং নিষিদ্ধ না করছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ এখান থেকে উঠবে না। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে, কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে ইন্টেরিমকে আর সময় দিতে রাজি নই, লাশ হয়ে ফিরব না হয় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
এদিকে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানান, নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই প্রসেস করে সব ফরমালিটি শেষ করে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলোর নিষিদ্ধ এবং রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্নকরণ নিশ্চিত করাই জুলাই গণ অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার। এর জবাবে পাল্টা ফেসবুক পোস্টে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিষিদ্ধ করার প্রহসন মেনে নেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আইসিটি আইনে দল হিসেবে বিচার করার বিধান যুক্ত করতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের নয় মাস পর গত বুধবার দিনগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ইস্যু নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
ঢাবি ও রাবিতে বিক্ষোভ : আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গতকাল রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল রাত ১০টায় জুলাই ঐক্য ব্যানারে ভিসি চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এদিকে রাত সাড়ে ১১টায় শহীদ জোহা চত্বরে বিক্ষোভ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।