শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
শেষ প্রচ্ছদ

শীতে মাফলার, টুপি...

শীতে মাফলার, টুপি...

এই শীতে জ্যাকেটের সঙ্গে মাফলার বা টুপি না হলে ঠিক জমেই না। ► মডেল : তন্ময় ও ইমু ► পোশাক : প্লাস পয়েন্ট ► ছবি : জামিল হোসেন শুভ

কারও গায়ে লেদারের জ্যাকেট, কারও গায়ে শোভা পাচ্ছে বাহারি ব্লেজার। কেউ কেউ আবার শাল অথবা তুলা ভরা কোট জড়িয়ে ফ্যাশনে আনছেন আলাদা লুক। এর সঙ্গে মানিয়ে মাফলারটিও বেশ আকর্ষক। রয়েছে টুপিও। ম্যাচিং খোঁজার ঝামেলা আর থাকে না। দুটিই নানা কায়দায় জড়ানো যায়। বিস্তারিত জানাচ্ছেন-  এ কে রাসেল

 

বাইরে কনকনে হাওয়া। সন্ধ্যা গড়াতে না গড়াতেই কান-মাথা ঢাকতে হয় টুপি-মাফলারে। শীত হঠাৎ এমন প্রচন্ড ভাবে পড়বে যা বেশ কিছু দিন আগেও পড়েনি। হারিয়ে যাওয়া শীতের অনুভূতি কিছুটা হলেও ফিরে এসেছে গেল কয়েক সপ্তাহ আগে। এই মৌসুমে ঠান্ডা থেকে রেহাই পেতে কেউ গায়ে জড়াচ্ছেন জ্যাকেট, কেউবা পড়ছেন বাহারি ব্লেজার। শাল আর তুলা ভরা কোট বা জ্যাকেটে ওম নিচ্ছেন অনেক ফ্যাশনপ্রেমী। এর সঙ্গে মাফলারটিও বেশ আকর্ষণীয় দেখায়। রয়েছে টুপিও। ভিন্নতা দেখাতে অনেকে মিক্স ম্যাচিং খোঁজেন। আসলে শীত নিবারণের এসব মাফলার ও টুপি দুটিই গায়ে জড়ানো যায় নানা কায়দায়। ফলে ফ্যাশনেবল দেখার পাশাপাশি শীত থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

টুপির প্রচলন শুরু হয় প্রায় ১৫০ বছর আগে, ক্রিমিয়ার যুদ্ধে। এই টুপিকে অনেকে ব্যালাক্লাভা (মাঙ্কি টুপি) বলে থাকেন।  ১৮৬৫-৬৬ সালের সেই যুদ্ধে রুশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে একযোগে লড়েছিল ফ্রান্স, ব্রিটেন, তৎকালীন অটোমান শক্তি আর সার্ডিনিয়া। তখন ইউক্রেনীয় উপদ্বীপে প্রবল শীতের হাত থেকে বাঁচাতে ব্রিটিশ সৈন্যদের জন্য ব্যালাক্লাভা বুনে পাঠানো হয়েছিল। সেই থেকে ফ্যাশনের পালাবদলে টুপি শীত নিবারণে ব্যবহার করা হয়। এই মাঙ্কি টুপিকে বাদ দিলে, শীতের বাকি চেনা-জানা টুপিরা হলো, ছেলেদের স্কাল ক্যাপ, আর মেয়েদের বিনি। অর্থাৎ থুপি ঝোলানো উলের টুপি। তা লাল টুকটুকে হলেই বড়দিনে পরা যাবে। এই টুপি কানকে সযত্নে ঢেকে রাখে। শীতের প্রকোপ বাড়লেও, চট করে ঠান্ডা লাগে না। নিটেড মেটেরিয়ালের টুপি কিনুন। পশম বা অন্য কোনো গরম তন্তু দিয়ে বোনা। যেমন বেরেট। কান ঢেকে পরার পরও ডিজাইনগুণে এক দিকে অল্প নুয়ে থাকবে। মেয়েরা আরও এক ধরনের থার্মাল ক্যাপ বা টুপি কিনতে পারেন। এর মাথার অংশটা বেশ ঢাউস হওয়ায়, প্রয়োজন মতো, কান ছাড়িয়েও অনেকটা নামিয়ে আনা যায়। সামনের অল্প একটু কানা থাকে, তাকে সামান্য ঘুরিয়ে পরলেও একদম খারাপ দেখাবে না। এ ছাড়াও পুরনো ফ্যাশনের টুপির ভিতরে মোটা উলের টুপি, একসঙ্গে মুখ ও মাথা ঢাকার টুপিও আছে বাজারে। তবে মুখের গড়ন ও ত্বকের রংয়ের সঙ্গে মিলিয়ে টুপি নির্বাচন করতে পারলে ভালো।

