গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নাপিতের বাজার এলাকায় এক খাবার হোটেলে নাস্তার বিল ও আগের বকেয়া টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে পিস্তল দিয়ে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে গোলাপ মিয়া (৩৬) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হোটেল মালিকের ছেলে অসীম মিয়া (১৭) ও সেলিনা বেগম (৪২) নামে এক নারী কর্মচারী আহত হয়েছেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের নাপিতের বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত গোলাপ মিয়া উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চক দারিয়া এলাকার মৃত তয়েজ উদ্দিনের ছেলে। গোলাপ দীর্ঘদিন ধরে মাদক ও চোরাচালানসহ নানা অপরাধে জড়িত বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নাপিতের বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে অসীম প্রতিদিনের মতো কাজে ব্যস্ত ছিলেন। বুধবার সকালে গোলাপ মিয়া ওই হোটেলে এসে নাস্তা করেন। নাস্তা শেষে বিল না দিয়ে চলে যেতে চাইলে অসীম তার কাছে বিল এবং আগের বকেয়া টাকা পরিশোধের কথা বলেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির একপর্যায়ে গোলাপ মিয়া তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে অসীমকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি চালান। গুলিবিদ্ধ হয়ে অসীম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করতে আসেন হোটেলের নারী কর্মচারী সেলিনা বেগম। তখন তাকেও লক্ষ্য করে গুলি চালান গোলাপ। গুলির শব্দ শুনে স্থানীয়রা ছুটে এলে গোলাপ পালিয়ে যায়। পরে আহত দুজনকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীর দাবি, গোলাপ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় এবং সাবেক এমপি উম্মে কুলসুম স্মৃতির ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সরকার পতনের পরও তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আসিফ উর রহমান বলেন, নারীসহ দুই গুলিবিদ্ধ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে নারীর উরুর মাংস দিয়ে গুলি ঢুকে মাংস দিয়ে বের হয়ে গেছে। অন্যদিকে ছেলেটির অন্ডথলির নিচে উরুর ভেতরের অংশের বাইরের দিকে ঘঁষা লেগে বের হয়ে গেছে। এতে তার চামড়া থেঁতলে গেছে। তিনি বলেন, এটাকে মাসেল ইঞ্জুরি বলা হয়। তারা দুজনই এখন ভালো আছেন।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার বলেন, গোলাপকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ঘটনার সময় তিনি পিস্তল, বন্দুক নাকি অন্য কোনো অস্ত্র ব্যবহার করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও পদ-পদবি সম্পর্কেও তদন্ত চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই