বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া, গণভোট, সংস্কারসহ জুলাই সনদের অন্যান্য অনৈক্যের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত জানাতে ব্যর্থ হলে এসব ইস্যুতে সরকার নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবে। অমীমাংসিত এসব বিষয় নিয়ে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত জানাতে অন্তর্বর্তী সরকার দলগুলোর সামনে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে।
গতকাল পর্যন্ত এ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনায় বসার কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। তবে দলগুলোর মধ্যে অনৈক্যের ইস্যুগুলো সমাধানের জন্য আলোচনার টেবিলে শেষ চেষ্টা করে দেখার মনোভাবও লক্ষ্য করা গেছে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার বিষয়ে দলের ভিতর কোনো আলোচনা হয়নি। অন্য দলগুলোর মধ্যেও তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। যেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার সেগুলো এরই মধ্যে ঐকমত্য কমিশনকে আমরা জানিয়েছি। নতুন করে বলার কিছু নেই।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকার এই আলটিমেটাম জারির অনেক আগে থেকেই অন্য দলগুলোকে আমরা একসঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা আলোচনায় বসতে চাই। কোনো দল আগ্রহ জানালে আমরা বসব। সময় যেহেতু আছে আমরাও অপেক্ষায় আছি।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অনৈক্যর বিষয়গুলোতে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য দলের ভিতর কোনো আলোচনা হয়নি। তবে, রাজনৈতিক দলগুলো ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আলোচনার জন্য এগিয়ে এলে আমরা আলোচনায় বসতে রাজি আছি।
নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এত মাস ধরে চেষ্টা করে যেখানে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়নি সেখানে এখন কেমন করে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে আসবে তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। সরকার এবং ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদকে জটিল করে তুলেছে। তার ওপর তারা এখন নিজেরা হাত গুটিয়ে নিয়ে দলগুলোর ওপর দায় চাপিয়েছে। সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী তা পরিষ্কার হচ্ছে না। তবে আমরা আশাবাদী জুলাই সনদের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে আসবে এবং এর ভিত্তিতেই আগামীর বাংলাদেশ পথ চলবে। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হাতেগোনা কয়েকটি বিষয়ে অনৈক্য দেখা দিয়েছে। আমরা আশা করছি, আলোচনার টেবিলেই এগুলোর সমাধান সম্ভব। যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, এবি পার্টির মতো দলগুলোর সঙ্গে আমরা এসব বিষয়ে আলোচনা করছি। শিগগিরই অন্য দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনায় বসব। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে সংকটের সৃষ্টি করেছে মূলত ঐকমত্য কমিশন এবং সরকার। এখন তারা হাত গুটিয়ে নিয়ে দায় এড়ানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। জামায়াতের পরামর্শে সরকার এখন আলটিমেটাম জারি করে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে। আমরা এটিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। আগামী চার-পাঁচ দিন গণতন্ত্র মঞ্চসহ অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসে কোনো একটি কমন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় কিনা সেই চেষ্টা আমরা করব।