 

আর বাজারে রয়েছে নিত্যনতুন মাফলারের সমাহার। যে কোনো পোশাকের সঙ্গে খুব সহজেই মানিয়ে যায় এই মাফলার। আমাদের দেশে মাফলারের প্রচলন শুরু হয়েছিল বহু বছর আগে থেকেই। তখনকার সময় মাফলার কেবল পুরুষদের পরিধানের অনুষঙ্গ ছিল। এখন নারীদের মধ্যেও অনেকেই ব্যবহার করছে মাফলার। শুধু উষ্ণতাই দেয় না, মাফলারের ব্যবহার ফ্যাশনেও আনে ভিন্নতা। বৈচিত্র্যময় ডিজাইন আর বাহারি রঙের মাফলারগুলো শোভা পাচ্ছে ছেলে-মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই। অনেকের ধারণা, শীতের পোশাকে ঢেকে যায় আমাদের সুন্দর পোশাকগুলো। তাই শীতকালটা ফ্যাশন করার উপযুক্ত সময় নয়। এ দিকটা মাথায় রেখে তাই রঙিন ও বর্ণিল ছোঁয়া আনা হয় শীতের পোশাকে। সোয়েটার, জ্যাকেট, শালের চেয়ে বেশি রঙিন ও ফ্যাশনের ছোঁয়া আনতে তাই মাফলারের জুড়ি নেই। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বেছে নিন আপনার পছন্দের শীত অনুষঙ্গটি। কর্মস্থল ও পরিবেশ বিবেচনা করে নির্বাচন করুন মাফলার। কর্মস্থলের জন্য বেছে নিন স্ট্রাইপ দেওয়া বা এক রঙের সাধারণ মাফলার। অন্য সময়ে ফ্যাশনের বিভিন্ন মাফলার বেছে নিতে পারেন। রাতের কোনো অনুষ্ঠানে জরির কারুকাজময় মাফলার সাজটাকে জমকালো করবে।

 

আমাদের দেশে সাধারণত দুই ধরনের মাফলারের ব্যবহার দেখা যায় সুতি ও উলের তৈরি। এ দুটি কাপড়ের ওপরই রং ও বৈচিত্র্যময় নকশা ছাপা যোগ করা হয়েছে এবার। সুতির মাফলারগুলো টুল, লতাপাতা, জ্যামিতিক নকশা প্রিন্টে বেশ জমকালো করে তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি চেক ও স্ট্রাইপ তো রয়েছেই। 

 

উলের মাফলারগুলোয়ও করা হয় উলের কারুকাজ। মূল জমিনের ওপর উলের সুতার নকশা ও বাড়তি অংশের ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু কিছু মাফলার জমকালো করা হয়েছে জরি সুতার টানে। তবে সুতি ও উল দুই ধরনের মাফলারের ক্ষেত্রেই এর নিচের উভয় পাশে বেশ লম্বা ঝালর নজরে পড়ছে এবার। উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের সঙ্গে করা হয়েছে কন্ট্রাস্টও। সাদা-বেগুনি, লাল-কালো, কমলা-সবুজ, টিয়া-সাদা, বেগুনি-গোলাপি, সাদা-কালোর মিশেলের মাফলারগুলো বেশ পছন্দ হবে আপনার। বৈচিত্র্যময় টুপি ও মাফলারগুলো পরতে পারেন নানা ঢঙে। আপনিও আপনার শীতের উষ্ণ সাজের সঙ্গে রঙ ও বৈচিত্র্যের ছোঁয়া আনতে পারেন নানা ঢঙের মাফলারের মাধ্যমে। সবসময় একভাবে পরতে হবে তা নয়। বদলে দিতে পারেন ফ্যাশনটা একটু অন্য রকমভাবে। মাফলার এবং টুপির সঙ্গে সঙ্গে পরেন হাত মোজা। হাত অথবা পায়ের জন্য মোজা বেছে নেওয়ার সময় নজর রাখুন ব্যবহারের সহজ এবং আরামদায়কতার দিকে। এ সময়ের ঘোরাঘুরিতে পায়ের জন্য বেছে নিন একটু ভারী জুতা। হতে পারে কেডস, স্নিকার অথবা বুট।

 

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, নিউমার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নুরজাহান মার্কেট, বদরুদ্দোজা মার্কেট, বঙ্গবাজার, গুলিস্তান, গুলশান ডিসিসি মার্কেট, মহাখালী, ফার্মগেট, মিরপুরসহ অনেক স্থানে মিলবে এমন সব শীত তাড়ানোর এসব রংবেরঙের বাহারি মাফলার ও টুপি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর