অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সামাজিক ব্যবসা (সোশ্যাল বিজনেস) শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বকে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। পৃথিবীতে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার একমাত্র সঠিক পথ হলো সামাজিক ব্যবসা। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব। গতকাল সাভারের জিরাবো সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে দুই দিনের ‘সোশ্যাল বিজনেস ডে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সামাজিক ব্যবসা সর্বোত্তম পন্থা’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এবারের সোশ্যাল বিজনেস ডে উদ্যাপন করা হচ্ছে। এবারের সম্মেলনে বিশ্বের ৩৮ দেশ থেকে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সরকারের সিনিয়র কর্মকর্তা, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। চাকরিপ্রার্থী নয়, উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করার মতো শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রথম দিন থেকেই যেন জানে তারা চাকরির জন্য এখানে আসেনি। কিন্তু আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় ছাত্রদের স্বপ্ন দেখতে দেওয়া হয় না। আমি বলি, শিক্ষাব্যবস্থার প্রথম দায়িত্বই হলো স্বপ্ন দেখার সুযোগ দেওয়া।’
ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আগে স্বপ্ন দেখতে হবে। তারপর কীভাবে সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেওয়া যায়, সে পথ খুঁজে বের করতে হবে। একে অন্যকে চ্যালেঞ্জ দাও। যদি তুমি একজন চাকরিপ্রার্থী হও, তবে সেটি আমাদের জন্য লজ্জার। কারণ আমরা তোমাকে নিজেকে আবিষ্কার করার মতো সাহায্য করতে পারিনি। যদি তুমি নিজেকে আবিষ্কার করো, তাহলে কখনোই চাকরিপ্রার্থী থাকবে না। তুমি একজন উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে।’
ভারত-পাকিস্তান, ইরান-ইসরায়েল-ফিলিস্তিন এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ বছরের প্রেক্ষাপট অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে খারাপ। আগের সোশ্যাল বিজনেস ডেগুলোতে আমরা অনুভব করতাম যে পৃথিবী একটা আশাব্যঞ্জক দিকে এগোচ্ছে। আমরা ভেবেছিলাম বিশ্বে যুদ্ধের অধ্যায় শেষ হচ্ছে। আমরা আশা করেছিলাম মানব জাতি এখন শান্তিতে বাস করবে। কিন্তু হঠাৎই এ বছর নানান ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে শুরু করল। দরিদ্র মানুষ এ যুদ্ধে পিষ্ট হচ্ছে।’