বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষেরই চকলেটের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে। সব মানুষের কাছে এই খাবারই যেন মুহূর্তের খুশি নিয়ে হাজির হতে পারে। রঙিন রাংতা মোড়ানো চকলেটকে যদি বাথটাবে স্থান দেওয়া হয়, তবে কেমন হয়? মন ও ত্বক- দুয়ের জন্যই এটি হয়ে ওঠে এক আদরমাখা সময়, ক্লান্তিহরা আর আনন্দ সঞ্চারণের এক বিশেষ ক্ষণ।
চকলেট বা কোকোর ইতিহাস কিন্তু মোটেই আধুনিক নয়। প্রাচীন মায়া ও অ্যাজটেক সভ্যতায় কোকো পবিত্র এবং ঔষধি উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তারা একে সৃষ্টিকর্তার উপহার হিসেবে দেখত। আধুনিক যুগে ইউরোপ, বিশেষ করে সুইজারল্যান্ড ও ফ্রান্সে প্রথম চকলেট স্পা থেরাপি জনপ্রিয় হয়, যা ধীরে ধীরে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
চকলেট বাথের যত গুণ
► ত্বকের পুনরুজ্জীবন ও তারুণ্য : চকলেটে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক পুনরুজ্জীবিত ও মসৃণ করতে সক্ষম। এটি ত্বককে গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজ করে, রুক্ষতা ও খসখসে ভাব দূর করে।
► ট্যানিং দূরীকরণ : সূর্যের তাপে তামাটে হয়ে যাওয়া ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারে চকলেট। বয়সের ছাপ কমায়, ত্বকের কোষকে ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে।
► রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি : ত্বক যখন তরল চকলেটের সংস্পর্শে আসে, তখন কোকোয়া শুষে নেয়। এই শোষিত কোকোয়া রক্তপ্রবাহ দ্রুত করে, যা দেহের কোষের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। এর ফলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আরও সাবলীলভাবে কাজ করতে পারে, এমনকি মস্তিষ্কে রক্ত পৌঁছানোর পরিমাণ বেড়ে গিয়ে চোখের দৃষ্টিও প্রখর হতে পারে।
► ডিটক্সিফিকেশন ও সুরক্ষা : চকলেটে উপস্থিত উপাদান ত্বককে ডিটক্সিফাই করার ক্ষমতা রাখে এবং উষ্ণ চকলেট বাথ শরীর থেকে মৃত কোষ দূর করে ত্বক পরিষ্কার করে। ডার্ক চকলেটে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান স্ক্যাল্প ইনফেকশন সহ নানাভাবে ত্বককে উপকার দেয় এবং ফ্লেভারোনয়েডস আলট্রা ভায়োলেট রে থেকে সুরক্ষা দিতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নের পাশাপাশি, চকলেটের ঘ্রাণ এক অন্যরকম শান্তি এনে দেয়। এর মিষ্টি গন্ধ মস্তিষ্কে সেরোটোনিন ও এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসরণ ঘটায়, যা তাৎক্ষণিকভাবে মন ভালো রাখে এবং বিষণ্নতা দূর করে। উষ্ণ পানিতে চকলেটের গন্ধ শরীর ও মনকে এমন আরাম দেয়। ডার্ক চকলেটে থাকা ফ্লেভারোনয়েডস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যযুক্ত, যা দেহ থেকে কোলেস্টেরল কমাতে, হৃৎযন্ত্র ভালো রাখতে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
প্রস্তুতি : প্রথমে স্কিন ক্লিনজিংয়ের জন্য হালকা স্ক্রাবিং করে নেওয়া যেতে পারে।
প্যাক প্রয়োগ : পরে শরীরে কোকো পাউডার, কোকো বাটার, দুধ ও তেল দিয়ে তৈরি ঘন চকলেট প্যাক লাগানো হয়। উপাদানগুলো ভালোভাবে ত্বকে মিশে যাওয়ার জন্য শরীরকে কিছুক্ষণ র্যাপ করে রাখা হয়।
গোসল : এরপর চকলেট মিশ্রিত হালকা গরম পানিতে দীর্ঘ ও শান্ত গোসল করা হয়।
লেখা : সাদিয়া সারা