চুল নারীর আত্মবিশ্বাস ও ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি। রং করা, ঢেউ খেলানো বা সোজা- প্রতিটি স্টাইলেই থাকে যত্ন ও রুচির ছোঁয়া। তবে যত যত্নই নেওয়া হোক, চুল শুকানোর পদ্ধতি নির্ধারণ করে এর স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য কেমন থাকবে তার ওপর। প্রশ্নটা তাই চুল কি স্বাভাবিকভাবে শুকানো ভালো, নাকি হেয়ার ড্রায়ারই ভরসা? উত্তরটা নির্ভর করে চুলের ধরন, আবহাওয়া এবং ব্যক্তিগত অভ্যাসের ওপর।
স্বাভাবিকভাবে বা এয়ার ড্রাই করে চুল শুকানো মানে চুলকে তার নিজের মতো থাকতে দেওয়া। এতে তাপের কোনো ব্যবহার নেই, ফলে হিট ড্যামেজের ভয়ও থাকে না। চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ও গঠন অক্ষুণ্ন থাকে, যা রং করা বা কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট নেওয়া চুলের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। তবে এ পদ্ধতির সীমাবদ্ধতাও আছে। ঘন বা কোঁকড়ানো চুল শুকাতে অনেক সময় লাগে, আবার বাতাসে শুকালে অনেক সময় চুল ফ্রিজি বা অগোছালো হয়ে যায়। তবুও যারা প্রাকৃতিক ঢেউ বজায় রাখতে চান, তাদের জন্য এটি নিরাপদ বিকল্প।
অন্যদিকে ব্লো ড্রায়িং হলো সময় সাশ্রয়ের আধুনিক উপায়। মুহূর্তেই চুল শুকিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফিনিশ দেওয়া যায়- চাইলে সোজা, ঢেউ খেলানো বা ভলিউমনাস। অফিস, পার্টি বা ব্যস্ত সকালে এটি যেন এক ধরনের ত্রাণকর্তা। তবে অতিরিক্ত বা ভুল পদ্ধতিতে ব্যবহার করলে এর ক্ষতি ভয়াবহ হতে পারে। নিয়মিত তাপের প্রভাবে চুলের কিউটিকল দুর্বল হয়, রুক্ষতা বাড়ে, এমনকি স্লিপট এন্ডের সমস্যা দেখা দেয়। তাই হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার মানেই বাড়তি যত্ন-হিট প্রটেক্ট্যান্ট স্প্রে, মাঝারি তাপমাত্রা এবং শুকানোর শেষে ঠান্ডা বাতাসে ফিনিশ- এগুলোই চুলকে সুরক্ষিত রাখে।
দুটি পদ্ধতিরই সুবিধা আছে। পাতলা বা ট্রিটমেন্ট করা চুলের জন্য এয়ার ড্রাই যেমন আদর্শ, ঘন ও ভারী চুলের ক্ষেত্রে ব্লো ড্রাই অনেক সময় বেশি কার্যকর। অনেকে আবার দুটোই মিলিয়ে ব্যবহার করেন- প্রথমে আংশিকভাবে বাতাসে শুকিয়ে, পরে ড্রায়ারের সাহায্যে ফিনিশ দেন। এতে তাপের প্রভাব কমে, কাঙ্ক্ষিত স্টাইলও মেলে।
চুলের যত্নে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো ভারসাম্য। প্রতিদিনের রুটিনে অন্তত এক দিন ‘হিট-ফ্রি ডে’ রাখা, সপ্তাহে একবার হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করা এবং পর্যাপ্ত পানি ও পুষ্টি গ্রহণ- যা চুলকে রাখবে প্রাণবন্ত ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। চুল শুকানোর কৌশল যেমনই হোক, বড় বিষয় হচ্ছে সচেতনতা- কারণ ভুল সিদ্ধান্তেই সুন্দর চুলও হারিয়ে ফেলতে পারে দীপ্তি।