‘জার্মান একনায়ক এডলফ হিটলারের হাতে ইহুদিদের পরিণতি মনে আছে নিশ্চয়ই! ট্রাম্পের আমলে মুসলিমদেরও সেই হাল হবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার তিনটি মসজিদে পৌঁছল এমনই হুমকির চিঠি। তাতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের ‘শয়তানের উপাসক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। খবর আজকালের।
মার্কিন–ইসলামিক আইন সংস্থা ‘কেয়ার’ (দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান–ইসলামিক রিলেশনস)–এর পক্ষ থেকে চিঠির একাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা আছে, ‘তোমরা শয়তানের উপাসক। এখন কিন্তু সাবধান হওয়ার দিন এসেছে। মসনদে বসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকা থেকে তোমাদের ধুয়ে–মুছে সাফ করে দিয়ে পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনবেন। হিটলারের হাতে ইহুদিদের দুর্দশার কথা মনে আছে নিশ্চয়ই! তোমাদেরও একই হাল হবে। এখনও সময় আছে। বুদ্ধি খাটাও। তল্পিতল্পা গুটিয়ে কেটে পড়ো। মার্কিন দেশপ্রেমীদের জন্য এটা আদর্শ সময়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দীর্ঘজীবী হোন।’
সান হোসে–র মসজিদের ইমামই প্রথম চিঠিটি পান। গোটা ঘটনায় সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দুষেছেন লস অ্যাঞ্জেলসে ‘কেয়ার’–এর কার্য নির্বাহী পরিচালক হুসাম আয়লুশ। তিনি জানিয়েছেন, ‘চিঠিটি পেয়ে আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই মানুষের মনে ধর্ম বিদ্বেষের বীজ বুনে দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ঘটনা তারই ফলশ্রুতি। কে বা কারা চিঠিটি পাঠিয়েছে সেই নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। মুসলিমদের নিরাপত্তার কারণে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে গলা চড়ানো উচিত দেশের রাজনীতিকদের।’
ইতিমধ্যে পুলিশ তদন্তে নেমেছে বলে জানিয়েছেন সান হোসে পুলিস বিভাগের মুখপাত্র এনরিকে গার্সিয়া। গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই জানিয়েছে, ৯/১১ হামলার পরই আমেরিকায় মুসলিমভীতির সূত্রপাত। এ বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচার পর্বে যা অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে। গত বছর দেশে ২৫৭টি মুসলিমদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৪ সালের তুলনায় যা ৬৭ শতাংশ বেশি। সাম্প্রদায়িক ঘৃণার হার বেড়েছে প্রায় ৬.৭ শতাংশ। কৃষ্ণাঙ্গ এবং ইহুদীদের বিরোধী মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ শতাংশ।
বিডি-প্রতিদিন/২৮ নভেম্বর, ২০১৬/মাহবুব